আগের ম্যাচে নিজের হিটিং সামর্থ্যের খানিকটা ঝলক দেখিয়েছিলেন মইন আলি। এবার মেলে ধরলেন যেন পুরোটা। ঝাঁপি থেকে বের করলেন একের পর এক চোখধাঁধানো সব শট। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইংলিশ অলরাউন্ডার নান্দনিক ঝড়ে গুঁড়িয়ে দিলেন খুলনার বোলিং।
Published : 11 Feb 2022, 03:07 PM
বিপিএলে মইনের প্রথম ফিফটি ছোঁয়ার ইনিংসটি হয়ে থাকল তারটি-টোয়েন্টি সামর্থ্যের বিজ্ঞাপন। ৩৫ বলে ৭৫ রানের ইনিংসে দৌড়ে নিয়েছেন কেবল ১৭ রান।ইনিংসে চার মোটে ১টি, তবে ছক্কা ৯টি!
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার একটা পর্যায়েমইনের সামনে যেন বল ফেলার জায়গাই পাচ্ছিলেন না প্রিমিয়ার ব্যাংক খুলনা টাইগার্সের বোলাররা।
আগের ম্যাচে সিলেটে চার নম্বরে নেমে ৩৫ বলে ৪৬ রানেরগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মইন। এই ম্যাচে মাঠে নামেন পাঁচ নম্বরে। ওপেনিংয়ে ১৭ বলে৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ততক্ষণে বিদায় নিয়েছেন লিটন দাস। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস টিকতেপারেননি বেশিক্ষণ। দশম ওভারে কুমিল্লার রান ৩ উইকেটে ৭১। এই সময়টায় একটি জুটি যেমনদরকার, তেমনি ধরে রাখা প্রয়োজন রানের গতিও।
সেই কঠিন কাজটিই অনায়াসে করেন মইন। নিজের অভিজ্ঞতা আরসামর্থ্যের ছাপ রেখে এগিয়ে নেন দলকে। শুরুতে খানিকটা সময় নেন বটে। ৮ বলে তার রান ছিল৪। আরেকপ্রান্তে ফাফ দু প্লেসি অনেকক্ষণ উইকেটে কাটালেও ছন্দ পাচ্ছিলেন না। রানের গতিবাড়ানোর কাজটিও তাই নিজের কাঁধে নেন মইন।
মইনের জন্যই যাকে সেসময় বোলিংয়ে কাজে লাগাচ্ছিলেন খুলনাঅধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, সেই অফ স্পিনার মেহেদি হাসানকে দিয়েই শুরু হয় তার ব্যাটিং তাণ্ডব।হাঁটুগেড়ে একটা ছক্কা মেরে পরের বল ছক্কায় ওড়ান লং অন দিয়ে। ওই ওভারেই আরেকটি শর্টবল পেয়ে অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে টেনে উড়িয়ে মারেন মিড উইকেট দিয়ে।
৩ ছক্কার ওভারের পর মইন হয়ে ওঠেন যেন অপ্রতিরোধ্য। কাভারেরওপর দিয়ে ছক্কা মারেন সৌম্য সরকারকে, পুল করে থিসারা পেরেরাকে, লফটেড অফ ড্রাইভে খালেদআহমেদকে। পরে সৌম্যকে একটি ছক্কা মেরে পঞ্চাশ পেরিয়ে যান ২৩ বলে, সেটি উদযাপন করেনআরেকটি ছক্কায়।
নিজের ব্যাটিংয়ের চেনা ঘরানাতেই এই ছক্কার স্রোত বইয়েদেন মইন। পেশি শক্তির প্রদর্শনী সেখানে ছিল না খুব একটা। বরং টাইমিং আর নান্দনিকতারমিশেলে মনের ক্যানভাসে আঁচড় কেটে যাওয়া একেকটি শট।
৮ ছক্কার পর প্রথমবার তার ব্যাট থেকে গড়িয়ে সীমানা ছাড়ায়বল থিসারার ফুল টস ডেলিভারিতে লং অফ দিয়ে। ইনিংসের সেরা শটটি খেলেন এরপরই। কবজির মোচড়েথিসারাকে ফ্লিকের মতো করে আছড়ে ফেলেন গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে।
অসাধারণ ইনিংসটি শেষ হয় ফুল টস ডেলিভারিতে। অফ স্টাম্পেরবাইরের বলটি তিনি তুলে দেন কাভার সীমানায়।
কোভিড পরিস্থিতির কারণে গ্যালারিতে নেই দর্শক। যদি পরিস্থিতিস্বাভাবিক থাকত, মইন মাঠ ছাড়ার সময় হয়তো দুই দলের সমর্থকেরাই দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাতেনতাকে।
মইনের ইনিংসটির সৌজন্যেই ২০ ওভারে কুমিল্লা তুলতে পারে১৮৮ রান।