চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
২৪৯ রানের পুঁজি নিয়ে গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ৪৪ রানে জিতেছে রোহিত শার্মার দল।
Published : 02 Mar 2025, 10:31 PM
ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের একই সঙ্গে ব্যর্থ হওয়ার বিরল দিনে চমৎকার ইনিংস খেললেন শ্রেয়ার আইয়ার। মিডল অর্ডারের অন্যরাও টানলেন দলকে। ম্যাট হেনরির চমৎকার বোলিংয়ের পরও তাই আড়াইশ রানের লক্ষ্য দিতে পারল ভারত। সেটাকে যথেষ্ট প্রমাণ করলেন ভারুন চক্রবর্তী। কেন উইলিয়ামসনের লড়াকু ইনিংসের পরও দুর্দান্ত বোলিংয়ে এই রিস্ট স্পিনার দলকে এনে দিলেন জয়।
দুবাইয়ে রোববার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ৪৪ রানে জিতেছে ভারত। ২৪৯ রান করা দলটি নিউ জিল্যান্ডকে থামিয়ে দিয়েছে ২০৫ রানে।
টানা তিন জয়ে ‘এ’ গ্রুপ সেরা হলো ভারত। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দুবাইয়েই তারা খেলবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হওয়া নিউ জিল্যান্ড সেমি-ফাইনালে খেলবে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
ভিরাট কোহলির তিনশ ম্যাচের মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে ভারতের জয়ের নায়ক ভারুন। ক্যারিয়ারে কেবল দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা ৩৩ বছর বয়সী স্পিনারই সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা করেছেন কিউইদের। ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ভারুন জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
শেষটা দারুণভাবে রাঙানো ভারতের শুরুটা যদিও ভালো ছিল না। টানা দশম ওয়ানডেতে টস হারেন রোহিত, ১৩ ম্যাচে ভারত। তবে আগে ব্যাটিংয়ের চাওয়া পূরণ হয় মিচেল স্যান্টনার ফিল্ডিং নেওয়ায়।
হেনরি ও কাইল জেমিসন শুরুতেই নাড়িয়ে দেন ভারতকে। সাত ওভারের মধ্যে ৩০ রানে ৩ উইকেট তুলে নেয় নিউ জিল্যান্ড।
শুভমান গিলের পর কোহলিকে ফিরিয়ে দেন হেনরি। দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে কোহলির আউটে অবদান রাখেন গ্লেন ফিলিপস। দুই উইকেটের মাঝে রোহিতকে ফেরত পাঠান জেমিসন।
চাপে পড়ে যাওয়া দলকে এরপর টানেন শ্রেয়াস। আকসার প্যাটলের সঙ্গে ৯৮ ও লোকেশ রাহুলের সঙ্গে গড়েন ৪৪ রানের জুটি।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাওয়া শ্রেয়াসকে চমৎকার বাউন্সারে থামান উইল ও’রোক। ভারতীয় মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৯৮ বলে করেন ৭৯ রান।
তার বিদায়ের পর লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে দলকে আড়াইশ রানের কাছে নিয়ে যান হার্দিক পান্ডিয়া। দুই ছক্কা ও চারটি চারে এই অলরাউন্ডার ৪৫ বলে করেন ৪৫ রান।
শেষ দিকে আক্রমণে ফিরে রাভিন্দ্রা জাদেজা, পান্ডিয়া ও মোহাম্মদ শামিকে ফেরান হেনরি। ৪২ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনিই নিউ জিল্যান্ডের সফলতম বোলার।
রান তাড়ায় ভারতীয় স্পিন চতুষ্টয়ের সামনে উইলিয়ামসন ছাড়া নিউ জিল্যান্ডের আর কোনো ব্যাটসম্যান টিকতে পারেননি। অভিজ্ঞ এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ছাড়া দলের আর কেউ যেতে পারেননি ত্রিশ পর্যন্ত।
উইকেট শিকারের শুরুটা অবশ্য করেন একজন পেসার- পান্ডিয়া। তার বাউন্সারে র্যাম্প শটের চেষ্টায় ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দেন রাচিন রাভিন্দ্রা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা এই তরুণের দারুণ ক্যাচ নেন আকসার।
উইল ইয়াংকে দিয়ে শিকার শুরু করেন ভারুন। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন উইলিয়ামসন। আরেক প্রান্তে ভারতীয় স্পিনে নিয়মিত উইকেট হারায় নিউ জিল্যান্ড।
কিউইদের ব্যাটিং গভীরতা যথেষ্ট। তবে ভারুনের স্পিনে লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ততটা লড়াই করতে পারেনি দলটি। ফিলিপস, মাইকেল ব্রেসওয়েল, স্যান্টনার ও মিচেলকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূরণ করার সঙ্গে দলকে দারুণ জয় এনে দেন ভারুন।
তিনি ছাড়া এদিন কোটা পূরণ করেন কেবল আকসার। তিনিই নেন উইলিয়ামসনের দামি উইকেট। ছন্দে থাকা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৭ চারে ১২০ বলে খেলেন ৮১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস। তবে পারেননি কাজ শেষ করে আসতে, নিউ জিল্যান্ডও পারেনি হার এড়াতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৫০ ওভারে ২৪৯/৯ (রোহিত ১৫, গিল ২, কোহলি ১১, শ্রেয়াস ৭৯, আকসার ৪২, রাহুল ২৩, পান্ডিয়া ৪৫, জাদেজা ১৬, শামি ৫, কুলদিপ ১*; হেনরি ৮-০-৪২-৫, জেমিসন ৮-০-৩১-১, ও’রোক ৯-০-৪৭-১, স্যান্টনার ১০-১-৪১-১, ব্রেসওয়েল ৯-০-৫৬-০, রাভিন্দ্রা ৬-০-৩১-১)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৫.৩ ওভারে ২০৫ (ইয়াং ২২, রাভিন্দ্রা ৬, উইলিয়ামসন ৮১, মিচেল ১৭, ল্যাথাম ১৪, ফিলিপস ১২, ব্রেসওয়েল ২, স্যান্টনার ২৮, হেনরি ২, জেমিসন ৯*, ও’রোক ১; শামি ৪-০-১৫-০, পান্ডিয়া ৪-০-২২-১, আকসার ১০-০-৩২-১, ভারুন ১০-০-৪২-৫, কুলদিপ ৯.৩-০-৫৬-২, জাদেজা ৮-০-৩৬-১)
ফল: ভারত ৪৪ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ভারুন চক্রবর্তী