লক্ষ্য পূরণ না হলেও খুশি মিঠুন

ওয়েস্ট ইন্ডিজে আনঅফিসিয়াল টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টিই বেশি অধিনায়কের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2022, 05:22 AM
Updated : 14 August 2022, 05:22 AM

লক্ষ্য ছিল জয়। কিন্তু কন্ডিশনের কঠিন বাস্তবতায় পিষ্ট হয়েছে সেই চাওয়া। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃষ্টিও। খেলা যতটুকু হয়েছে, তাতে পারফরম্যান্সে ভালো-মন্দের মিশেল। তবু সব মিলিয়ে সন্তুষ্টিই বেশি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের।

সেন্ট লুসিয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের দুটি আনঅফিসিয়াল টেস্ট ম্যাচই ড্র হয়। বৃষ্টির কারণে কোনো ম্যাচেই দুই দলের প্রথম ইনিংসও শেষ হতে পারেনি।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ‘এ’ দল প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় মাত্র ১৬৭ রানে। ফিফটি করেন কেবল মিঠুন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দল ৫ উইকেটে ২৬৩ করার পর শেষ হয় ম্যাচ।

শনিবার শেষ হওয়া দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে একটু উন্নতি হয়। সেটি মূলত সাইফ হাসানের সৌজন্যে। ৮ ঘণ্টা ১৪ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ৩৪৮ বলে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। আর কেউ ফিফটি করতে পারেননি। ৯ উইকেটে ৩০০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দল।

ক্যারিবিয়ানরা এবার তেজনারাইন চন্দরপলের সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ২৭৭ রান তোলার পর ড্র হয় ম্যাচ।

ক্যারিবিয়ানদের তুলনায় টেস্ট ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলের ছিল অনেক বেশি। তবে মাঠের ক্রিকেটে সেই পার্থক্য খুব একটা চোখে পড়েনি। সিরিজ শেষে বিসিবির ভিডিও বার্তায় মিঠুন এজন্য দায় দিলেন প্রতিকূল কন্ডিশনকে।

“আসলে এটা তো আমাদের কাছে একদমই নতুন কন্ডিশন। এখানে সবকিছুই আমাদের জন্য ছিল বিরুদ্ধ। আমরা বাংলাদেশ ধেকে যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছিলাম, অবশ্যই আমাদের জেতার ইচ্ছে ছিল, তবে পরিবেশ ওইরকম ছিল না। তার পরও, সব মিলিয়ে বলব আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, তা পুরোপুরি পূরণ না হলেও আমি বেশ খুশি।”

বৃষ্টির কারণে দুই ম্যাচের একটিতেও জয়-পরাজয়ের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে মিঠুন এখানে ভূমিকা দেখছেন উইকেটেরও।

“আসলে সত্যি কথা বলতে, উইকেটের ওপরে অনেক কিছু নির্ভর করে, ফল হওয়া বা না হওয়া। আমার কাছে মনে হয়নি দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটে ফলাফল সম্ভব। বৃষ্টিতে যদিও পুরো খেলা হয়নি, তবে পুরো খেলা হলেও আমার মনে হয় ড্রয়ের দিকেই যেত।”

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কোচ মিজানুর রহমান বাবুল অবশ্য খুব একটা খুশি নন দলের পারফরম্যান্সে। ক্রিকেটাররা এখান থেকে শিখে জাতীয় দলে কাজে লাগাবেন বলে আশা তার।

“এটা সত্যি, যে ধরনের মান-মানসিকতা নিয়ে আমরা এখানে এসেছিলাম ও প্রস্তুতি যেরকম ছিল… (পারফরম্যান্স তেমন হয়নি)। এক দেশ থেকে আরেক দেশে গেলে যে সমস্যা হয়, শুরুতে সেসবের সম্মুখিন হয়েছি আমরা। উইকেটে ও অন্যান্য কিছুতে মানিয়ে নিতে পারিনি। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটারদের এসবে মানিয়ে নিতে হয়।”

“এগুলোই শিক্ষার ব্যাপার যে, ‘এ’ দলে এসব শিখে আমরা সিনিয়র দলে কাজে লাগাব। শুরুতে যে বাউন্স ছিল এখানে, সেটার সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে পারিনি। নিজেদের সহজাত খেলার মধ্যেই ছিলাম আমরা। যে কারণে ১৬৭ রানে অলআউট হয়েছে বা কম ওভার খেলেছি।”

তবে প্রথম ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দল যেভাবে লড়াই করেছে, তা ভালো লেগেছে কোচের।

“দ্বিতীয় ম্যাচেই ছেলেরা ভালো ব্যাট করেছে। ৩০০ রান করেছে, নতুন বল খেলার সমস্যাটা কেটেছে। সাদমান নতুন বল পার করে দিয়েছে। জয় বাজে সময়ে ছিল, এখানে রান মাত্র ১৭ করলেও নতুন বল কাটিয়ে দিয়েছে। এরপর সাইফ দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে, তিনশর ওপরে বল খেলে ১৪৭ রান করেছে। উন্নতির ধারাবাহিকতা দেখা গেছে। আমরা ইনিংস ঘোষণা করেছি, এটাও ভালো ব্যাপার ছিল।”

“বোলিংয়ে আমরা আগের ম্যাচের চেয়ে অনেক ভালো করেছি। মৃত্যুঞ্জয় নতুন বলে ভালো করেছে, ২ উইকেট নিয়েছে। আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যে, এই উইকেটে স্পিনারদের আমরা খেলাব। বাঁহাতি স্পিনার তানভিরকে আমরা খেলিয়েছি, যেন ভবিষ্যতে এরকম উইকেটে দরকার হলে সে খেলতে পারে। সে নিজের স্কিল দেখিয়েছে। উইকেট না পেলেও ভালো জায়গায় বল রেখেছে। নাঈম দুই ম্যাচেই অনেক ভালো করেছে।”

দ্বিতীয় ম্যাচে দলের ৫ উইকেটের ৩টিই নেন নাঈম। প্রথম ম্যাচে উইকেট ১টি পেলেও ৩৪ ওভারে রান দেন কেবল ৪৪।

দুই দল এখন খেলবে তিনটি একদিনের ম্যাচ। সেন্ট লুসিয়াতেই ম্যাচগুলি হবে মঙ্গলবার, বৃহস্পতিবার ও শনিবার।