জিম্বাবুয়ে-আফগানিস্তান সিরিজ
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ব্লেসিং মুজারাবানি ৬ উইকেট নিলেও বুলাওয়ায়োয় দ্বিতীয় টেস্টে হারের শঙ্কায় পড়ে গেছে জিম্বাবুয়ে।
Published : 05 Jan 2025, 11:11 PM
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৯২ গড় নিয়ে টেস্ট অভিষেকে প্রথম ইনিংসে ভীষণ হতাশ করা ইসমাত আলম এবার গড়লেন ইতিহাস। আফগানিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজের প্রথম টেস্টে করলেন সেঞ্চুরি। তার ও রেহমাত শাহর তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়ার পর বল হাতে আলো ছড়ালেন রাশিদ খান। তার ৬ উইকেটে বুলাওয়ায়োতে দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের পথে আফগানিস্তান।
কুইন্স স্পোর্টস ক্লাবে রোববার চতুর্থ দিনের খেলা শেষে জিম্বাবুয়ের রান ৮ উইকেটে ২০৫। জয়ের জন্য শেষ দিন তাদের চাই আরও ৭৩ রান। সিরিজ জিততে আফগানিস্তানের প্রয়োজন দুটি উইকেট।
স্বাগতিকদের আশা হয়ে ক্রিজে টিকে আছেন ক্রেইগ আরভিন। চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৯৭ বলে ৫৩ রানে খেলছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। তাকে সামলাতে হবে ৬ টেস্টের ছোট্ট ক্যারিয়ারে এদিনই ম্যাচেই পঞ্চমবার পাঁচ উইকেট নেওয়া রাশিদের জাদুকরী বোলিং। ৬৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে এই লেগ স্পিনারই ম্যাচে জয়ের পথে নিয়ে গেছেন সফরকারীদের।
অবদান কম নয় মাত্র পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টে একই সঙ্গে শূন্য ও সেঞ্চুরির বিপরীতধর্মী স্বাদ পাওয়া ইসমাতের। মাত্র নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট অভিষেকে আটে নেমে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়া এই ব্যাটসম্যান ৯ চারে ১৮১ বলে করেন ১০১ রান।
সফরকারীদের দারুণ পারফরম্যান্সে একরকম আড়ালেই পড়ে গেছেন ক্যারিয়ারে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পাওয়া ব্লেসিং মুজারাবানি। ৯৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে তিনিই লক্ষ্য তিনশ ছুঁতে দেননি। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পরও অবশ্য স্বস্তিতে নেই জিম্বাবুয়ে।
৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে দিন শুরু করে আফগানিস্তান। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ইসমাতকে সঙ্গ দেওয়া রাশিদকে ফিরিয়ে ৫০ রানের জুটি ভাঙেন মুজারাবানি।
নবম উইকেটে ইয়ামিন আহমাদজাইয়ের সঙ্গে ৩৮ রানের আরেকটি কার্যকর জুটিতে দলকে সাড়ে তিনশ রানে নিয়ে যান ইসমাত। সঙ্গে গড়েন অনন্য ওই কীর্তি; নিজ দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি। নিশ্চিত হয়ে যায় রেকর্ড বইয়ের একটি পাতায় সবার উপরে থাকা।
এরপর অবশ্য টিকতে পারেননি ইসমাত। মুজারাবানিকে পুল করার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। একটু পরে ইয়ামিনকে বিদায় করে ৩৬৩ রানে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসের ইতি টানেন রিচার্ড এনগারাভা।
২৭৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় রাশিদ ও জিয়া-উর-রেহমানের চমৎকার বোলিংয়ে বিপদে পড়ে গেছে জিম্বাবুয়ে।
প্রথম চার ব্যাটসম্যানের সবাই ভালো শুরু পান; কিন্তু কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। জয়লর্ড গাম্বিকে ফিরিয়ে ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন জিয়া। দুই ঘরানার ব্যাটিংয়ে ৩৮ রান করা বেন কারান ও সিকান্দার রাজাকে বিদায় করেন রাশিদ।
টাকুডজওয়ানশে কাইটানো, ডিওন মায়ার্স ও শন উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে ২৬ বছর বয়সী রিস্ট স্পিনার পূর্ণ করেন নিজের পাঁচ উইকেট। পরে তিনি শূন্য রানে বিদায় করে দেন ব্রায়ান বেনেটকেও।
গাম্বির পর নিউম্যান নিয়ামহুরিকে বিদায় করে স্বাগতিকদের বিপদ বাড়ান বাঁহাতি স্পিনার জিয়া।
একের পর এক সতীর্থকে হারানোর পর পাল্টা আক্রমণে রান বাড়ান আর্ভিন। তবে জয় এখনও অনেক দূরে। চতুর্থ দিন শেষ বেলায় ১৭ বল খেলে তাকে অনেকটা সাহায্য করেছেন এনগারাভা। পঞ্চম দিন নাটকীয় কিছু ঘটাতে হলে তার ও মুজারাবানিরও ব্যাট হাতে অনেক ভূমিকা রাখতে হবে। রাশিদ যেভাবে বোলিং করছেন, তাতে কাজটা মোটেও সহজ হবে না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান ১ম ইনিংস: ১৫৭
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৪৩
আফগানিস্তান ২য় ইনিংস: (আগের দিন ২৯১/৭) ১১৩.৫ ওভারে ৩৬৩ (ইসমাত ১০১, রাশিদ ২৩, ইয়ামিন ১৯, ফারিদ ২*; এনগারাভা ২৫.৫-৪-৭৬-৩, মুজারাবানি ২৯-৫-৯৫-৬, নিয়ামহুরি ১৭-২-৬০-০, রাজা ৩০-৪-৭৯-১, বেনেট ১২-১-৪১-০)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৮) ৬৬ ওভারে ২০৫/৮ (গাম্বি ১৫, কারান ৩৮, কাইটানো ২১, রাজা ৩৮, মায়ার্স ৬, আর্ভিন ৫৩*, উইলিয়ামস ১৬, বেনেট ০, নিয়ামহুরি ০, এনগারাভা ৩*; ইয়ামিন ১১-১-২৪-০, ফারিদ ১২-৪-৪৪-০, জিয়া ১৫-১-৪৪-২, রাশিদ ২৬-২-৬৬-৬, মালিক ১-০-১২-০)