আইসিসি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪
মেয়েদের বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন চামারি আতাপাত্তু, স্মৃতি মান্ধানা, অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও লরা উলভার্ট।
Published : 29 Dec 2024, 05:24 PM
আইসিসির ছেলেদের বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের চার জনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার দুই ক্রিকেটার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কুসাল মেন্ডিস। সেরার লড়াইয়ে তাদের সঙ্গী আফগানিস্তানের আজমাতউল্লাহ ওমারজাই ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেরফেইন রাদারফোর্ড।
মেয়েদের বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু, ভারতের স্মৃতি মান্ধানা, অস্ট্রেলিয়ার অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট।
এই দুই সংক্ষিপ্ত তালিকা রোববার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা।
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা)
এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার ২০২৪ সালে ১০ ওয়ানডেতে ওভারপ্রতি ৫.৩৬ করে রান দিয়ে উইকেট নেন ২৬টি। এছাড়া ব্যাট হাতে করেন ৮৭ রান।
বছরে প্রথম তিন ওয়ানডেতে তার শিকার ছিল ১১ উইকেট। কলম্বোয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫.৫ ওভারে ১৯ রানে ৭ উইকেট নেওয়ার পর উইকেটশূন্য থাকেন একটি ম্যাচে। পরের ম্যাচে পাল্লেকেলেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬.৫ ওভারে ২৭ রানে নেন ৪ উইকেট।
মার্চে বাংলাদেশ সফরে তিন ম্যাচে তিনি উইকেট নেন ৬টি। অগাস্টে ভারতের বিপক্ষে এক ম্যাচে ৫৮ রানে ধরেন ৩ শিকার। অক্টোবরে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচে নেন ৬ উইকেট।
কুসাল মেন্ডিস (শ্রীলঙ্কা)
এই কিপার ব্যাটসম্যান ২০২৪ সালে ১৭ ওয়ানডে ইনিংসে ৫৩ গড় ও ৯০.৫৯ স্ট্রাইক রেটে করেন ৭৪২ রান। একটি সেঞ্চুরির পাশে ফিফটি আছে ৬টি। উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতেও উজ্জ্বল ছিলেন তিনি। বছর তার ডিসমিসাল ১৯টি।
ওই ১৭ ওয়ানডের মধ্যে শ্রীলঙ্কা হারে কেবল ৩টিতে।
এই বছর খেলা ছয় প্রতিপক্ষের সবার বিপক্ষেই ফিফটি করেন মেন্ডিস। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন একটি সেঞ্চুরি। ডাম্বুলায় বৃষ্টিবিঘ্নিত ওই ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ১২৮ বলে ১৪৩ রানের ইনিংস।
আজমাতউল্লাহ ওমারজাই (আফগানিস্তান)
এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ২০২৪ সালে ১৪ ওয়ানডের ১২ ইনিংসে ব্যাট হাতে ৫২.১২ গড় ও ১০৫.৫৬ স্ট্রাইক রেটে করেন ৪১৭ রান। একটি সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি আছে তিনটি।
বছরে প্রথম ম্যাচে পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান তাড়ায় ১১৫ বলে অপরাজিত ১৪৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। যদিও ম্যাচটি হেরে যায় আফগানিস্তান। সেপ্টেম্বরে শারজাহতে দক্ষিণ আফ্রিকর বিপক্ষে করেন ৫০ বলে অপরাজিত ৮৬, একই মাঠে নভেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে করেন ৭৭ বলে অপরাজিত ৭০; দুটিই ম্যাচেই জেতে আফগানরা।
বছরে বল হাতে ১৩ ইনিংসে ওভারপ্রতি ৪.৯০ রান দিয়ে ১৭ উইকেট শিকার করেন তিনি।
শেরফেইন রাদারফোর্ড (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ২০২৪ সালে ৯ ওয়ানডের ৭ ইনিংসে ব্যাট হাতে করেন ৪২৫ রান। গড় ১০৬.২৫ ও স্ট্রাইক রেট ১২০.০৫। একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফিফটি করেন চারটি।
বছরে প্রথম তিন ম্যাচেই তিনি টানা ফিফটি (৭৪*, ৮০, ৫০*) করেন পাল্লেকেলেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। পরে দেশের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে সুযোগ পেয়ে করেন ৫৪।
ডিসেম্বরে দেশের মাটিতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেন ৮০ বলে ১১৩ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস।
চামারি আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক ২০২৪ সালে ৯ ইনিংসে ৬৫.৪২ গড় ও ১০১.১০ স্ট্রাইক রেটে করেন ৪৫৮ রান। একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ফিফটি করেন দুটি।
এপ্রিলে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩০১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৩৯ বলে অপরাজিত ১৯৫ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। নারী ওয়ানডের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে তিনশ রান তাড়ায় জয়ের কীর্তি গড়ে শ্রীলঙ্কা।
বছরে অফ স্পিনে ওভারপ্রতি ৪.৬১ করে রান দিয়ে তিনি উইকেট নেন ৯টি।
স্মৃতি মান্ধানা (ভারত)
এই ওপেনার ২০২৪ সালে ১২ ওয়ানডে ইনিংসে ৭৪৩ রান করেন ৬১.৯১ গড় ও ৯৬.৯৯ স্ট্রাইক রেটে। একটি উইকেটও নেন তিনি।
প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে উইমেন’স ওয়ানডেতে এক পঞ্জিকাবর্ষে চারটি সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি এই বছর। এছাড়া দুটি ম্যাচে আউট হন নব্বইয়ের ঘরে।
জুনে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেন তিনি দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। অক্টোবরে দেশেই আরেকটি সেঞ্চুরি করেন নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। ডিসেম্বরে তিন অঙ্কের দেখা পান অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থে।
অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড (অস্ট্রেলিয়া)
এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ২০২৪ সালে ব্যাটিংয়ে ৯ ইনিংসে ৫২.৭১ গড় ও ১০০.২৭ স্ট্রাইক রেটে করেন ৩৬৯ রান। বোলিংয়ে ১০ ইনিংসে ওভারপ্রতি ৪.১৯ করে রান দিয়ে উইকেট নেন ১৩টি।
টানা দুটি সেঞ্চুরি করেন তিনি ভিন্ন দুটি প্রতিপক্ষের সঙ্গে। পার্থে ভারতের বিপক্ষে ১১০ রানের পর ওয়েলিংটনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন অপরাজিত ১০৫।
লরা উলভার্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এই বছর ১২ ইনিংসে ৬৯৭ রান করেন ৮৭.১২ গড় ও ৮৭.৩৪ স্ট্রাইক রেটে। সেঞ্চুরি ও ফিফটি সমান তিনটি করে।
এপ্রিলে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুটি ম্যাচে তিনি খেলেন ১১০ ও ১৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। জুনে ভারতের মাটিতে করেন অপরাজিত ১৩৫। তার এই তিন সেঞ্চুরির দুটিতে হেরে যায় দল।