নাঈমের বোলিংয়ে তার দল লিড পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তারা বিপাকে পড়েছে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায়।
Published : 28 Dec 2022, 05:26 PM
জাতীয় লিগে ছন্দহীন। বিসিএলের প্রথম ম্যাচে খরুচে। সব মিলিয়ে নাঈম হাসানকে সেভাবে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে এই অফ স্পিনার নিজের উপস্থিতির ছাপ রাখতে পারলেন কিছুটা। বিসিএলের ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে তিনি লিড এনে দিলেন দলকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য বিপাকে তার দল।
বিসিএলের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে কক্সবাজারে প্রথম ইনিংসে ৩৩৫ রানে অলআউট হয় বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল। ৮৯ রানে ৬ উইকেট নেন নাঈম।
১৫ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়ে পূর্বাঞ্চল। তৃতীয় দিন শেষে তাদের রান ৩ উইকেটে ৫৩।
ম্যাচে বাকি কেবল আর একদিন। ফলাফলের বাস্তবসম্মত সমীকরণে ড্র যেমন আছে, তেমনি পরাজয়ের শঙ্কাও আছে পূর্বাঞ্চলের। দক্ষিণাঞ্চল বলা যায় অনেকটাই নিরাপদ।
২ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে দিন শুরু করে দক্ষিণাঞ্চল। ২৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা ফজলে মাহমুদ চতুর্থ ওভারেই বিদায় নেন আর চার রান যোগ করে। সুমন খানের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে কিপারের কাছে ক্যাচ দেন দক্ষিণাঞ্চল অধিনায়ক।
আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান পিনাক ঘোষ ফিফটি পূরণ করেন ১৫৬ বল খেলে। মার্শাল আইয়ুবের সঙ্গে জুটিও গড়ে ওঠে তার।
পিনাককে ৭৮ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙে দিনের শিকার শুরু করেন নাঈম। রাউন্ড দা উইকেটে করা সোজা ডেলিভারি পিনাকের ডিফেন্স ফাঁকি দিয়ে লাগে প্যাডে।
মার্শাল ৪০ রানে বিদায় নেন মোহাম্মদ আশরাফুলের ফ্লাইটেড একটি টার্নিং ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে। একটু পর ইরফান শুক্কুরকে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড করে দেন নাঈম।
পূর্বাঞ্চল তখন বড় লিডের আশায়। কিন্তু সপ্তম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন নাহিদুল ইসলাম ও মইন খান। দুজনে যোগ করেন ৮৫ রান।
৩৪ রান করে নাহিদুল বোল্ড হন নাঈমের বলের লাইন মিস করে। লোয়ার অর্ডারে আরও দুটি উইকেট দ্রুত নিয়ে নেন নাঈম।
এবার জাতীয় লিগে তিন ম্যাচ খেলে তার উইকেট ছিল স্রেফ চারটি। বিসিএলের প্রথম রাউন্ডে ১১১ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। মাঝে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট দলেও জায়গা পাননি। গত মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে ৬ উইকেট নেওয়ার পর ছিটকে যান চোটের কারণে। এবার ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের তাকে দেখা যায় নেট বোলার হিসেবে প্রস্তুতিতে সহায়তা করতে।
দুঃসময় পেছনে ফেলে আবার নিজেকে খুঁজে পেলেন তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪৪ ম্যাচে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি ১৩ বার।
আটে নামা মইন অবশ্য ব্যবধান কমানোর লড়াই চালিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৫৯ রান করে তিনি শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন আশরাফুলের ঝুলিয়ে দেওয়া বল ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে।
১৫ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নামা পূর্বাঞ্চল শুরুতে হারায় ওপেনার রনি তালুকদারকে। ১ রান করে সুমন খানের অনেক বাইরের বলে চালিয়ে তিনি ধরা পড়েন দ্বিতীয় স্লিপে।
আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ আগ্রাসী শুরুর পর আউট হন অদ্ভুতভাবে। সুমন খানের শর্ট অব লেংথ বল পুল করতে গিয়ে শেষ মুহূর্তে থমকে যান। তার ব্যাটের ওপরের দিকে বল লেগে সহজ ক্যাচ যায় মিড উইকেটে।
এই পরিস্থিতির তোয়াক্কা না করে তিনে নামা পারভেজ হোসেন ইমন আউট হয়ে যান অফ স্পিনার মইনকে ছক্কা মারতে গিয়ে।
৪১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর শেষ সময়টুকু কাটিয়ে দেন শাহাদাত হোসেন ও জহুরুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ভালো জুটি গড়া দুই ব্যাটসম্যান শেষ দিনে আবার লড়বেন দলকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যেতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৩৫০
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১০৮.৩ ওভারে ৩৩৫ (আগের দিন ১৩৭/২) (পিনাক ৭৮, এনামুল ২৬, অমিত ৩৫, ফজলে মাহমুদ ৩২, মার্শাল ৪০, ইরফান ৮, নাহিদুল ৩৪, মইন ৫৯, সুমন ২, কাজী অনিক ৫, নাজমুল অপু ৭*; এনামুল ২২-৩-৯৪-১, হোসেন আলি ১২-২-৫৯-০, নাবিল ২৫-৪-৬১-১, নাঈম ৩৬-১২-৮৯-৬, আশরাফুল ১৩.৩-১-২৯-২)
ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ২য় ইনিংস: ১৫ ওভারে ৫৩/৩ (নাঈম শেখ ২৭, রনি ১, পারভেজ ৯, শাহাদাত ১৩*, জহুরুল ৩*; নাহিদুল ১-০-৯-০, সুমন ৬-০-২৫-২, নাজমুল অপু ৪-১-৫-০, মইন ৩-০-১২-১, কাজী অনিক ১-০-২-০)