জিম্বাবুয়ে-পাকিস্তান সিরিজ
পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই ওয়ানডেতে জিতল জিম্বাবুয়ে, তবে চার বছর আগের জয়টি এসেছিল সুপার ওভারে।
Published : 24 Nov 2024, 08:49 PM
চাপের মুখে ৯ নম্বরে নেমে কার্যকর ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে লড়ার মতো পুঁজি এনে দিলেন রিচার্ড এনগারাভা। বল হাতে শুরুতেই পাকিস্তান শিবিরে ছোবল দিলেন ব্লেসিং মুজারাবানি। মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দিলেন শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজা। দারুণ জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডেতে ডাকওয়ার্থ লুইস-স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে ৮০ রানে জিতেছে ক্রেইগ আরভিনের দল।
বুলাওয়ায়োতে রোববার ৪০.২ ওভারে জিম্বাবুয়ে অল আউট হয় ২০৫ রানে। জবাবে পাকিস্তান ২১ ওভারে ৬ উইকেটে ৬০ রান করার পর বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। ডিএলএস পদ্ধতিতে তখন ৮০ রানে এগিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে।
২০১৫ সালের অক্টোবরের পর ওয়ানডেতে মূল ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের এটি প্রথম জয় এবং সব মিলিয়ে ৬৩ ম্যাচে ষষ্ঠ জয় (সুপার ওভারে জয়সহ)।
এই সংস্করণে দুই দলের সবশেষ দেখায় ২০২০ সালের নভেম্বরে রাওয়ালপিন্ডিতে মূল ম্যাচ ‘টাই’ হওয়ার পর সুপার ওভারে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে।
দেশের মাঠে ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে ভালো শুরুর পর একটা পর্যায়ে ১২৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৫২ বলে ৪৮ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে দলকে দুইশ ছাড়ানো পুঁজি এনে দেন পেসার এনগারাভা।
ম্যাচের সেরা অবশ্য তিনি নন। ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে ৬ চারে ৩৯ রান করার পর হাত ঘুরিয়ে ৭ রানে ২ উইকেট নিয়ে পুরস্কারটি জেতেন স্পিনিং অলরাউন্ডার রাজা।
মুজারাবানি ৯ রানে ও উইলিয়ামস ১২ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে জয়লর্ড গাম্বি ও টাডিওয়ানাশে মারুমানির ব্যাটে আশা জাগানিয়া শুরু পায় জিম্বাবুয়ে। গাম্বির (১৭ বলে ১৫) রান আউটে ভাঙে ৩৫ বলে ৪০ রানের শুরুর জুটি।
ওই জুটি ভাঙার পর পথ হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। ডিওন মেয়ার্স ও অধিনায়ক আরভিন যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ৪১ বলে ২৯ রান করে ফেরেন মারুমানি। ২৩ রানে থামেন উইলিয়ামস।
তখন ৯৯ রানে নেই ৫ উইকেট। পরপর ওভারে ব্রায়ান বেনেট ও ব্রেন্ডন মাভুটার বিদায়ে স্কোর হয়ে যায় ৭ উইকেটে ১২৫।
সেখান থেকে অষ্টম উইকেটে ইনিংস সেরা ৬২ রানের জুটিতে দলকে উদ্ধার করেন রাজা ও এনগারাভা। রাজার বিদায়ে ভাঙে জুটি। দশম উইকেটে ১৮ রানের জুটি গড়ে এনগারাভা আউট হন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকে ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সফলতম বোলার বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার ফয়সাল আকরাম। ৪২ রানে ৩ উইকেট নেন সালমান আলি আগা। ওয়ানডে অভিষেকে একটি উইকেট পান আমের জামাল।
রান তাড়ায় প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শাফিক ও সাইম আইয়ুবকে হারায় পাকিস্তান। পরপর দুই ওভারে দুজনকেই ফেরান পেসার মুজারাবানি।
তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন কামরান গুলাম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। ২৮ বলে ১৭ রান করা গুলামকে থামিয়ে দেন উইলিয়ামস। রাজা নিজের একই ওভারে ফিরিয়ে দেন সালমান ও অভিষিক্ত হাসিবউল্লাহ খানকে। উইলিয়ামস দ্বিতীয় শিকার ধরেন ইরফান খানকে বোল্ড করে।
১৯তম ওভারে ৫৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। দুই ওভার পরই বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। লম্বা সময় অপেক্ষার পরও আর খেলা শুরু করা যায়নি। অধিনায়ক রিজওয়ান অপরাজিত রয়ে যান ৪৩ বলে ১৯ রান করে।
একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ হবে মঙ্গলবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪০.২ ওভারে ২০৫ (গাম্বি ১৫, মারুমানি ২৯, মায়ার্স ৮, আরভিন ৬, উইলিয়ামস ২৩, রাজা ৩৯, বেনেট ২০, মাভুটা ১, এনগারাভা ৪৮, মুজারাবানি ০, গোয়ান্ডু ৩*; জামাল ৭-১-৪২-১, হাসনাইন ৭.২-০-৪৩-১, সাইম ২-০-১২-০, সালমান ৯-০-৪২-৩, রউফ ৭-১-৩৬-১, ফয়সাল ৮-০-২৪-৩)
পাকিস্তান: ২১ ওভারে ৬০/৬ (সাইম ১১, শাফিক ১, কামরান ১৭, রিজওয়ান ১৯*, সালমান ৪, হাসিবউল্লাহ ০, ইরফান ৭, জামাল ০*; মুজারাবানি ৫-১-৯-২, এনগারাভা ৫-০-১৮-০, উইলিয়ামস ৬-০-১২-২, গোয়ান্ডু ২-০-১৪-০, রাজা ৩-০-৭-২)
ফল: ডিএলএস পদ্ধতিতে জিম্বাবুয়ে ৮০ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে জিম্বাবুয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ: সিকান্দার রাজা