পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে ভারতের ওপর চটেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা।
Published : 12 Nov 2024, 12:59 PM
সংশয়টা সবসময় ছিলই। তবে কিছুটা আশাও ছিল। পাকিস্তানের ক্রিকেট মহলের ধারণা ছিল, এবার হয়তো পাকিস্তানে খেলতে আসতে পারে ভারত। শেষ পর্যন্ত সেই আশা ভেস্তে গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে ভারতের ওপর বেজায় চটেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। পাকিস্তানের সরকার ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) শক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তারা।
ভারতের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমে খবর চলে এসেছে, আগামী ফেব্রুযারি-মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানের না যাওয়ার কথা আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। পাকিস্তানের বোর্ডও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, আইসিসির কাছ থেকে চিঠি পেয়েছে তারা। পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পাকিস্তানের সরকারের পরামর্শের অপেক্ষায় আছে বোর্ড।
এশিয়া কাপের মতো ‘হাইব্রিড মডেল’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও দেখা যেতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমে এসেছে। ভারতের ম্যাচগুলি সেক্ষেত্রে হতে পারে শ্রীলঙ্কায় বা দুবাইয়ে। ভারত সেমি-ফাইনালে ও ফাইনালে উঠলে সেই ম্যাচগুলিও হতে পারে পাকিস্তানের বাইরে।
ভারত সেখানে খেলতে যাবে না ধারণা করে আগে থেকেই নানা উদ্যোগ এবং নানা জায়গায় ছাড় দেওয়ার কথা বলে আসছিল পিসিবি। এমনকি পাঞ্জাব থেকে ম্যাচের দিন গিয়ে ম্যাচ খেলে আবার সেদিনই ফিরে আসার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারত রাজি হয়নি কিছুতেই।
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মাদ হাফিজ এখন বুঝতে পারছেন, আশা করাটাই ছিল ভুল। অন্য সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ সেখানে যেতে পারলেও ভারত কেন পারছে না, সামাজিক মাধ্যমে সেই প্রশ্ন তুললেন সাবেক এই অলরাউন্ডার।
“চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে আসবে ভারত, এটা ছিল দিবাস্বপ্ন। এই ইভেন্ট আয়োজন করতে পাকিস্তান নিরাপদ ও প্রস্তুত। সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশকেই আতিথ্য দিচ্ছে পাকিস্তান, কিন্তু শুধু ভারতের জন্যই কোনোভাবে ‘অনিরাপদ’ রয়ে যাচ্ছে। পিসিবি ও সরকারের কাছ থেকে শক্ত ও চমকপ্রদ জবাবের অপেক্ষায় আছি।”
১৯৯৬ বিশ্বকাপে নিরাপত্তার শঙ্কায় শ্রীলঙ্কায় খেলতে যায়নি অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। সেই দুই ম্যাচে লঙ্কানদের জয়ী ঘোষণা করে পয়েন্ট দেওয়া হয়েছিল। এবারও তেমন কিছু করা হোক বলে দাবি জানিয়ে রাখলেন পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান বাসিত আলি।
“আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ১৯৯৬ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া দল শ্রীলঙ্কায় না যাওয়ায় দুই পয়েন্ট করে দেওয়া হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে। ভারত ও পাকিস্তানকে ভিন্ন গ্রুপে রাখার চেষ্টা করুন, আইসিসি মানবে না। অর্থের কারণে ভারত ও পাকিস্তানকে সবসময় এক গ্রুপেই রাখা হয়। এখন ‘হাইব্রিড মডেল’ যদি রাখা হয় এবং ভারতীয় দল পাকিস্তানে না আসে, তাহলে পাকিস্তানকে দুই পয়েন্ট দেওয়া হোক। আগেও এটা হয়েছে, এখন আবার করে দেখা হোক।”
খেলোয়াড়ি জীবনে স্টাইলিশ ও ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন বাসিত। এখন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে খোলামেলা মন্তব্য করে তিনি আলোচনার জন্ম দেন প্রায়ই। এই প্রসঙ্গেও যথারীতি আইসিসিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি।
“পাকিস্তানের উচিত সব ম্যাচই পাকিস্তানে খেলা। পাকিস্তানের কাছ থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিয়ে গিয়ে অন্য কোনো দেশে খেলানো হলে তাদের উচিত এই আসরে অংশগ্রহণ না করা। লোকে বলছে, পাকিস্তান অংশ না নিলে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। সাহস থাকলে পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ করে দেখাক! সবার ঘুম হারাম হয়ে যাবে।”