আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তো আর এমনিতে এমন বড় কিছু নয়। ২০১০ সালের পর থেকে বাংলাদেশকে ওয়ানডেতে হারাতে পারেনি তারা। তাদের বিপক্ষে জয়টা তাই খুবই প্রত্যাশিত। তার পরও চেমসফোর্ডে শেষ ম্যাচের জয়টি বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবালের কাছে বিশেষ কিছু। এমন জয় যে বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিরল!
এই ম্যাচে এক পর্যায়ে জয় ছিল আয়ারল্যান্ডের নাগালেই। হ্যারি টেক্টর ও লর্কান টাকারের দুর্দান্ত জুটিতে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিল জয়ের দিকে। শেষ ৯ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল স্রেফ ৫২ রান। উইকেট বাকি তখনও ৭টি। সেখান থেকেই অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় আদায় করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
টেক্টরকে ফিরিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত চমকপ্রদ ব্রেক থ্রু দেওয়ার পর মুস্তাফিজুর রহমান শেষ স্পেলে তিন ওভারে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন জয়ের কাছে। শেষ ওভারে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে ধরা দেয় ৫ রানের জয়। নিশ্চিত হয় সিরিজ জয়ও।
বাংলাদেশ দলে ১৬ বছরের পথচলায় এই ধরনের ম্যাচে অনেকবারই হৃদয়ভাঙা হারের স্বাক্ষী হয়েছেন তামিম। অনেকবারই চাপের মধ্যে ভেঙে পড়েছেন তারা। অনেক সময় জয়ের কাছে গিয়েও হারিয়েছেন পথ। এবার উল্টো স্বাদ পেয়ে উচ্ছ্বসিত।
“আজকের ম্যাচ আমার কাছে খুবই খুবই স্পেশাল। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আমরা সবসময় উল্টো দিকটাই দেখে এসেছি। জয়ের মতো অবস্থায় থেকে আমরা হেরেছি অনেকবার। খুব বিরল যে আমরা এসব ম্যাচ জিতেছি, বিশেষ করে যখন বোলিং করছি। এটা দেখতে পাওয়াটা তাই খুবই তৃপ্তির। বোলিং গ্রুপ এখান থেকে দারুণ আত্মবিশ্বাস পাবে।”
লাগাম যখন আইরিশদের হাতে, তখন জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং অধিনায়কও। ম্যাচ শেষে তা অকপটে স্বীকারও করলেন তিনি।
“আমি যদি বলি যে, আমাদের বিশ্বাস ছিল জয়ের, তাহলে মিথ্যে বলা হবে। একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে গেছে। তবে ক্রিকেট তো মজার খেলা, আমরা তা যথেষ্ট দেখেছি। ২-১ উইকেটেই ম্যাচ বদলে যেতে পারে, এটা মাথায় ছিল। স্কোরবোর্ডের চাপ খুব বাজে ব্যাপার। ফিজ (মুস্তাফিজ) যেভাবে বোলিং করেছে এবং বিশেষ করে আমরা যখন ক্যাম্পার ও টাকারকে ফেরাতে পারি, তখন বিশ্বাস ফিরেছে যে আমরা জিততে পারি।"
এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তির হাতছানি ছিল সামান্য, হারানোর শঙ্কা ছিল বেশি। শেষ পর্যন্ত হারাতে হয়নি তেমন কিছু, বরং প্রাপ্তি কম নয়। শেষ ম্যাচে যেমন বোলিংয়ে চাপের মধ্যে জয় আদায় করেছে দল, দ্বিতীয় ম্যাচে তেমনি ৪৫ ওভারে ৩২০ রান তাড়ায় শুরুতে চাপে পড়লেও পরে অসাধারণ ব্যাটিংয়ে জিতেছেন তারা। এটিই বাড়তি তৃপ্তি দিচ্ছে অধিনায়ককে।
“আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। খুব ভালো বলব না, তবে ‘টাফ’ ক্রিকেট খেলেছি। ৪৫ ওভার ৩২০ রান তাড়া করা, মাঠের আকার যেমন হোক বা প্রতিপক্ষ যে-ই হোক, কাজটা কঠিন। দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা যেভাবে খেলেছি এবং ব্যাট করেছি, তা ছিল অসাধারণ।”