ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাওয়ার্ড আয়োজনে লরা উলভার্টের জয়জয়কার, ছেলেদের বিভাগে বর্ষসেরা পেস বোলিং অলরাউন্ডডার মার্কো ইয়ানসেন।
Published : 06 Sep 2024, 11:44 AM
সমর্থকদের ভোটে ছেলে-মেয়ে মিলিয়েই সেরার পুরস্কার দিয়ে শুরু। এরপর আরও চার দফায় উচ্চারিত হলো লরা উলভার্টের নাম। ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা অ্যানুয়াল অ্যাওয়ার্ডস আয়োজনে স্টাইলিশ এই ব্যাটারের জয়জয়কার। দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলের অধিনায়ক একাই জিতে নিলেন পাঁচ-পাঁচটি পুরস্কার!
উলভার্টের রাতে ছেলেদের বিভাগে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পেয়েছেন মার্কো ইয়ানসেন।
গত বছরের ১ মে থেকে এই বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়কে বিবেচনায় নেওয়া হয় এই পুরস্কারের জন্য। এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার পারফরম্যান্স তাই বিবেচিত হয়নি এবারের জন্য। এপ্রিল মাস অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও এই অনুষ্ঠান এত দেরিতে হওয়ার কারণ মূলত ক্রিকেট দলের ব্যস্ততা। মূল ক্রিকেটারদের সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের বাধ্যবাধকতা স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের।
সমর্থকদের ভোটে সেরা হওয়ার পর উলভার্ট জিতেছেন মেয়েদের বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটারের পুরস্কার। পরে বর্ষসেরা নারী ওয়ানডে ক্রিকেটার হয়েছে তিনি। ক্রিকেটারদের ভোটে সেরা নারী ক্রিকেটারও তিনিই।
এতগুলো পুরস্কারের পর সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি তো তার অবধারিতই ছিল- বর্ষসেরা নারী ক্রিকেটার।
পুরস্কারের জন্য বিবেচিত সময়ে ১১ টি-টোয়েন্টি ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে ৫৩০ রান করেছেন তিনি ৫৮.৮৮ গড় ও ১২৪.৪১ স্ট্রাইক রেটে। ওয়ানডেতে ১৫ ইনিংসে ৪ সেঞ্চুরিতে ৭৫৫ রান করেছেন ৬২.৯১ গড়ে। কোনো সংস্করণেই তার ধারেকাছে ছিলেন না কেউ।
এই সময়টায় দলের নিয়মিত অধিনায়কের দায়িত্বও নিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী ব্যাটার। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের একজন হিসেবে।
ছেলেদের বর্ষসেরায় ইয়ানসেনকে এগিয়ে নিয়েছে মূলত গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স। ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি ওই আসরে। পরে বক্সিং ডে টেস্টে ভারতের বিপক্ষে জয়ে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার।
এই সময়টায় তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৮ ম্যাচে ৩২ উইকেট নিয়েছেন ইয়ানসেন। রান করেছেন ৩৩.৮৩ গড়ে ৪০৬।
ছেলেদের সেরা ওয়ানডে ক্রিকেটার হয়েছেন কুইন্টন ডি কিক। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। বিশ্বকাপের পরে এই সংস্করণ থেকে অবসরে যাওয়া ক্রিকেটার এই সময়ে দলের সর্বোচ্চ ৮০৪ রান করেছেন ৫৩.৬৬ গড়ে।
ছেলেদের টি-টোয়েন্টির সেরা হয়েছেন রিজা হেনড্রিকস। এই সময়ে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলে ১২৯.৫০ স্ট্রাাইক রেটে ১৫৮ রান করেছেন এই ওপেনার।
পুরস্কারের জন্য বিবেচিত সময়টায় টেস্ট ম্যাচ হয়েছে স্রেফ চারটি। অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ফিফটির পর নিউ জিল্যান্ড সফরে খর্বশক্তির দলের হয়ে দুই টেস্টে ৮৭ ও ১১০ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটসম্যান ডেভিড বেডিংহ্যাম জিতেছেন বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কার।
ছেলেদের সেরা নবাগত ক্রিকেটার হয়েছেন বেডিংহ্যামই। মেয়েদের সেরা নবাগত ২১ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার এলিজ-মারি মার্ক্স।
ছেলেদের বিভাগে ক্রিকেটারদের ভোটে সেরা ক্রিকেটার কেশাভ মহারাজ। বিবেচিত সময়ে সব মিলিয়ে ২০ ম্যাচে ২৮ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। ভয়ঙ্কর একিলিস চোটের পরও সম্ভাব্য সময়ের প্রায় তিন মাস আগে ফিট হয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেওয়া বড় ভূমিকা রেখেছে তার এই স্বীকৃতি পাওয়ায়।
বর্ষসেরা ডেলিভারির পুরস্কার পেয়েছেন মারিজান ক্যাপ। গত ফেব্রুয়ারিতে দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে তিনি বোল্ড করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বেথ মুনিকে।
‘মাখায়া এনটিনি পাওয়ার অব ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড’ জিতেছেন মাসাবাতা ক্লাস। পেস বোলিং কিংবদন্তি এনটিনির মতোই যারা অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে জিতে ও নানা পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে লড়াই করে খেলেছে, তাদেরকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে এই পুরস্কার জিতলেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার।
২০১৩ সালে কন্যা সন্তানের মা হন ক্লাস। ‘সিঙ্গেল মাদার’ হিসেবে লড়াই করে ক্রিকেটের পথে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে তিন বছরের বিরতি নিতে বাধ্য হন। পরে নিজে মাকে পাশে পেয়ে আবার ক্রিকেটে ফিরতে পারেন তিনি, পারফরম্যান্স দিয়েই হয়ে ওঠেন দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন।
বাংলাদেশের সাবেক কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও জিতেছেন একটি পুরস্কার। ঘরোয়া ক্রিকেটে মেন’স ডিভিশন ওয়ান ‘কোচ অব দা ইয়ার’ হয়েছেন তিনি।