গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের গড়া রেকর্ড গুঁড়িয়ে ৩৪৯ রানের ইনিংস গড়েছে ভারতের ঘরোয়া দল বারোদা।
Published : 05 Dec 2024, 03:14 PM
টি-টোয়েন্টির ময়দানে কদিন আগেই জিম্বাবুয়ের গড়া দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংসের বিশ্বরেকর্ড দুই মাসও টিকল না। সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে রানের বন্যা ছুটিয়ে, ভানু পানিয়ার তাণ্ডবে গত অক্টোবরে গড়া রেকর্ডটি ভেঙে দিয়েছে বারোদা।
ভারতের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টে বৃহস্পতিবার পানুর খুনে মানসিকতা এবং তার সতীর্থদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে বল ফেলারই জায়গা পাচ্ছিল না সিকিমের বোলাররা।
চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে ৫ উইকেটে ৩৪৯ রান করে বারোদা। ভেঙে দেয় গত ২৩ অক্টোবর আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আফ্রিকার উপ-আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গাম্বিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের ৩৪৪ রানের রেকর্ড।
অবিশ্বাস্য এই ইনিংস গড়ার পথে ছক্কা হাঁকানোর দিকেই বেশি মনোযোগ ছিল বারোদার ব্যাটসম্যানদের; ৩৭টি ছক্কা মেরেছেন তারা, সেখানে চার অর্ধেকেরও কম, মাত্র ১৮টি।
এই সংস্করণে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড এটি। আগের রেকর্ড ছিল গাম্বিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের ২৭ ছক্কা।
সিকিমের বোলারদের ওপর কতটা ঝড় বইয়ে গেছে, তার একটা প্রমাণ মেলে বারোদার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিংয়ের ধরন দেখলে। দলটির প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের মধ্যে চার জনই অন্তত পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন, অন্যজন ছাড়িয়েছেন ৪০; এবং তাদের কারোরই স্ট্রাইক রেট আড়াইশর কম নয়!
ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে, দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন বারোদার দুই ওপেনার, শ্বাশওয়াত রাওয়াত ও আভিমান্যুসিং রাজপুত। তাদের তাণ্ডবে পাঁচ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ওঠে ৯২ রান।
এই দুজনের মধ্যে একটু বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন আভিমান্যুসিং। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে তার বিদায়েই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ৪টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১৭ বলে ৫৩ রান করেন তিনি।
উইকেট পতনের এক বল পরই দলীয় স্কোর ১০০ ছুঁয়ে ফেলে বারোদা। গড়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের পর দ্বিতীয় ভারতীয় দল হিসেবে পাওয়ার প্লেতে দলীয় স্কোর ১০০ ছোঁয়ার কীর্তি।
গত আইপিএলে হায়দরাবাদের হয়ে আভিশেক শার্মা ও ট্রাভিস হেড এই সময়ে ১২৫ রান তুলেছিলেন, টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে পাওয়ার প্লেতে যা সর্বোচ্চ স্কোর।
সতীর্থের বিদায়ের পর টিকতে পারেননি রাওয়াতও; ৪টি করে চার ও ছক্কায় ১৬ বলে ৪৩ রান করে একই ওভাবের শেষ বলে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
দুই ওপেনার ফেরার পরও রানের গতি কমেনি একটুও। পানিয়া ও শিভালিক শার্মার ৯৪ রানের জুটি ভাঙার পর রান তোলায় যোগ দেন ভিষ্ণু সোলাঙ্কি। ১৭.২ ওভারেই বারোদার স্কোর ছাপিয়ে যায় ৩০০, প্রথম কোনো ভারতীয় দল হিসেবে তা করতে পারল কেউ।
পানিয়া ২০ বলে পঞ্চাশ ও ৪২ বলে শতক ছুঁয়ে, শেষ পর্যন্ত ৫১ বলে ১৩৪ রান করে অপরাজিত থাকেন; ইনিংসে তিনি ১৫টি ছক্কার পাশে পাঁচটি চার মারেন।
বারোদার হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডও নতুন করে লিখেছেন পানিয়া, ভেঙে দিয়েছেন দিপক হুডার আগের ৯ ছক্কার রেকর্ড। এছাড়া দিপক হুডার ১০৮ ছাপিয়ে বারোদার জার্সিতে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ডটিও নিজের করে নিলেন পানিয়া।
দলকে রানের পাহাড়ে তুলে নিতে পানিয়ার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যান শিভালিক ও সোলাঙ্কি। শিভালিক ১৭ বলে ৩টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৫৫ রান করেন, সর্বোচ্চ ৩২৩.৫২ স্ট্রাইক রেটে। আর সোলাঙ্কি ১৬ বলে ২টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৫০ রান করেন, ৩১২.৫০ স্ট্রাইক রেটে।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় স্কোরে শতরানও ছুঁতে পারেনি সিকিম। ৭ উইকেটে ৮৬ রান পর্যন্ত যেতে পারে তারা।
২৬৩ রানের জয়ও বারোদার নতুন এক রেকর্ড। রানের হিসেবে এর আগে তাদের সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়টি ছিল গোয়ার বিপক্ষে, ৭২ রানে।
আরও পড়ুন