বাংলাদেশ সফরে ‘পানি টানার চেয়ে’ পিএসএল খেলাই ভালো বিলিংসের কাছে

বাংলাদেশ সফর বাদ দিয়ে পিএসএল বেছে নেওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই ইংলিশ কিপার-ব্যাটসম্যানের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2023, 06:24 AM
Updated : 8 March 2023, 06:24 AM

বিশ্বকাপের বছরে স্বেচ্ছায় জাতীয় দলে খেলা বাদ দেওয়া মানে নিশ্চিতভাবেই বড় সিদ্ধান্ত। তবু সেই ঝুঁকিই নিয়েছেন স্যাম বিলিংস। বাংলাদেশ সফরের ইংল্যান্ড দলে না থেকে তিনি বেছে নিয়েছেন পাকিস্তান সুপার লিগকে (পিএসএল)। তবে সেই সিদ্ধান্তের পেছনে কারণও তার কাছে পরিষ্কার। এখানে আক্ষেপের কোনো জায়গা দেখছেন না ইংলিশ কিপার-ব্যাটসম্যান।

বিলিংস একাই অবশ্য নন, ইংল্যান্ডের চলতি বাংলাদেশ সফরের দলে থাকতে পারতেন অ্যালেক্স হেলস, টাইমাল মিলস, লিয়াম ডসনও। কিন্তু তারা সবাই এই সিরিজ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে খেলছেন পিএসএলে। ইংল্যান্ডের বোর্ড ও টিম ম্যানেজমেন্টেরও অবশ্য আপত্তি নেই এতে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ও বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা পেয়েই নিজেদের পথ বেছে নিয়েছেন এই ক্রিকেটাররা।

তবে প্রশ্ন তো তার পরও থেকে যায়! দলে জায়গা পাকা নয় যাদের, তাদের জন্য এই সফর ভালো সুযোগ। এই বছর অক্টোবর-নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ভারতে। পাশের দেশ বাংলাদেশে প্রায় একই কন্ডিশনে ভালো করতে পারলে বিশ্বকাপ দলে দাবি জানানোর সুযোগ তো থাকেই!

পিএসএলে থাকা বিলিংসকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, এই সফরে না থাকায় আক্ষেপ আছে কি না, তার স্পষ্ট জবাব, “নাহ, নেই। এমনিতে সবাই চায় ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে, অবশ্যই চায়। তবে আমার বয়স এখন ৩১। ৮ বছর ধরে পানি টেনে আসছি (জাতীয় দলে)। এখন আমি স্রেফ ক্রিকেট খেলতে চাই, ক্রিকেট উপভোগ করতে চাই।”

বিলিংস জানালেন, দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে লম্বা সময় আলোচনা করেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার কথায় ইঙ্গিত, বাংলাদেশ সফরের দলে থাকলেও খেলার নিশ্চয়তা ছিল না তার।

“এমন নয় যে এই সফরে খেলতে আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তবে রবি কি (ইংল্যান্ড দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ও জস বাটলারের (অধিনায়ক) সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে আমার। আমার মনে হয়েছে, ক্যারিয়ারের যে পর্যায়ে আমি আছি, তাতে ক্রিকেট খেলা দরকার আমার।” 

“এই বয়সে আমার প্রয়োজন স্রেফ ক্রিকেট খেলা ও উপভোগ করা। পরিস্থিতি খুবই জটিল। কারণ, যে ছেলেরা বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই, তারা এই ধরনের লিগে (ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট) খেলা ও না খেলার ক্ষেত্রে ভয়ঙ্করভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।” 

২০১৫ সালে জুনে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর এখনও পর্যন্ত ৩ টেস্ট, ২৮ ওয়ানডে ও ৪৭ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন বিলিংস। খুব ধারাবাহিক তিনি হতে পারেননি। তবে ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে ওয়ানডেতে তার গড় ৪৭.৮৮, স্ট্রাইক রেট ৯১.১২। তার পরও একাদশে নিয়মিত জায়গা পাননি।

বিলিংসের মতে, দলে জায়গা পাওয়ার দাবি তিনি জানিয়েই রেখেছেন আগেই। বাংলাদেশ সফরে এসে বাইরে বসে থাকার চেয়ে তাই পিএসএল খেলাই তার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। দল থেকেও তিনি বার্তা পেয়েছেন, যে কোনো জায়গায় রান পেলেই তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।

“এই ইংল্যান্ড দলে জায়গা পাওয়া খুব কঠিন। অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গিয়েছিলাম আমি, মোটামুটি পারফর্ম করেছি। গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্স ধরলে ওয়ানডেতে আমার গড় প্রায় ৫০ ও স্ট্রাইক রেট ৯১। তাই সুনির্দিষ্ট সময় ধরে পরিসংখ্যান ভালো রাখার কথা বললে, আমার মনে হয় আমি তা করেছি।”

“হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস, লিয়াম লিভিংস্টোন, জনি বেয়ারস্টো (দলের ফেরার অপেক্ষায়) যখন আছে, কোনো নিশ্চয়তা নেই যে আমি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাব। আমার মনে হয়, বিবেচনায় থাকার মতো যথেষ্ট কিছু আমি করে ফেলেছি এবং আমার খেলার ধরনও উপমহাদেশের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে যায়। আমাকে যে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তা হলো, যদি রান করি, তা যে জায়গাতেই হোক না কেন, সেখান থেকেই দলে নিতে হবে।”