‘এলিমিনেটর’ ম্যাচে ফ্লাড লাইটের সমস্যায় ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে আসার পর ম্যাচ হেরে বাদ পড়ায় প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অভিজ্ঞ ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার।
Published : 03 Oct 2024, 08:54 AM
বৃষ্টি-বাদলা কিংবা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ ছিল না। তারপরও খেলা বন্ধ থাকল প্রায় ঘণ্টা দুয়েক। এরপর সংক্ষিপ্ত হয়ে আসা ম্যাচের যে সমীকরণ দাঁড়াল, তাতে শেষ পর্যন্ত পাত্তাই পেল না ত্রিনবাগো নাইট রাইটার্স। সিপিএলের এলিমিনেটর ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা হেরে বাদ পড়ার পর প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দলটির অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল।
গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে এই ম্যাচে ত্রিনবাগো ১৯.১ ওভারে ১৬৮ রান তোলার পর ফ্লাড লাইটের সমস্যায় বন্ধ হয়ে যায় খেলা। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই ফ্লাড লাইটে সমস্যা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে ছয়টি ফ্লাডলাইট টাওয়ারের তিনটি বন্ধ হয়ে গেলে খেলা থামাতে বাধ্য হন আম্পায়াররা।
ত্রিনবাগোর নিকোলাস পুরান তখন ব্যাট করছিলেন ৬০ বলে ৯১ রানে। ক্রিজে ছিলেন রাসেলও। শেষ ওভারের প্রথম বলটি ছক্কা মারার পর ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৫৮ মিনিটে খেলা বন্ধ হয়। পরে ফ্লাডলাইট ঠিকঠাক হওয়ার পর খেলা শুরু হয় রাত ১০টা ৫১ মিনিটে। খেলা শুরু হওয়ার শেষ সময়ের বাকি তখন স্রেফ ১০ মিনিট। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে পাঁচ ওভারে বারবাডোজ রয়্যালসের লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ৬০ রানের।
সেই লক্ষ্য ছুঁতে খুব একটা সমস্যা হয়নি বারবাডোজের। সুনিল নারাইন যদিও প্রথম ওভারে বিদায় করে দেন কুইন্টন ডি কককে। তবে তিনে নেমে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে জিতিয়ে দেন ডি ককের স্বদেশি ডেভিড মিলার। পাঁচ ছক্কায় ১৭ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান। চার বল বাকি থাকতেই ৯ উইকেটে জিতে যায় বারবাডোজ।
শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন আট রানের, প্রথম দুই বলেই ছক্কা মেরে দেন মিলার।
পরে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ক্ষুব্ধ বার্তায় রাসেল বলেন, তাদের সম্ভাব্য জয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
“আমি এমন লোক নই যে ইন্টারনেটে এসে গলা ফাটাব। তবে এই বছর সিপিএলে আমার মনে হচ্ছে, আমরা ডাকাতির শিকার হয়েছি। লাইট পরিস্থিতি ছিল ‘**তি’ (ডাকাতি), খেলা শুরুর শেষ সময়ের ঠিক আগে লাইট ফেরা ছিল ‘**তি’( ডাকাতি) এবং এরপর ৩০ বলে ৬০ রান ছিল আরও বড় ‘**তি*( ডাকাতি)।”
ত্রিনবাগোর অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড অবশ্য অনেকটাই পরিমিত মন্তব্য করেন। বাস্তবতাই তুলে ধরেন তিনি ম্যাচ শেষে।
“সবাই একমত ছিল যে, ওই তিনটি ফ্লাডলাইট (টাওয়ার) ফিরে আসার আগে খেলা শুরু করলে তা বিপজ্জনক হতে পারত এবং লাইটের কারণে হোক বা যে কোনো কারণে, ক্রিকেট খেলতে গিয়ে কেউ চোট পেলে আমাদের প্রত্যেকের জন্য তা হতো আঘাত।”
“দিনশেষে, মাঠকর্মীরা ও দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেটাই করেছেন, খেলা শুরু করার জন্য যা করা দরকার ছিল। নিয়মের মধ্যে থেকে ম্যাচ শেষ করার পরিস্থিতি ছিল এবং শেষ পর্যন্ত এখন আমরা এখানে।”
টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষ করতে অন্তত পাঁচ ওভার খেলা হওয়ার মতো সময় থাকতে হয়। নিয়মের মধ্যে খেলা শুরু করাতেও আপত্তির কিছু দেখেননি পোলার্ড।
“নিয়মের মধ্যে থেকে খেলতে আমরা সবসময়ই প্রস্তুত। যদি বৃষ্টি নামত বা এরকম কিছু হতো, তাহলেও এই ধরনের অবস্থায় খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হতো আমাদের। কাজেই যা হওয়ার, তা হবেই। তারা ৬০ রানের লক্ষ্য পেয়েছে এবং মিলার দারুণ ব্যাট করেছে।”
বারবাডোজের অধিনায়ক ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েল অকপটেই বলেছেন, এই ম্যাচে তারা সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেয়েছেন এবং ত্রিনবাগোর জন্য পরিস্থিতি ছিল দুর্ভাগ্যজনক। পাঁচ ওভারে ৬০ রানের লক্ষ্য পাওয়ার পর ম্যাচ তাদের পক্ষে ছিল বলেও স্বীকার করে নেন পাওয়েল।
ম্যাচ শেষের বেশ পরে কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে জানায়, ভূগর্ভস্থ তার পুড়ে যাওয়ায় ফ্লাডলাইটের এই সমস্যা হয়েছিল।