সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক রশিদ লতিফের মতে, ছেলের জীবনে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন শচিন টেন্ডুলকার।
Published : 20 Apr 2023, 11:02 AM
অর্জুন টেন্ডুলকারের বোলিং অ্যাকশনে ঘাটতির জায়গা বেশ কিছু দেখতে পাচ্ছেন রশিদ লতিফ। তবে প্রতিভা আর সম্ভাবনার ছাপও তার মধ্যে দেখতে পাচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। শচিন টেন্ডুলকারের ছেলের জন্য কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সাবেক এই কিপার-ব্যাটসম্যানের মতে, অ্যাকশন নিয়ে কাজ করলে কয়েক বছরের মধ্যে ভালো ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারেন অর্জুন।
ছোট্ট ক্যারিয়ারে খুব দারুণ বা চমকপ্রদ কিছু এখনও করতে পারেননি অর্জুন টেন্ডুলকার। রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেকে বাবার মতো সেঞ্চুরি করলেও পরের ৬ ম্যাচে আর ফিফটিও করতে পারেননি। তার মূল কাজ যেটা, সেই বোলিংয়েও ভালো কোনো পারফরম্যান্স এখনও নেই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭ ম্যাচে তার উইকেট ১২টি।
তবে তাকে নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনা আইপিএলে অভিষেক হওয়ায়। এমন বিখ্যাত বাবার সন্তানকে নিয়ে চর্চা তো হওয়ারই কথা। শচিন টেন্ডুলকারের ছেলে আইপিএলে খেলছেন, আলোচনার ঝড় ওঠার জন্য যথেষ্ট এটুকুই। সেই আলোচনায় সম্পৃক্ত হয়েছেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাবেক অধিনায়ক লতিফও।
আইপিএলে এখনও পর্যন্ত দুটি ম্যাচ খেলেছেন অর্জুন। প্রথম ম্যাচে ২ ওভারে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। পরের ম্যাচে তার উন্নতি ছিল স্পষ্ট। এবার ২.৫ ওভারে ১৮ রান দিয়ে একটি উইকেটের স্বাদ পান তিনি। দুই ম্যাচেই নতুন বলে দুই দিকে সুইং করার দক্ষতা দেখাতে পেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে শেষের ওভারে তার ইয়র্কারগুলোও ছিল নজরকাড়া।
তবে লতিফ ঘাটতি দেখছেন অর্জুনের গতিতে। মূলত ১২৫ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে দেখা গেছে ২৩ বছর বয়সী এই বাঁহাতি পেসারকে। লতিফের মতে, অর্জুনের বোলিং অ্যাকশন আরেকটু মসৃণ ও শানিত করলে তার গতি বাড়তে পারে আরও।
“সে এখনও ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আছে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে তাকে। তার ‘অ্যালাইনমেন্ট’ খুব ভালো নয়, এজন্য বেশি গতি দিতে পারছে না। যদি ভালো কোনো বায়োমেকানিক্যাল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পায় সে, তাহলে তার গতি আরও বাড়তে পারে।”
“ব্যাপারটা খুব স্পর্শকাতর, কারণ একজন খেলোয়াড়কে এই পর্যায়ে কোচিং দিয়ে বদলে ফেলা সহজ নয়। শচিন নিজেও এটা করতে পারতেন, তবে তিনি হয়তো ঘরোয়া ক্রিকেটের ওপর নির্ভর করেছেন। বোলিংয়ের সময় ভিত্তিটা শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। সে যখন ল্যান্ড করছে, সে ভেতরে আসার বদলে বাইরের দিকে সরে যায়। তার ব্যালান্স খুব ভালো নয়, যা গতিতে প্রভাব ফেলছে।”
লতিফের মতে, অ্যাকশনের এই দিকগুলো শুধরে নিতে পারলে অর্জুন ভালো একজন অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে পারেন।
“আবারও বলছি, তার ক্যারিয়ারের মাত্র শুরু। তার গতি ১৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে (অ্যাকশন নিয়ে কাজ করলে), তার ব্যাটের হাতও ভালো। ২-৩ বছরের মধ্যে সে ভালো ক্রিকেটার হয়ে উঠতে পারে।”
বিখ্যাত বাবার সন্তান হওয়ার সুবিধা যেমন আছে, তেমনি যন্ত্রণাও কম নেই। প্রতি মুহূর্তে তার প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে নিত্যই। অর্জুনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে শচিন সেভাবে কাজ না করলেও সামনে তার মাঠের বাইরে জীবনে শচিনের ভূমিকা দেখতে চান লতিফ।
“সে যদি অন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলত, ধরুন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, তাহলে তার মানসিকতা হয়তো ভিন্ন হতো। এখন তার বাবাও আছে এই দলের ড্রেসিং রুমে (মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মেন্টর)। তার জীবনে (ক্রিকেটের বাইরে) বাবার ভূমিকা থাকতে হবে এখন।”