আইসিসি
দুবাইয়ে আগামী রোববার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দিন বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে নতুন তিন জনকে স্বাগত জানানোর ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি।
Published : 16 Oct 2024, 05:00 PM
সাফল্যমণ্ডিত ক্যারিয়ারে ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় আইসিসির বড় স্বীকৃতি পেলেন অ্যালিস্টার কুক, নিতু ডেভিড ও এবি ডি ভিলিয়ার্স। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থার সম্মানসূচক ‘হল অব ফেম’ এ অন্তর্ভূক্ত করা হলো সাবেক তিন ক্রিকেটারকে।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বুধবার এই খবর জানিয়েছে আইসিসি। ২০২৪ সালের সংযুক্তি হিসেবে এই তিন জনের নাম ঘোষণা করেছে তারা। হল অব ফেমে কুক, নিতু ও ডি ভিলিয়ার্স যথাক্রমে ১১৩, ১১৪ ও ১১৫ সদস্য।
শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ২০০৯ সালে হল অব ফেমের সূচনা করে আইসিসি। গত বছর এই তালিকায় ভারতের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে জায়গা পান ডায়ানা এডুলজি। তার পথ ধরে এবার পেলেন সাবেক বাঁহাতি স্পিনার নিতু।
দুবাইয়ে আগামী রোববার নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দিন বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে নতুন তিন জনকে স্বাগত জানানোর ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি।
১৯৯৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময়ে ভারতের হয়ে ১০টি টেস্ট ও ৯৭টি ওয়ানডে খেলেন নিতু। ওয়ানডেতে ১০০ উইকেট নেওয়া ভারতের প্রথম নারী ক্রিকেটার তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৫ সালের বিশ্বকাপে আসরের সর্বোচ্চ ২০ উইকেট নেন নিতু।
সব মিলিয়ে টেস্টে ১৮.৯০ গড়ে ৪১ ও ওয়ানডে ১৬.৩৪ গড়ে ১৪১ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ছেলে ও মেয়ে মিলিয়ে ওয়ানডেতে অন্তত একশ উইকেট নেওয়া বোলারদের মধ্যে নিতুর গড়ই সবার সেরা।
১৯৯৫ সালে মেয়েদের শততম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৩ রানে ৮ উইকেট নেন নিতু। যা এখন পর্যন্ত মেয়েদের টেস্টে সেরা বোলিং। প্রাথমিকভাবে ২০০৬ সালে অবসর নিলেও পরে ফিরে ২০০৮ সালে ভারতের এশিয়া কাপ জয়ে অবদান রাখেন তিনি।
টেস্ট ইতিহাসের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন কুক। নাগপুরে ২০০৬ সালে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করে আগমনী বার্তা দেন ২১ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার।
এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ইংল্যান্ডের ব্যাটিং গ্রেট। সব মিলিয়ে ১৬১ টেস্টে ৩৩ সেঞ্চুরি ও ৫৭ ফিফটির সৌজন্যে ১২ হাজার ৪৭৩ রান করেন কুক। সম্প্রতি তাকে টপকে যান জো রুট। এর আগ পর্যন্ত কুকই ছিলেন নিজ দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
বর্ণিল ক্যারিয়ারে অধিনায়ক হিসেবে ঘরের মাঠে ২০১৩ ও ২০১৫ সালের অ্যাশেজ জেতেন কুক। অস্ট্রেলিয়া ২০১০-১১ মৌসুমের অ্যাশেজে ১২৭.৩৩ গড়ে ৭৬৬ রান করেন তিনি। ২০১২-১৩ মৌসুমে তার নেতৃত্বে প্রায় ২৮ বছর পর ভারতের মাঠে টেস্ট সিরিজ জেতে ইংল্যান্ড। ওই সিরিজে তিনটি সেঞ্চুরি করেন কুক। এছাড়া টেস্ট ইতিহাসে এক টানা ১৫৯ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও কুকের।
সাদা বলের ক্রিকেটে ৯২ ওয়ানডে ৩২০৪ ও ৪ টি-টোয়েন্টি খেলে ৬১ রান করেন ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। তার নেতৃত্বে ঘরের মাঠে ২০১৩ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রানার্স-আপ হয় ইংল্যান্ড।
প্রায় ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২০ হাজারের বেশি রান করেছেন ডি ভিলিয়ার্স। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি তো বটেই, টেস্টেও দারুণ স্ট্রোকসমৃদ্ধ ব্যাটিংয়ে দর্শকদের বিনোদন জোগাতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি।
ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটি, দ্রুততম সেঞ্চুরি ও দ্রুততম ১৫০ রানের রেকর্ড এখনও ডি ভিলিয়ার্সের দখলে। ওয়ানডে ও টেস্টে বেশ লম্বা সময় আইসিসি ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ছিলেন তিনি। দুই সংস্করণেই তার গড় পঞ্চাশের ওপরে।
সব মিলিয়ে ১১৪ টেস্টে ৮ হাজার ৭৬৫ রান, ২২৮ ওয়ানডে ৯৫৭৭ রান ও ৭৮ টি-টোয়েন্টিতে ১ হাজার ৬৭২ রান করেন প্রোটিয়া ব্যাটিং গ্রেট। উইকেটের চারদিকে বাহারি শটের সৌজন্যে 'মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি' নামেও পরিচিতি পান তিনি।