আইসিসি অ্যাওয়ার্ডস ২০২৪
মেয়েদের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন চামারি আতাপাত্তু, লরা উলভার্ট, ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট ও অ্যামেলিয়া কার।
Published : 29 Dec 2024, 05:14 PM
ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা আর্শদিপ সিংয়ের সামনে দারুণ এক স্বীকৃতির হাতছানি। এই সংস্করণের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার। সেরার লড়াইয়ে আরও মনোনয়ন পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেড, পাকিস্তানের বাবর আজম ও জিম্বাবুয়ের সিকান্দার রাজা।
২০২৪ সালের সেরা পুরুষ ও নারী টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকা রোববার প্রকাশ করেছে আইসিসি। মেয়েদের বর্ষসেরার লড়াইয়ে জায়গা পেয়েছেন শ্রীলঙ্কার চামারি আতাপাত্তু, দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট, নিউ জিল্যান্ডের অ্যামেলিয়া কার ও আয়ারল্যান্ডের ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট।
গণমাধ্যম প্রতিনিধি, আইসিসি ভোটিং একাডেমি এবং সমর্থকদের ভোটে নির্বাচিত হবেন বিজয়ী। আইসিসির ওয়েবসাইটে ভোট দিতে পারবেন সমর্থকরা।
জানুয়ারির শেষ দিকে ঘোষণা করা হবে বিজয়ী।
আর্শদিপ সিং (ভারত)
২০২৪ দারুণ কেটেছে আর্শদিপের। দেশের হয়ে ১৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৩৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি সাড়ে ১৩ গড়ে। ৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে।
টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে আর্শদিপের ৩৬ উইকেট ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা। ২০২২ সালে ৩২ ম্যাচে ভুবনেশ্বরের নেওয়া ৩৭ উইকেট সবার ওপরে। সেবার ৩৩ উইকেট নিয়ে তৃতীয় ছিলেন আর্শদিপ।
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলে ভারত। দলটির সাফল্যের এই পথচলায় বড় ভূমিকা রাখেন আর্শদিপ। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত আসরে ৮ ম্যাচে ১৭ উইকেট নেন তিনি ১২.৬৪ গড়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে রোমাঞ্চকর ফাইনালে ২০ রানে ২ শিকার ধরেন আর্শদিপ। ১৯তম ওভারে স্রেফ ৪ রান দিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখেন তিনি। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি প্রোটিয়ারা, ভারত জয় পায় ৭ রানে।
সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুয়ে)
এ বছর জিম্বাবুয়ের হয়ে ২৪ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন রাজা। ২৮.৬৫ গড়ে করেছেন ৫৭৩ রান। ক্যারিয়ার সেরা ১৩৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি এই বছরই, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আফ্রিকার উপ-আঞ্চলিক বাছাইপর্বে গাম্বিয়ার বিপক্ষে।
পাশাপাশি স্পিন বোলিংয়ে নেন ২৪ উইকেট। রুয়ান্ডার বিপক্ষে গত অক্টোবরে ১৮ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি, যা টি-টোয়েন্টিতে তার সেরা বোলিং।
এনিয়ে টানা তৃতীয় বছর টি-টোয়েন্টির সেরা ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেলেন রাজা।
বাবর আজম (পাকিস্তান)
গত ১২ মাসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাবরের চেয়ে বেশি রান করতে পারেননি পাকিস্তানের আর কেউ। এবছর ২৪ টি-টোয়েন্টি খেলেন তিনি। ৬ ফিফটিতে ৩৩.৫৪ গড় ও ১৩৩.২১ স্ট্রাইক রেটে করেন ৭৩৮ রান।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড গড়ার দুয়ারে বাবর। ৪ হাজার ২৩১ রান নিয়ে তালিকায় শীর্ষে রোহিত শার্মা। বিশ্বকাপ জিতে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলা ভারতীয় ব্যাটসম্যানের চেয়ে স্রেফ ৮রান পিছিয়ে আছেন তিনি।
ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)
২০২৪ সালে ১৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন হেড। ৩৮.৫০ গড় ও ১৭৮.৪৭ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫৩৯ রান। এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়ান হেড; অস্ট্রেলিয়ান বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান ১৫৮.৩৮ গড়ে করেন ২৫৫ রান। আসরে তার চেয়ে বেশি রান করতে পারেন আর কেবল দুইজন।
চামারি আতাপাত্তু (শ্রীলঙ্কা)
এই বছর টি-টোয়েন্টিতে ২১ ম্যাচ খেলে দুই সেঞ্চুরি ও চার ফিফটিতে ৭২০ রান করেন আতাপাত্তু। মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
বল হাতেও বছর জুড়ে এই সংস্করণে সফল আতাপাত্তু। ১৬.৮ গড়ে নেন ২১ উইকেট, সেরা বোলিং ২৯ রানে ৪ উইকেট।
অ্যামেলিয়া কার (নিউ জিল্যান্ড)
নিউ জিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান রাখা অ্যামেলিয়া কার চলতি বছর এই সংস্করণে ১৮ ম্যাচ খেলেন। ২৪.১৮ গড়ে ৩৮৭ রান করেন তিনি। সঙ্গে ২৯ উইকেট নেন ১৫.৫৫ গড়ে, এক পঞ্জিকাবর্সে মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে যা নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৩৫ রান করার পাশাপাশি ১৫ উইকেট নেন অ্যামেলিয়া। তার ১৫ উইকেট মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রেকর্ড।
লরা উলভার্ট (দক্ষিণ আফ্রিকা)
বছরে ১৯ টি-টোয়েন্টিতে ৩৯.৫৮ গড়ে ৬৭৩ রান করেন উলভার্ট। ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটিও করেন তিনি এই বছর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনাল খেলার পথে রাখেন বড় ভূমিকা। আসরে তার ২২৩ রান সর্বোচ্চ।
ওর্লা প্রেন্ডারগাস্ট (আয়ারল্যান্ড)
আইরিশ অলরাউন্ডার প্রেন্ডারগাস্ট এ বছর ১৮ টি-টোয়েন্টি খেলে ৫৪৪ করেন ৩৬.২৬ গড়ে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। পেস বোলিংয়ে তার নেওয়া ২১ উইকেট মেয়েদের এই সংস্করণে এক পঞ্জিকাবর্ষে দেশটির রেকর্ড।