আইপিএল শেষ হওয়ার আগেই ইংলিশ ক্রিকেটারদের দেশের ফেরার কারণ ব্যাখ্যা করলেন অধিনায়ক জস বাটলার।
Published : 22 May 2024, 12:29 PM
বিশ্বকাপের আগে দলের সবাই মিলে একসঙ্গে সময় কাটানো, দল হিসেবে খেলা ও নিজেদের ভূমিকায় অভ্যস্ত হওয়ার ব্যাপারগুলিকে জরুরি মনে করেছেন ইংলিশ ক্রিকেটের নীতি-নির্ধারকরা। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে থাকা সবাইকে এজন্যই আইপিএল থেকে আগেভাগে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দেশে। ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলারের মতে, বিশ্বকাপের জন্য তাদের সেরা প্রস্তুতি এভাবেই সম্ভব।
ইংলিশ ক্রিকেটারদের আইপিএল থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তোলপাড় চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। অন্য বেশির ভাগ ক্রিকেট বোর্ডই তাদের ক্রিকেটারদের আইপিএলের শেষ পর্যন্ত থাকার অনুমতি দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ অন্য দেশগুলির ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি পর্বে দলের সঙ্গে থাকবেন না।
তবে ব্যতিক্রম ইংল্যান্ড। গ্রুপ পর্ব শেষ হওয়ার আগেই তারা দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে বিশ্বকাপ দলে থাকা তাদের আট ক্রিকেটারকে। তাদের মধ্যে বাটলার, ফিল সল্ট, রিস টপলি ও উইল জ্যাকসের দল জায়গা করে নিয়েছে প্লে অফে।
ইংলিশ ক্রিকেটারদের ফেরানো নিয়ে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো খুব খুশি নয় স্বাভাবিকভাবেই। পাঞ্জাব কিংসের ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট প্রধান সাঞ্জায় বাঙ্গার কয়েকদিন আগে দাবি করেছেন, গত ডিসেম্বরে নিলামের আগেই ইংল্যান্ডের বোর্ড জানিয়ে দিয়েছিল যে, তাদের সব ক্রিকেটার আইপিএলের শেষ পর্যন্ত খেলবেন। তবে আদতে ইংল্যান্ডের বোর্ডের একটা শর্তও ছিল, তারা বলেছিল, “ফিটনেস ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ বিবেচনায় নেওয়া সাপেক্ষে।”
মূলত পাকিস্তানের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতেই দেশে ফেরানো হয়েছে ইংলিশ ক্রিকেটারদের। ২০২২ সালের অগাস্ট থেকেই আইসিসির ভবিষ্যৎ সফরসূচির অংশ এই সিরিজ এবং গত বছরের জুলাইয়ে সিরিজটি চূড়ান্তও হয়ে যায়।
ইংল্যান্ডের ছেলেদের দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কি তাদের অবস্থান আগেই ব্যাখ্যা করেছেন এবং এটাও জানিয়েছিলেন তখন যে, এই সিদ্ধান্তের পেছনে অধিনায়ক বাটলারের বড় ভূমিকা আছে।
বাটলার নিজেও এবার তা খোলাসা করলেন। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মঙ্গলবার পরিষ্কার বলে দিলেন, তার কাছে দেশের খেলাই সবকিছুর ওপরে।
“দেখুন, ইংল্যান্ড অধিনায়ক হিসেবে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, আইপিএলের সময় কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হওয়া উচিত নয়। তবে এই খেলাগুলি (পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ) সূচিতে ছিল অনেক আগে থেকেই।”
“বিশ্বকাপের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথে, সবকিছুর ওপরে প্রাধান্য পাবে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা ও পারফর্ম করা। আমার মতে, এটিই সেরা প্রস্তুতি।”
অধিনায়কের সঙ্গে একমত ইংল্যান্ডের আরেক আইপিএল ক্রিকেটার স্যাম কারান। এবারের আইপিএলে আটটি ম্যাচ পাঞ্জাবকে নেতৃত্ব দেওয়া এই অলরাউন্ডার বললেন, বিশ্বকাপের আগে একসঙ্গে খেলাটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
“সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়ে গেছে এবং ফিরে আসাটাই সম্ভবত আমাদের জন্য ঠিক হয়েছে। প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিই কাউকে না কাউকে হারিয়েছে… যদি কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি দু-একজনকে রেখে দিত, আর কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি রাখতে পারত না, তাহলে তা অন্যায্য হতো।”
“আমার মনে হয়, জস (বাটলার), মটি (কোচ ম্যাথু মট) ও কিসি (রব কি) চেয়েছিলেন যেন আমরা সবাই এই সিরিজের জন্য ফিরে আসি। এটা খুব ভালোভাবেই বোধগম্য, কারণ আমরা দল হিসেবে খেলতে চেয়েছি এবং নিজেদের ভুমিকাগুলোয় অভ্যস্ত হয়ে চেয়েছি। টুর্নামেন্ট থেকে টুর্নামেন্টে যাওয়া এবং এরপর একসঙ্গে না খেলেই হুট করে বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে যাওয়াটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।”
পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের চার ম্যাচের সিরিজটি শুরু বুধবার।