চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
‘এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি ভারত কেন পাঁচ স্পিনার নিয়ে দল সাজিয়েছে’, বললেন নাসের হুসেইন।
Published : 25 Feb 2025, 10:36 PM
টুর্নামেন্টে অন্যান্য দলকে যেখানে ছুটে যেতে হচ্ছে এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে, এক দেশ থেকে আরেক দেশে, সেখানে ভারত আছে একই জায়গায়। গোটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই ভারতের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন। সবগুলো ম্যাচ খেলছে তারা দুবাইয়ে। তাদেরকে যা বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে বলে মনে করেন সাবেক দুই ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইন ও মাইকেল আথারটন।
আট দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান। কিন্তু নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে প্রতিবেশী দেশটিতে গিয়ে খেলতে রাজি হয়নি ভারত। যে কারণে হাইব্রিড মডেলে হচ্ছে আইসিসি টুর্নামেন্টটি। ভারতের সব ম্যাচ হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে হারিয়ে এরই মধ্যে সেমি-ফাইনালে পৌঁছে গেছে রোহিত শার্মার দল। শেষ চারে বটেই, ফাইনালে উঠলেও একই মাঠে খেলবে তারা।
সোমবার স্কাই স্পোর্টস পডকাস্টে নাসের হুসেইনের সঙ্গে আলোচনায় ভারতের একই মাঠে খেলার সুবিধার কথা তুলে ধরেন আথারটন।
“দুবাইয়ে খেলায় ভারতের সুবিধা কী, শুধু দুবাইয়ে খেলা? আমার কাছে সুবিধাটা পরিমাপ করা কঠিন, তবে নিঃসন্দেহে এটা সুবিধা। তারা স্রেফ একটি ভেন্যুতে খেলছে। তাদের এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যুতে বা এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করতে হচ্ছে না, অন্যান্য অনেক দলের তা করতে হচ্ছে।”
“তাই দল নির্বাচনের জন্য তারা পুরোপুরি দুবাইয়ের কন্ডিশনে মনোযোগ দিতে পারছে। তারা যখন সেমি-ফাইনাল খেলবে, তারা জানে যে কোথায় খেলবে। আমার কাছে এটা অনস্বীকার্য সুবিধা বলে মনে হচ্ছে। তবে, কত বড় সুবিধা তা মাপা একটু কঠিন।”
ভারত যে সুবিধা পাচ্ছে, সেটা মনে করেন হুসেইনও।
“এটা একটা সুবিধা। টুর্নামেন্টের সেরা দলের জন্য সেই সুবিধাটা... একদিন একটি টুইট দেখছিলাম: পাকিস্তান- আয়োজক দেশ, ভারত- ঘরের মাঠের সুবিধা।”
পরে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান।
“তারা (ভারত) এক জায়গায়। তারা এক হোটেলে। তাদের ভ্রমণ করতে হচ্ছে না। তারা এক ড্রেসিং রুমে। তারা পিচ সম্পর্কে জানে। সেই পিচের জন্যই তারা দল বেছে নিয়েছে। যখন তারা দল নির্বাচন করেছে, তখন তারা খুব বিচক্ষণতা দেখিয়েছে। তারা হয়তো জানত, দুবাইয়ে পিচ কেমন হতে যাচ্ছে। তারা তাদের সব স্পিনারকে বেছে নিয়েছে। ভারতীয় মিডিয়ায় এটা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক হয়েছিল যে, কেন বাড়তি একজন পেসার নেওয়া হচ্ছে না? কেন সব স্পিনার? কেন, এখন আমরা তা দেখতে পাচ্ছি।”
দুবাইয়ের উইকেট কিছুটা মন্থর। ভারত প্রথম দুই ম্যাচে খেলিয়েছে বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদিপ ইয়াদাভ ও দুই স্পিনিং অলরাউন্ডার রাভিন্দ্রা জাদেজা ও আকসার প্যাটেলকে। এছাড়াও দলে আছেন রহস্য স্পিনার ভারুন চক্রবর্তি ও স্পিনিং অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দার।
অন্য দলগুলোর উদাহরণ দিতে দিয়ে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হুসেইন তুলে ধরলেন ইংল্যান্ডের কথা।
“অন্য দলগুলো তা করেনি। যেমনটা আমি বলেছি, ইংল্যান্ড যদি সেমি-ফাইনালে পৌঁছায়, তাহলে তাদের একজন স্পিনার আছে। ইংল্যান্ড টুর্নামেন্টের জন্য আদিল রাশিদকে তাদের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে নিয়ে এসেছিল, তাকে সহযোগিতা করছে পার্ট-টাইমাররা। তবে যখন ব্রাইডন কার্স (পেসার) চোট পেল, তখন তার জায়গায় তারা স্পিনার রেহান আহমেদকে নিল।”
পাকিস্তানে খেলা হচ্ছে লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে। এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে খেলতে গিয়ে অন্য দলগুলোকে একাদশ বাছাইয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে মনে করেন হুসেইন।
“অন্যান্য দলগুলোকে করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডির বিভিন্ন কন্ডিশনের জন্য একাদশ বেছে নিতে হবে এবং তারপর তাদের ভ্রমণ করতে হবে এবং সেই কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”
“এটা একটা সুবিধা (ভারতের), কিন্তু এছাড়া আর কী হতে পারত? আইসিসি, ভারত একবার পাকিস্তানে আসতে অস্বীকৃতি জানালে আর কী হতে পারে? ভারত-পাকিস্তান ছাড়া এমন টুর্নামেন্ট হতে পারে না, এটা হবে না। দুবাইয়েই হওয়ার কথা। তারা (ভারত) সেখানে ভালো ও স্বাচ্ছন্দ্যে আছে এটা জেনে যে, তারা হয়তো সেখানে ছয়টি ম্যাচ খেলবে এবং যদি সবগুলো জিততে পারে তাহলে তারা আরেকটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট জিতবে।”
স্বাগতিক পাকিস্তান ও বাংলাদেশের টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই।