এমন ম্যাচ হেরেও গর্বিত নেপাল অধিনায়ক

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঐতিহাসিক এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত পারেনি নেপাল।

রোহিত পাউড়েল কোনো রান করতে পারেননি। তাব্রেইজ শামসির দুর্দান্ত এক টার্নিং ডেলিভারিতে তিনি বোল্ড হয়েছেন শূন্য রানেই। তিনি কিছু রান করলে হয়তো তার দলও জিততে পারত! আফসোস বা বা আক্ষেপের শেষ নয় এখানেই। রোহিত পাউড়েল না পারলেও তার সতীর্থরা প্রায় পেরেই ফেলেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ঐতিহাসিক এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও পারেনি নেপাল। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় মুঠোয় পেয়েও ফসকে ফেলেছে নেপাল। দলকে নিয়ে তবু গর্বের শেষ নেই নেপাল অধিনায়ক রোহিতের।

সেন্ট ভিনসেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল নেপাল। প্রোটিয়াদের তারা আটকে রেখেছিল ১১৪ রানে। রান তাড়ায় এক পর্যায়ে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৪ বলে ২১ রান, উইকেট ছিল তখনও ৭টি। কিন্তু এরপর নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহের পর শেষ পর্যন্ত ১ রানে হেরে গেছে নেপাল।

শেষ ওভারে শেষ দুই বলে স্রেফ দুই রান প্রয়োজন ছিল নেপালের। কিন্তু গুলশান ঝা দুই বলে কোনো রানই নিতে পারেননি। দুই বলের কোনেটিই তিনি ব্যাটে লাগাতে পারেননি। শেষ বলে ‘বাই’ রান নিতে গিয়েও তিনি রান আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে।

ম্যাচটি জিততে পারলে দিনটি হতো নেপালের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে স্মরণীয় দিন। বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যও এটি হতে পারত একটি চমক জাগানিয়া দিন। কিন্তু সে বিস্ময় শেষ পর্যন্ত উপহার দিতে পারেনি নেপাল, শেষ সময়ের চাপে তারা ভেঙে পড়ায়।

শেষ দুই বলে দুই রান নিতে পারলে ম্যাচ জিততে পারত নেপাল। একটি রান করতে পারলে অন্তত ম্যাচ ‘টাই’ হতো, ম্যাচ গড়াত সুপার ওভারে। নেপাল পারেনি সেটিও।

তবে এত বড় সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরও আক্ষেপের একদম তলানিতে যাচ্ছেন না রোহিত পাউড়েল। বরং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দরতে এতটা চাপে ফেলা এবং জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করাকেই বড় করে দেখছেন নেপাল অধিনায়ক।

“দলকে নিয়ে আমি গর্বিত। বিশেষ করে, যেভাবে আমরা বোলিং ও ব্যাটিং করেছি। এসব নিয়ে আমি খুবই গর্বিত।”

“আমরা খুব কাছে ছিলাম, কিন্তু একটু দূরে রয়ে গেছি। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় আমরা ভালো করেছি, তবে যেভাবে আমরা লড়াই করেছি, তা দারুণ। আমরা যদি এরকম বড় টুর্নামেন্টে নিয়মিত খেলতে পারি, তাহলে পরের ম্যাচে এরকম পরিস্থিতিতে আমরা উল্টো প্রান্তে থাকব।”

সেন্ট ভিনসেন্টের গ্যালারিতে এ দিন নেপালে সমর্থক কিছু দেখা গেছে। দেশে তো তাদের সমর্থনের অভাব নেই। নেপালে ক্রিকেট সমর্থনের নানা গল্প ও ছবি তো ক্রিকেট বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে কবে থেকেই! দলের পাশে থাকার ক্ষেত্রে নেপালের সমর্থকেরা নিজেদের এতটা পরিচয় গড়তে পেরেছে ক্রিকেট বিশ্বে।

ম্যাচ হারার পর সেই সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুললেন না রোহিত।

“সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, সম্ভাব্য সেরা উপায়ে তারা আমাদেরকে সমর্থন জানাচ্ছে। অনেকেই অনেকটা পথ পাড়ি দিতে তারা এখানে এসেছে , বৃষ্টির মধ্যেও সমর্থন দিয়েছে, আমাদের পাশে থেকেছে এবং আমাদের সমর্থনে সবকিছু করেছে।”

নেপালের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের সঙ্গে এই সেন্ট ভিনসেন্টেই, বাংলাদেশ সময় সোমবার ভোরে।