ঘরবন্দি জীবনকে মেহেদী হাসান মিরাজের কাছে মনে হয়েছিল ‘জেলখানা।’ মোহাম্মদ মিঠুনের কাছে এই অভিজ্ঞতা খুবই ‘কষ্টকর।’ চার দেয়ালের মধ্যে দমবন্ধ অনুভূতি হচ্ছিল কয়েকজনের। অবশেষে মুক্তি মিলছে সেই জীবন থেকে। বৃহস্পতিবার থেকে ক্রাইস্টচার্চে গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুশীলন করতে পারবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
Published : 03 Mar 2021, 03:29 PM
নিউ জিল্যান্ডে তৃতীয় দফা কোভিড পরীক্ষায়ও সবাই নেগেটিভ হওয়ার পর অনুশীলন শুরু করতে আর কোনো বাধা নেই। ক্রাইস্টচার্চের অদূরে লিঙ্কনে সাত জনের গ্রুপে ভাগ হয়ে বৃহস্পতিবার শুরু হবে ব্যাট-বলের তুকতাক। গ্রুপে ক্রিকেটার থাকবেন ৫ জন করে, সাপোর্ট স্টাফের সদস্য ২ জন।
মুক্ত বাতাসে অনুশীলন শুরুর আগে খানিকটা মহড়া অবশ্য হয়ে গেছে বুধবার। নিউ জিল্যান্ডে পৌঁছার পর এ দিনই প্রথমবার দলগতভাবে জিম সেশন করতে পেরেছেন ক্রিকেটাররা।
৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে গত বুধবার ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছায় বাংলাদেশ দল। প্রথম ৩ দিন পুরো সময়ই ঘরে আটকা থাকতে হয়েছে ক্রিকেটারদের। এরপর সারাদিনে ৪০-৪৫ মিনিটের জন্য বের হওয়ার সুযোগ ছিল কেবল হোটেলের লনে ও খোলা জায়গায়। পর দিন তা বেড়ে হয়েছে দুই বেলা। এরপর তিন বেলা মিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় হোটেলের খোলা জায়গায় শ্বাস নেওয়ার সুযোগ মিলেছে। এই সময়টায় ফিটনেস নিয়ে কাজ করার একমাত্র উপায় ছিল যার যার হোটেল রুমে সাইক্লিং আর টুকটাক কসরত।
এক সপ্তাহের হাঁসফাঁস সময়টা শেষ হওয়ায় মোহাম্মদ মিঠুন স্বস্তির কথা জানালেন বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায়।
“এতদিন আমাদের চলাফেরায় অনেক বাধা ছিল। এখন আস্তে আস্তে নরম্যাল হচ্ছে। আজকে জিম করার সুযোগ পেয়েছি। এক সপ্তাহ পর জিম ব্যবহার করতে পেরে ভালো লাগছে।”
“ঘরের মধ্যে থাকা আসলেই অনেক কষ্টকর। খুব বেশি কিছু করার নেই, সারাদিন ঘরের মধ্যে থেকে। বিশেষ করে আমরা এখানে একটি সিরিজ খেলতে এসেছি…কালকে থেকে মাঠে যেতে পারব, ভাবতেই আলাদা ভালো লাগা কাজ করছে। কাল থেকে আমরা যখন ক্রিকেট ট্রেনিংয়ে ফিরব, তখন আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে পারব।”
“এখনকার আবহাওয়া খুবই ভালো। আগে এখানে আবহাওয়ার কারণে যে ভুগতে হতো, এরকম আবহাওয়া থাকলে এবার আশা করি সেটা হবে না।”
বৃহস্পতিবার থেকে গ্রুপ ধরে অনুশীলন চলবে এক সপ্তাহ। অনুশীলন শেষে যথারীতি যার যার রুমে গিয়ে আবার বন্দি সময়। এভাবে ৭ দিন চলার পর কোভিড পরীক্ষায় নেগেটিভ হওয়া সাপেক্ষে মিলবে পুরোপুরি মুক্তি। কোনো জৈব-সুরক্ষা বলয়ের ব্যাপার নেই। স্বাধীনভাবে যে কোনো জায়গায় ঘুরে বেড়াতে আর কোনো বাধা থাকবে না।
মিঠুন জানালেন, গোটা দল তাকিয়ে ওই সময়টার দিকে।
“১৪ দিন পর আমাদের যে স্বাভাবিক চলাফেরা শুরু হবে, অবশ্যই সবাই তা উপভোগ করবে। কারণ ১ বছর ধরে আমরা কোভিডের মধ্যে আছি। বাংলাদেশেও যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি, হোটেল থেকে বের হওয়ার সুযোগ হয়নি। এখানে একটু আলাদা, ১৪ দিন পর মুক্ত হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারব। সেটা ভেবে ভালো লাগছে।”
কোয়ারেন্টিন থেকে পুরোপুরি মুক্তির পর বাংলাদেশ দল ১২ মার্চ যাবে কুইন্সটাউনে। নান্দনিক সৌন্দর্যের শহরে ৫ দিনের নিবিড় অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। এরপর ১৭ মার্চ গন্তব্য প্রথম ওয়ানডের ভেন্যু ডানেডিন। ২০ মার্চ শুরু ওয়ানডে সিরিজ।
পরের দুই ওয়ানডে ২৩ ও ২৬ মার্চ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ এই সিরিজ। এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচ ২৮, ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল।
নিউ জিল্যান্ড সফরের বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, মোসাদ্দেক হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেন, শরিফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ।