নাজমুল ইসলামের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পর হাসান মাহমুদের তোপে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে হারাল হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
Published : 11 Mar 2024, 07:40 PM
মুকিদুল ইসলামের ছোবলে নাটকীয় ধসে অল্পেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ১২৭ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে পথ দেখালেন নাজমুল ইসলাম ও রুবেল হোসেন। এক সময়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলা দুই ক্রিকেটারের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়ার পর জ্বলে উঠলেন হাসান মাহমুদ। অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া পেসারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বড় জয়ই পেল তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দল।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের নতুন আসরের উদ্বোধনী দিনে ৭১ রানে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান নাজমুল ও রুবেলের শেষ জুটির। বিপর্যয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের বন্ধন ছিল ৬৯ রানে।
উইকেটে বোলারদের জন্য বেশ সহায়তা ছিল। এরপরও ১৯৭ রানের লক্ষ্য অসম্ভব কিছু ছিল না। কিন্তু শাইনপুকুরকে ধারেকাছে যেতে দেননি হাসান। তার তোপে ৪৯ বল বাকি থাকতে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় তারুণ্য নির্ভর দলটি।
দুই দল মিলিয়েই ম্যাচে সর্বোচ্চ রান নাজমুলের ৪০। পরে বাঁহাতি স্পিনে ১ উইকেট নিয়ে তিনিই জিতলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। নিজেকে খুঁজে ফেরা হাসানের শুরুটা হলো আত্মবিশ্বাস জাগানিয়া। ১০ ওভারে ২ মেডেনসহ স্রেফ ১৫ রানে নিলেন ৪ উইকেট।
খান সাহেব ওসমান আলি সোমবার ভালো শুরু পেয়েছিল প্রাইম ব্যাংক। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শাহাদাত হোসেন ও তামিম ইকবালের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৭ রান। নবম ওভারে হাসান মুরাদের আচমকা টার্ন করা ডেলিভারিতে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তামিম। ২৬ বলে ১৭ রান করেন প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক।
শাহাদাতও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ২৮ রান করে ফেরেন তিনি। তবে এক সময়ে ২ উইকেটে ১০১ রানের ভালো ভিতই পেয়েছিল প্রাইম ব্যাংক। মুকিদুলের তোপে এরপরই দিক হারিয়ে ফেলে দলটি। পড়ে যায় ১৩০ রানের আশেপাশে গুটি যাওয়ার শঙ্কা।
জাকির হাসান ও নাঈম ইসলাম ২০ পেরিয়েও পারেননি ইনিংস বড় করতে। পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মাঝে প্রবল প্রতিরোধ গড়েন নাজমুল ও রুবেল। এরপর জুটি গড়েন নাজমুল ও রুবেল। ৫৩ বলের ইনিংসে ৩ চার ও ২টি ছক্কা মারেন নাজমুল। ২৩ রানে অপরাজিত থাকেন রুবেল।
৪২ রানে ৪ উইকেট নেন গতিময় পেসার মুকিদুল।
ছোট পুঁজি নিয়ে হাসানের হাত ধরে প্রাইম ব্যাংকের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। অফ স্টাম্প লাইনে পিচ করে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হন বাঁহাতি ওপেনার খালিদ হাসান। পরের বল অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে ঢুকে ভেতরে। তাতে পরাস্ত অমিত হাসান, ফের এলোমেলো স্টাম্প। প্রথম ওভারে দুটি বোল্ড বেঁধে দেয় সুর।
শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন জিসান আলম ও মার্শাল আইয়ুব। ২৭ রান করা জিসানকে ফিরিয়ে ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন নাজমুল।
এরপর আর প্রতিরোধ গড়তে পারেনি শাইনপুকুর। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে একশর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায় তারা। দশ নম্বরে নেমে ২৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধান কমান আরাফাত সানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ৪৭ ওভারে ১৯৬ (শাহাদাত ২৮, তামিম ১৭, জাকির ২৪, নাঈম ২৫, পারভেজ ৭, মিঠুন ০, মেহেদি ৩, সানজামুল ৭, হাসান ২, নাজমুল ৪০, রুবেল ২৩*; রবিউল ৮-০-৪০-০, মুকিদুল ১০-১-৪২-৪, মুরাদ ১০-০-৪০-২, আরাফাত ১০-০-২৯-৩, জাওয়াদ ৯-০-৪১-১)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৪১.৫ ওভারে ১২৫ (খালিদ ০, জিসান ২৭, অমিত ০, মার্শাল ২১, ইরফান ৩, আকবর ১৭, জাওয়াদ ১, রবিউল ১, মুরাদ ৬, আরাফাত ২৮*, মুকিদুল ৮; হাসান ১০-২-১৫-৪, রুবেল ৪-০-২৪-০, নাজমুল ১০-০-৩১-১, ৮-০-২৯-৩, মেহেদি ৯-১-২৩-১, নাঈম ০.৫-০-২-১)
ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৭১ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাজমুল ইসলাম