সমালোচনা গ্রহণযোগ্য, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
Published : 02 Jul 2024, 10:12 PM
দল খারাপ করলে সমালোচনা হওয়াকে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। সেসব মেনে নিতে আপত্তিও নেই তার। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে ক্রিকেটারদেরকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে কথা বললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থার প্রধান।
সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স প্রত্যাশিত না হওয়ায় সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলছে প্রচুর। সুপার এইটে প্রথম দুই ম্যাচ হারার পরও শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল। কিন্তু সেই হাতছানিতে দল সাড়া দেয়নি।
ম্যাচের পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, তিন উইকেট দ্রুত পড়ে যাওয়ার পর সেমি-ফাইনালের চেষ্টা না করে স্রেফ জয়ের পরিকল্পনা ছিল তাদের। তার এই কথার পর সমালোচনা আরও তীব্র আকার ধারণ করে। তবে ট্রল ও সমালোচনা অনেক সময়ই মাত্রা ছাড়িয়ে গালিগালাজ, অপমান ও ব্যক্তিগত আক্রমণের রূপ নিয়েছে।
শুধু এই আসরেই নয়, অতীতেও নানা সময়ে এসব সমালোচনা স্রেফ ক্রিকেটীয় থাকেনি, ব্যক্তিগত আক্রমণে পরিণত হয়েছে। এসবকে নিয়েই আলোচনা হয় মঙ্গলবার বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায়।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি জানান, এসব ঘটনায় এখন থেকে আর ছাড় দেবে না বোর্ড।
“এখন যে সমস্ত জিনিস সোশাল মিডিয়াতে চলছে, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত যে আক্রমণ… সেই আক্রমণের একটা নমুনা আছে। দল হেরে গেলে, দল খারাপ করলে মানুষজন রাগ করবে, খারাপ কথা বলবে, সেটারও একটা সীমা আছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে চলে গেছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কোনোভাবেই এসব আর বরদাশত করা হবে না, এই সিদ্ধান্ত আজকে হয়ে গেছে।”
“আপনারা অবশ্যই সমালোচনা করতে পারেন। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ… বিশেষ করে, ক্রিকেটারদেরকে বিশ্বকাপ চলার সময়… এদের সংখ্যা খুবই কম, যাদের কথা বলছি, এরা আসলেই ক্রিকেটকে ভালোবাসে নাকি ক্রিকেটকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে, এটা নিয়ে আমাদের মনে সংশয় আছে।”
নাজমুল হাসান নিজে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন না। তবে নানাজনের কাছ থেকে অনেক কিছুই তিনি জানতে পেরেছেন। সম্প্রতি একজন ইউটিউবারের একটি ভিডিও তার নজরে এসেছে, যেখানে অধিনায়ক শান্তকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে। সেটি দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বোর্ড প্রধানসহ অনেক বোর্ড পরিচালক।
এসবের লাগাম টানতেই এখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন বোর্ড সভাপতি।
“সমালোচনা হবে, মানুষ রাগ করবে, আমরা তা মানি। কিন্তু যে সমস্ত কথা হয়… আমি সামাজিক মাধ্যমে নেই, আমার ফেইসবুক, টু্ইটার কিছুই নেই… একটা দেখে আমার এমন রাগ উঠেছে যে কী বলব… আমাকে অন্যরা পাঠালে খুলিও নাই, বিশ্বাস করেন, খুলিও নাই… একটা দেখে মনে হয়েছে, ‘বলে কী এসব! একজন ক্রিকেটার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে, তাকে নিয়ে এমন মন্তব্য!’ ওই ক্রিকেটারের কথা চিন্তা করেন, ওর খেলা তো বহুদূর, দেশে ফিরবে কীভাবে, মা-বাবা পরিবারের কাছে মুখ দেখাবে কীভাবে! এটা কী ধরনের কথা…!”
“এটা আজকের পর থেকে… আপনাদেরকে আগেই জানিয়ে রাখলাম, এটা আর বরদাশত করব না আমরা।”
কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা অবশ্য সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেনি বিসিবি সভাপতি। তবে বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটবে বোর্ড।