আইপিএল
Published : 21 May 2024, 11:33 PM
আসরজুড়ে রানের জোয়ার বইয়ে দেওয়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়ল প্লে অফে এসে। দুর্দান্ত এক স্পেলে তাদের টপ ও মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দিলেন মিচেল স্টার্ক। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না দলটি। ভেঙ্কাটেশ আইয়ার ও শ্রেয়াস আইয়ারের বিস্ফোরক জুটিতে অনায়াস জয়ে আইপিএলের ফাইনালে উঠল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে হায়দরাবাদের বিপক্ষে কলকাতার জয় ৮ উইকেটে।
জয়ের ভিত গড়া হয়ে যায় তাদের বোলিংয়েই। হায়দরাবাদকে থামিয়ে দেয় তারা ১৫৯ রানে।
৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে কলকাতার সফলতম বোলার আইপিএল ইতিহাসে নিলামে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার স্টার্ক। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন এই অস্ট্রেলিয়ান পেসার।
ভেঙ্কাটেশ ও শ্রেয়াসের ঝড়ো ফিফটিতে সহজ লক্ষ্য কলকাতা ছুঁয়ে ফেলে ৩৮ বল বাকি থাকতেই।
৫ চার ও ৪ ছক্কায় ২৪ বলে ৫৮ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন অধিনায়ক শ্রেয়াস। ২৮ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন ভেঙ্কাটেশ। তাদের অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯৭ রান আসে ৪৪ বলে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দুই ওভারেই বিস্ফোরক দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও আভিষেক শার্মাকে হারায় হায়দরাবাদ। ম্যাচের দ্বিতীয় বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে হেডকে বোল্ড করে দেন স্টার্ক।
সব সংস্করণ মিলিয়ে এই নিয়ে পাঁচবার স্টার্কের বলে আউট হলেন হেড। এর মধ্যে চারবারই তিনি ফিরলেন শূন্য রানে।
দ্বিতীয় ওভারে বৈভব আরোরার বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আভিষেক। চলতি আসরে এই প্রথম কোনো ম্যাচে হায়দরাবাদের দুই ওপেনারই ফিরলেন দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে।
স্টার্ক পরের ওভারে রাহুল ত্রিপাঠির উইকেটও পেতে পারতেন, যদি এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ার পর রিভিউ নিত হায়দরাবাদ। ৩৪ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসার নিজের পরের ওভারের শেষ দুই বলে নিতিশ রেড্ডি ও শাহবাজ আহমেদকে ফিরিয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা।
৫ ওভারে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। স্টার্কের বোলিং ফিগার তখন ৩-০-২২-৩।
সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন ত্রিপাঠি ও হাইনরিখ ক্লসেন। দুজন গড়েন ৩৭ বলে ৬২ রানের জুটি। ২১ বলে ৩২ রান করা ক্লসেনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ভারুন চক্রবর্তী। ১৪ রানে বেঁচে যাওয়া ত্রিপাঠি ৩৫ বলে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন ৭ চার ও ১ ছক্কার সাহায্যে।
এরপর দ্রুত আরও তিন জনের বিদায়ে হায়দরাবাদের স্কোর হয়ে যায় ৯ উইকেটে ১২৬। সেখান থেকে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের ২৪ বলে ৩০ রানের ক্যামিওতে ১৫৯ পর্যন্ত যেতে পারে তারা।
হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা নিয়ে ১৯তম ওভার শুরু করা স্টার্কের প্রথম বল ঠেকিয়ে দেন কামিন্স। ওভারের শেষ দুই বলে তিনি মারেন ছক্কা ও চার। তাতে স্টার্কের বোলিং ফিগারটা বিবর্ণ হয়ে যায় কিছুটা।
কলকাতার হয়ে বোলিং করা ছয় জনই পান অন্তত একটি করে উইকেট। ৪ ওভারে ২৬ রানে ২ উইকেট নেন লেগ স্পিনার ভারুন।
মাঝারি লক্ষ্যে কলকাতাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন রাহমানউল্লাহ গুরবাজ। ১৪ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৩ রান করে ফেরেন আফগান ব্যাটসম্যান। আরেক ওপেনার সুনিল নারাইন করেন ১৬ বলে ২১।
বাকিটা সারেন ভেঙ্কাটেশ ও শ্রেয়াস। ভেঙ্কাটেশ ফিফটি করেন ২৮ বলে। দুবার জীবন পাওয়া শ্রেয়াস টানা চার বলে হেডকে একটি চার ও তিনটি ছক্কায় ইতি টেন দেন ম্যাচের।
ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ অবশ্য পাচ্ছে হায়দরাবাদ। এলিমিনেটরে রাজস্থান রয়্যালস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যে জয়ী দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ (হেড ০, আভিষেক ৩, ত্রিপাঠি ৫৫, নিতিশ ৯, শাহবাজ ০, ক্লসেন ৩২, সামাদ ১৬, সানভির ০, কামিন্স ৩০, ০, ভিজায়কান্ত ৭*; কামিন্স ৪-০-৩৪-৩, আরোরা ২-০-১৭-১, হার্শিত ৪-০-২৭-১, নারাইন ৪-০-৪০-১, রাসেল ১.৩-০-১৫-১, ভারুন ৪-০-২৬-২)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৩.৪ ওভারে ১৬৪/২ (গুরবাজ ২৩, নারাইন ২১, ভেঙ্কাটেশ ৫১*, শ্রেয়াস ৫৮*; ভুবনেশ্বর ৩-০-২৮-০, কামিন্স ৩-০-৩৮-১, নাটারাজান ৩-০-২২-১, ভিজায়কান্ত ২-০-২২-০, হেড ১.৪-০-৩২-০, নিতিশ ১-০-১৩-০)
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল স্টার্ক