জাতীয় ক্রিকেট লিগ
১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি এনামুল হক, ১১ রানের অপেক্ষায় মোহাম্মদ মিঠুন, আরেকটি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেললেন অমিত হাসান।
Published : 01 Dec 2024, 08:01 PM
জাতীয় ক্রিকেট লিগের গত আসরের প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির পর আর তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পাচ্ছিলেন না রনি তালুকদার। এবারের আসরের শেষ ম্যাচে শতরানের ইনিংস দিয়ে ফুরাল ঢাকার অভিজ্ঞ ওপেনারের অপেক্ষা।
রনির সেঞ্চুরির দিনে ১০ রানের আক্ষেপে পুড়েছেন এনামুল হক। আর সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে আছেন মোহাম্মদ মিঠুন। আসরজুড়ে দারুণ ছন্দে থাকা অমিত হাসান আরেকটি পঞ্চাশছোঁয়া ইনিংস খেলে ঘুচিয়েছেন ৯ বছরের অপেক্ষা।
রনির সেঞ্চুরিতে ঢাকার লিড
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে রনি তালুকদারের সেঞ্চুরির সৌজন্যে বরিশালের বিপক্ষে ১৪ রানের এগিয়ে গেছে ঢাকা। বরিশালের ২৮৯ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩০৩ রান।
অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে বড় কোনো জুটি পায়নি ঢাকা। জিসান আলম, আরিফুল ইসলাম, আশিকুর রহমানরা ভালো শুরু করলেও বেশি দূর যেতে পারেননি। হতাশ করেন অভিজ্ঞ শুভাগত হোম, মোসাদ্দেক হোসেনরা।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে এগোতে থাকেন রনি। তাইবুর রহমানের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়েন রনি। পরে সুমন খানকে নিয়ে অষ্টম উইকেটে যোগ করেন ৫৭ রান।
অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে দ্বাদশ সেঞ্চুরি করেন ৩৪ বছর বয়সী ওপেনার। ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ২০২ বলে ১১২ রান করেন রনি। ৩৫ রানে অপরাজিত সুমন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ২৮৯
ঢাকা ১ম ইনিংস: ৮৬ ওভারে ৩০৩/৮ (আগের দিন ০/০) (রনি ১১২, জিসান ১৯, আরিফুল ২৩, আশিকুর ৩৩, মোসাদ্দেক ৭, শুভাগত ৯, তাইবুর ৩২, মাহফুজুর ০, সুমন ৩৫*, এনামুল ২২*; তানভির ১৮-৩-৫৯-১, মোজাম্মেল ১৪-২-৬২-২, রুয়েল ১৬-২-৭১-১, সালমান ২-০-১২-০, মইনুল ৮-১-১৮-১, সোহাগ ১৫-৪-৪৭-১, মইন ১১-৩-২২-১, ফজলে মাহমুদ ১-০-৪-০, ইফতেখার ১-১-০-০)
আরেকটি ফিফটিতে ৭০০ পেরিয়ে অমিত
দারুণ ছন্দে থাকা আসরের শেষ ম্যাচেও প্রথম ইনিংসে ফিফটি করলেন অমিত হাসান। একই সঙ্গে চলতি লিগে ৭০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেললেন সিলেট অধিনায়ক।
জাতীয় লিগে সবশেষ ২০১৫/১৬ মৌসুমে ৭১৫ রান করেছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। এরপর আর কেউ ৭০০ রান করতে পারেননি।
চলতি লিগে এখন পর্যন্ত ১১ ইনিংসে ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে অমিতের সংগ্রহ ৭১৩ রান। সিলেটের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে ৭০০ বা এর বেশি রান করলেন তিনি। আগের দুজন গোলাম মাবুদ ও অলক কাপালী।
অমিতের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে ২১২ রানে গুটিয়ে গেছে সিলেট। ১৪ রানের লিড পেয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৭০ রান।
২ উইকেটে ৪৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে সিলেট। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৮৮ রান যোগ করেন পিনাক ঘোষ ও অমিত। ৮ চারে ৫৮ রান করে ফেরেন পিনাক। অমিতের ব্যাট থেকে আসে ৬ চারে ৫৩ রান।
এরপর আর কেউ টিকতে পারেননি। অভিষিক্ত নাঈম হোসেনের অপরাজিত ৩০ রানে দুইশ পার করে সিলেট।
রাজশাহীর পক্ষে ৪ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার নিহাদউজ্জামান।
শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন হাবিবুর রহমান ও এসএম মেহেরব। পরে ৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ২২৬
সিলেট ১ম ইনিংস: ৮১.৩ ওভারে ২১২ (আগের দিন ৪৯/২) (পিনাক ৫৮, অমিত ৫৩, গালিব ২৩, তাওহিদ ৭, তোফায়েল ১৭, নাঈম হোসেন ৩০, নাবিল ০, নাঈম আহমেদ ০, সফর ২*; শফিকুল ২১-৮-৪১-২, আসাদুজ্জামান ১৬-২-৪৭-২, সাব্বির ৯-৫-২৬-০, নিহাদউজ্জামান ২৬.৩-৮-৬১-৪, মেহেরব ১-০-২-০, ওয়াসি ৮-২-১১-২)
রাজশাহী ২য় ইনিংস: ১৯ ওভারে ৭০/৩ (হাবিবুর ২৮, মেহেরব ৩২, ওয়াসি ২, নিহাদউজ্জামান ১*, শাকির ০*; সফর ৪-০-১৫-০, নাবিল ৬-১-১৭-১, তোফায়েল ৫-০-২০-১, নাঈম আহমেদ ৪-১-১১-১)
এনামুলের ৯০, মিঠুনের ১১ রানের অপেক্ষা
খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনে ভেজা আউটফিল্ড ও আলোকস্বল্পতায় মাত্র ৪৪ ওভার খেলা হয়। দুই দিন মিলিয়ে রংপুরের বিপক্ষে সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৪০ রান।
২ উইকেটে ৭৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে তৃতীয় উইকেটে ১২৬ রানের জুটি গড়েন এনামুল হক ও মোহাম্মদ মিঠুন। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১০ রান আগে মুকিদুল ইসলামের বলে কট বিহাইন্ড হন এনামুল।
১৪২ বলের ইনিংসে ৯ চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মারেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান।
এরপর আর কাউকে সঙ্গী হিসেবে পাননি মিঠুন। দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত ১০ চার ও ২ ছক্কায় ৮৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
খুলনা ১ম ইনিংস: ৬৯ ওভারে ২৪০/৭ (আগের দিন ৭৯/২) (এনামুল ৯০, মিঠুন ৮৯*, নাহিদুল ৮, জাওয়াদ ১, পারভেজ ১৫, মাসুম ০, মেহেদি ৭*; মুকিদুল ২০-৫-৬৩-২, মেহেদি ১৪-৩-৪০-০, আরিফুল ১২-৪-৩২-২, নবিন ৫-০-১৭-২, মামুন ২-০-২২-০, নজরুল ৬-০-২২-০, রিজওয়ান ৯-২-৩০-১, নাঈম ১-০-৩-০)
আইচের ফিফটি, আশরাফুলের ৪ উইকেট
রাজশাহীর শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামে দুই দিন শেষে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে ঢাকা মেট্রো। প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রামের ১৬০ রানের জবাবে তারা করেছে ২৬৮ রান। ১০৮ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বারে চট্টগ্রামের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭৩ রান।
৬৫ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় দিন ব্যাটিংয়ে নামবে চট্টগ্রাম।
৩ উইকেটে ১৬১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করা মেট্রো বাকি ৭ উইকেটে আর ১০৭ রান যোগ করতে পেরেছে। আইচ মোল্লার ব্যাট থেকে আসে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৫৭ রান। শামসুর রহমানের ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান।
আশরাফুল হাসান নেন ৪ উইকেট, নাঈম হাসানের শিকার ৩টি।
পরে চার নম্বরে নেমে ৫৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন সাজ্জাদুল হক। ৭ চারের সঙ্গে তিনি মারেন ১টি ছক্কা।
দিন শেষে ৩৪ রানে অপরাজিত নাঈম হাসান। মেট্রোকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিতে তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে চট্টগ্রাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (দ্বিতীয় দিন শেষে)
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ১৬০
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৬২.৫ ওভারে ২৬৮ (আগের দিন ১৬১/৩) (আইচ ৫৭, রকিবুল ৩, শামসুর ৪২, আলআমিন ১৭, তাহজিবুল ১০, আবু হায়দার ১, আরিফ ২*, মেহেদি ৬; ইফরান ১৪-২-৪১-১, শরিফ ১১-১-৫৫-১, আশরাফুল ১৭.৫-৩-৮৪-৪, এনামুল ১০-১-৪৬-১, নাঈম ১০-১-৪১-৩)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৪৫ ওভারে ১৭৩/৬ (সাদিকুর ৩৫, পারভেজ ৪, সাদ্দাম ১৬, সাজ্জাদুল ৫৪, ইয়াসির ১১, সাব্বির ৪, নাঈম ৩৪*, শরিফ ৮*; আবু হায়দার ১৪-৩-৪১-৪, মেহেদি ৭-১-২২-০, রকিবুল ৭-০-৩৫-০, আরিফ ১৩-১-৫৫-২, আলআমিন ২-০-৬-০, আনিসুল ২-০-৮-০)