সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১২৯ রানের লক্ষ্যে ১০ ওভারেই জিতে গেল কিউইরা।
Published : 26 Mar 2025, 03:20 PM
দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে অল্পে আটকে রাখলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার জেমস নিশাম। ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালালেন ওপেনার টিম সাইফার্ট। বড় জয়ে সিরিজ শেষ করল নিউ জিল্যান্ড।
আগের ম্যাচেই সিরিজ নিজেদের করে নেওয়া নিউ জিল্যান্ড পঞ্চম টি-টোয়েন্টি জিতেছে ৮ উইকেটে। ওয়েলিংটনে বুধবার পাকিস্তানের ১২৮ রান ১০ ওভারেই পেরিয়ে গেছে স্বাগতিকরা।
নিয়মিত অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারসহ প্রথম পছন্দের বেশ কজন ক্রিকেটারকে ছাড়াই পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জিতল কিউইরা।
বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে বাদ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নতুনভাবে শুরু করা পাকিস্তান সিরিজ হেরে গেল বাজেভাবে।
শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দেন নিশাম। পঞ্চম বোলার হিসেবে আক্রমণে এসে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৪ ওভারে ২২ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন ৩৪ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। নিউ জিল্যান্ডের চতুর্থ বোলার হিসেবে এই সংস্করণে পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি। ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতিও পান তিনিই।
টানা তিন ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে ৩৮ বলে ৯৭ রানে অপরাজিত থাকেন সাইফার্ট। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি গড়া ১০ ছক্কা ও ৬ চারে।
সাইফার্ট ও ফিন অ্যালেন মিলে প্রথম ৬ ওভারে তোলেন বিনা উইকেটে ৯২ রান, পাওয়ার প্লেতে নিউ জিল্যান্ডের যা সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২ উইকেটে ৮৬ রান ছিল তাদের আগের সর্বোচ্চ।
একাদশে পাঁচটি পরিবর্তন এনে এই ম্যাচে খেলতে নামে পাকিস্তান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারায় তারা।
দ্বিতীয় ওভারে হাসান নাওয়াজকে ফেরান জ্যাকব ডাফি। এই সিরিজে অভিষিক্ত নাওয়াজ পাঁচ ম্যাচে করলেন ০, ০, ১০৫*, ১ ও ০।
আরেক ওপেনার মোহাম্মদ হারিস ১১ রান করতে খেলেন ১৭ বল। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে ৭ রান করে ফেরেন ওমাইর ইউসুফ। পাওয়ার প্লেতে ২৭ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।
উসমান খান ও আব্দুল সামাদও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ইনিংসে নিজের দ্বিতীয় বলে সামাদকে ফিরিয়ে শিকার ধরা শুরু করেন নিশাম।
৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা পাকিস্তান ইনিংস সেরা জুটি পায় অধিনায়ক সালমান আলি আগা ও শাদাব খানের ব্যাটে। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে এই দুজন যোগ করেন ৩৫ বলে ৫৪ রান।
২০ বলে ২৮ রান করা শাদাবকে ফিরিয়ে ওই জুটি ভাঙেন নিশাম। একই ওভারে তিনি বিদায় করেন জাহানদাদ খানকে।
সালমান ফিফটি করেন ৩৭ বলে। এরপরই তার ৩৯ বলে ৫১ রানের ইনিংস থামান নিশাম। ওই ওভারেই নিজের কোটার শেষ বলে সুফিয়ান মুকিমকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি।
এই ম্যাচে দুটিসহ ১৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ শেষ করেন ডাফি।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারে জাহানদাদকে দুই ছক্কা ও একটি চারে ডানা মেলে দেন সাইফার্ট। পরের ওভারে মোহাম্মদ আলিকে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন অ্যালেন।
হারিস রউফকে পরপর চার ও ছক্কার পর সাইফার্ট ঝড় বইয়ে দেন পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে। জাহানদাদকে তিনটি ছক্কা ও একটি চার মারেন তিনি। এই ওভারে আসে ২৫ রান।
পরের ওভারে অ্যালেনকে (১২ বলে ২৭) ফিরিয়ে ৯৩ রানের বিস্ফোরক জুটি ভাঙেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার মুকিম। নিজের পরের ওভারে মার্ক চাপম্যানের উইকেটও পেয়ে যান তিনি।
পরের ওভারে শাদাবের প্রথম ও শেষ তিন বলে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন সাইফার্ট। প্রতিপক্ষের রান আরেকটু বেশি হলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটাও হয়তো পেয়ে যেতেন তিনি!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১২৮/৯ (হারিস ১১, নাওয়াজ ০, ইউসুফ ৭, সালমান ৫১, উসমান ৭, সামাদ ৪, শাদাব ২৮, জাহানদাদ ১, রউফ ৬*, মুকিম ০, আলি ০*; ও’রোক ৪-০-২৯-০, ডাফি ৪-০-১৮-২, সিয়ার্স ৪-০-২৫-১, সোধি ৪-০-৩২-১, নিশাম ৪-০-২২-৫)
নিউ জিল্যান্ড: ১০ ওভারে ১৩১/২ (সাইফার্ট ৯৭*, অ্যালেন ২৭, চাপম্যান ৩, মিচেল ২*; জাহানদাদ ২-০-৪৩-০, আলি ২-০-২৭-০, রউফ ২-০-২২-০, মুকিম ২-০-৬-২, শাদাব ২-০-৩৩-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৫ ম্যাচের সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে জয়ী নিউ জিল্যান্ড
ম্যান অব দা ম্যাচ: জেমস নিশাম
ম্যান অব দা সিরিজ: টিম সাইফার্ট