ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দেশের মাঠে লড়াই জমাতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।
Published : 09 Nov 2024, 12:44 AM
খুনে ব্যাটিংয়ে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করলেন সাঞ্জু স্যামসন। ভারত পেল দুইশ ছাড়ানো পুঁজি। পরে দুই স্পিনার ভারুন চক্রবর্তি ও রাভি বিষ্ণইয়ের দাপটে লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। বড় জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল সুরিয়াকুমার ইয়াদাভের দল।
চার ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতের জয় ৬১ রানে। ডারবানে শুক্রবার ২০২ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকদের ১৪১ রানে গুটিয়ে দেয় সফরকারীরা।
জয়ের নায়ক স্যামসন। ভারতের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই সংস্করণে টানা দুটি সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি, স্পর্শ করেন ভারতের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড। ১০ ছক্কা ও ৭ চারে ৫০ বলে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
আগের ম্যাচে গত মাসে হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৮ ছক্কা ও ১১ চারে ৪৭ বলে ১১১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
বল হাতে দুই লেগ স্পিনার ভারুন ২৫ রানে ও বিষ্ণ ২৮ রানে নেন ৩টি করে উইকেট।
বাংলাদেশ সিরিজ দিয়ে প্রায় তিন বছর পর এই সংস্করণে ফেরার পর ৪ ম্যাচে ৮ উইকেট নিলেন ৩৩ বছর বয়সী ভারুন।
গত জুনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েই শিরোপা উৎসব করেছিল ভারত। তারপর দুই দলের প্রথম দেখাতেও জয়ের স্বাদ পেল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে বলতে গেলে একাই টানেন স্যামসন। আরেক ওপেনার আভিশেক শার্মা আউট হয়ে যান ৮ বলে ৭ রান করে। তিনে নামা সুরিয়াকুমারকে এক প্রান্তে অনেকটা দর্শক বানিয়ে রেখে তাণ্ডব চালান স্যামসন।
পাওয়ার প্লেতে আসে ৫৬ রান। অষ্টম ওভারে নাবাইয়োমজি পিটারকে পরপর দুই ছক্কায় স্যামসন পঞ্চাশে পা রাখেন ২৭ বলে। পরের ওভারে একের পর এক ‘নো’ বল আর ওয়াইডে প্যাট্রিক ক্রুগারের ওভার শেষ করতে লাগে ১১ বল!
ওই ওভারেই অধিনায়ক সুরিয়াকুমার ফেরেন ১৭ বলে ২১ রান করে। তিলাক ভার্মাকে সঙ্গী করে স্যামসন সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৪৭ বলে। সব মিলিয়ে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে টানা দুটি সেঞ্চুরি করলেন তিনি।
পঞ্চদশ ওভারে ট্রিস্টান স্টাবসের দারুণ ক্যাচে থামে স্যামসনের বিস্ফোরক ইনিংস। তার আগে তিলাক ফেরেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ বলে ৩৩ রান করে।
শেষ দিকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি হার্দিক পান্ডিয়া, রিঙ্কু সিংরা। দলের সংগ্রহও তাই আরও বড় হয়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৩৭ রানও দেন জেরল্ড কুটসিয়া। অভিষেকে ২ ওভারে ২৭ রান খরচ করেন আন্দিলে সিমেলানে। অন্যদের খরুচের বোলিংয়ের মাঝেও ৪ ওভারে ২৪ রান দেন মার্কো ইয়ানসেন।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ার প্লের মধ্যেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান রায়ান রিকেলটন, মার্করাম ও স্টাবসকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
চতুর্থ উইকেটে চেষ্টা করেন হাইনরিখ ক্লসেন ও ডেভিড মিলার। তবে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি দুজনের কেউই। ৪২ রানের জুটি গড়তে তারা বল খেলেন ৩৭টি। একই ওভারে দুজনকেই বিদায় করেন ভারুন।
২২ বলে ২৫ রান করেন ক্লসেন, ২২ বলে ১৮ রান করেন মিলার।
একই ওভারে দুই শিকার ধরেন বিষ্ণইও। তৃতীয় উইকেটের স্বাদ পান তিনি কোটার শেষ বলে।
কুটসিয়ার ৩ ছক্কায় ১১ বলে ২৩ রানের ক্যামিওতে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমাতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। কেশভ মহারাজের স্টাম্প এলোমেলো করে প্রোটিয়াদের ১৩ বল বাকি থাকতে থামিয়ে দেওয়া আভেশ খানের শিকার ২ উইকেট।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ আগামী রোববার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ২০২/৮ (স্যামসন ১০৭, আভিশেক ৭, সুরিয়াকুমার ২১, তিলাক ৩৩, পান্ডিয়া ২, রিঙ্কু ১১, আকসার ৭, আর্শদিপ ৫*, বিষ্ণই ১; ইয়ানসেন ৪-০-২৪-১, মার্করাম ১-০-১০-০, মহারাজ ৪-০-৩৪-১, কুটসিয়া ৪-০-৩৭-৩, পিটার ৩-০-৩৫-১, ক্রুগার ২-০-৩৫-১, সিপামলা ২-০-২৭-০)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৭.৫ ওভারে ১৪১ (মার্করাম ৮, রিকেলটন ২১, স্টাবস ১১, ক্লসেন ২৫, মিলার ১৮, ক্রুগার ১, ইয়ানসেন ১২, সিমেলানে ৬, কুটসিয়া ২৩, মহারাজ ৫, পিটার ৫*; আর্শদিপ ৩-০-২৫-১, আভেশ ২.৫-০-২৮-২, পান্ডিয়া ৩-০-২৭-০, ভারুন ৪-০-২৫-৩, বিষ্ণই ৪-০-২৮-৩, আকসার ১-০-৮-০)
ফল: ভারত ৬১ রানে জয়ী
সিরিজ: ৪ ম্যাচের ১-০তে এগিয়ে ভারত
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাঞ্জু স্যামসন
আরও পড়ুন