বাংলাদেশের জাতীয় দল ছাড়াও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবেও কাজ করেছেন সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান।
Published : 29 Mar 2025, 02:34 PM
ক্রিকেট বিশ্বজুড়ে নানা দেশে নানা ভূমিকায় কাজ করে স্টুয়ার্ট ল এখন নতুন ঠিকানা বেছে নিয়েছেন নেপালে। এশিয়ার এই উঠতি ক্রিকেট শক্তির প্রধান কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ।
ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব নেপালের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছেন ল। গত মাসে নেপাল জানায়, কোচ মন্টি দেসাইয়ের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না তারা।
কোচ হিসেবে সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতা ব্যাপক। শ্রীলঙ্কার সহকারী কোচ ও প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করার পর বাংলাদেশের প্রধান কোচ হয়েছিলেন তিনি। তার কোচিংয়ে প্রথমবার বড় কোনো আসরের ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ ২০১২ এশিয়া কাপে। সেবার ব্যক্তিগত কারণে চলে যাওয়ায় এখানে দীর্ঘ হয়নি তার মেয়াদ।
পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তান দলে কাজ করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে তাকে দেখা গেছে নানা ভূমিকায়। জাতীয় দলের ব্যাটিং পরামর্শক, যুব দলের কোচ ছাড়াও সেখানকার সেন্টার অব এক্সিলেন্সে কাজ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশে পরে তিনি দুই দফায় ফিরেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলে কাজ করতে। ২০১৬ যুব বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন দলের পরামর্শক। ওই আসরে তৃতীয় হয় বাংলাদেশ, তখনও পর্যন্ত যুব বিশ্বকাপে যা ছিল তাদের সেরা সাফল্য। পরে ২০২২ সালে আবার যুব দলের মূল কোচ হয়ে ফেরেন তিনি। তার কোচিংয়ে গত বছর যুব বিশ্বকাপে খেলে বাংলাদেশ।
এরপর আবার বাংলাদেশের জাতীয় দলে কোচিং স্টাফে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন তিনি। ব্যাটিং কোচ হওয়ার আবেদন করেছিলেন, তার সম্ভাবনাও শোনা যাচ্ছিল বেশ। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাকে নেওয়া হয়নি। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন।
তার কোচিংয়ে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে ঐতিহাসিক সাফল্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে পা রাখে সুপার এইট পর্বে। এত সাফল্যের পরও নানা কারণে সেখানে সাত মাসের বেশি থাকা হয়নি তার।
এবার তার নতুন অধ্যায় শুরু নেপালে। আগামী জুনে স্কটল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়ে শুরু হবে তার আনুষ্ঠানিক যাত্রা, যেখানে অন্য দল নেদারল্যান্ডস।
৫৬ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেছেন ৫৪ ওয়ানডে ও ১টি টেস্ট। সেই দুর্ভাগা ক্রিকেটারদের একজন মনে করা হয় তাকে, যার জন্ম হয়েছিল ভুল সময়ে। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে ও ইংল্যান্ডের কাউন্টি ক্রিকেটে বছরের পর বছর রানের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দল এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, তার সুযোগ মেলেনি।
একটি মাত্র টেস্টে তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন স্টিভ ওয়াহ চোটে পড়ায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পার্থে সেই টেস্টে একমাত্র ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ৫৪ রান করে। পরের টেস্টে ওয়াহ চোট কাটিয়ে ফেরায় ল বাদ পড়ে যান। আর কখনও সুযোগ পাননি। ওয়ানডেতে তবু ১৯৯৬ বিশ্বকাপসহ কিছু ম্যাচ খেলতে পেরেছেন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭৯ সেঞ্চুরিতে ২৭ হাজারের বেশি রান তার, গড় ৫০.৫২। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২০ সেঞ্চুরিতে করেছেন প্রায় ১২ হাজার রান।