ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান এন শ্রীনিবাসনকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
Published : 25 Mar 2014, 12:53 PM
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই তার সরে দাঁড়ানোটা প্রয়োজন বলে সুপ্রিম কোর্টের দুই সদস্যের একটি বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে।
শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআইয়ের সভাপতির পদ থেকে দুই দিনের মধ্যে সরে না দাঁড়ালে আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে তাকে সরে দাঁড়াতে আদেশ দেয়া হতে পারে।
আইপিএলে ফিক্সিং নিয়ে সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগালের প্রতিবেদনের ওপর শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি একে পাটনায়েক বলেন, “আমাদের মতে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে শ্রীনিবাসনকে তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত।”
এর আগে শ্রীনিবাসনের মেয়ের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পনের বিরুদ্ধে আইপিএলে বাজি ধরা এবং ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রমাণ পায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন। সাবেক বিচারপতি মুকুল মুডগালের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন এর আগে তাদের যে প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়, তার ওপরই এ শুনানি চলছে।
আইপিএলের দল রাজস্থান রয়্যালসের মালিক রাজ কুন্দ্রার বিরুদ্ধে আরো তদন্ত প্রয়োজন বলেও কমিশন সুপারিশ করে। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত কমিশনের এই সুপারিশ আমলে নিয়ে সব বিষয়েই তদন্তের জন্য বলেছে। তবে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সবার আগে শ্রীনিবাসনকে সরে দাঁড়াতে হবে বলে মনে করে আদালত।
পাটনায়েক বুঝতে পারছেন না, এমন একটি বাজে ঘটনার পরও কিভাবে শ্রীনিবাসন তার পদ আকড়ে আছে।
“শ্রীনিবাসনের এখনো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে থেকে যাওয়াটা কুরুচিপূর্ণ। ক্রিকেটকে কলুষমুক্ত করার জন্য তার সরে যাওয়া উচিত।”
শ্রীনিবাসন এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে এনডিটিভিকে তিনি জানান, আদালতের আদেশটি তিনি পড়ে দেখবেন।
এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রবি শাওয়ান্ত বলেন, "সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়ে থাকলে তা অনুসরণ করাই উচিত।"
আরেক সহ-সভাপতি বলেন, “কেউ জানে না, এখন কী করা করা যায়। আদালত এখনো নির্দেশ দেয়নি। তবে সবকিছুই এখন তার (শ্রীনিবাসন) ওপর নির্ভর করছে। আদালত তাকে সরে দাঁড়াতে বলেছে। পদ না ছাড়লে আদালত নির্দেশ দেবে। বিসিসিআইয়ের জন্য এটা ভালো ব্যাপার নয়।”
ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শ্রীশান্তসহ রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত অনেকের পরিচয় ফাঁস হতে থাকে, গ্রেপ্তার হন আরো কয়েকজন।
তারই ধারাবাহিকতায় প্রেপ্তার হন চেন্নাই সুপার কিংসের ‘প্রিন্সিপাল’ ও শ্রীনিবাসনের জামাই গুরুনাথ মায়াপ্পন। এরপর শ্রীনিবাসনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ভারতের ক্রিকেট অঙ্গন। ফলে ওই সময় বিসিসিআইয়ের এক জরুরি সভায় শ্রীনিবাসনকে এক মাসের জন্য দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
অবশ্য কিছুদিন পরই জামিনে মুক্তি পান মায়াপ্পন। তার শ্বশুরও বোর্ড প্রধানের দায়িত্বে ফেরেন। বিসিসিআইয়ের প্রধান শ্রীনিবাসন এখন হতে যাচ্ছেন ‘তিন মোড়ল’ ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবে চলে যাওয়া আইসিসির সর্বক্ষমতাসম্পন্ন চেয়ারম্যান।