আইপিএল
Published : 06 May 2025, 06:13 PM
সাত ইনিংসে মোট রান ৭৫, সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত ভিরাট কোহলির পারফরম্যান্স ছিল এমন বিবর্ণ। তাতে তার আত্মবিশ্বাস ঠেকেছিল তলানিতে। ব্যর্থতার জাল ছিঁড়ে সেই তিনিই জ্বলে উঠেছিলেন ফাইনালে। চমৎকার ইনিংস খেলে দলের জয়ে রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। কঠিন সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করে কোহলি বললেন, সেদিন সবকিছু যেন আপনাআপনি হয়ে গিয়েছিল।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে ছিলেন কোহলি। আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে রানের স্রোত বইয়ে ১৫ ইনিংসে ৭৪১ রান করে বৈশ্বিক আসরে পা রাখেন তিনি।
কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরু হতেই যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেন কোহলি। সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত সাত ম্যাচ খেলে পার্থক্য গড়ার মতো একটি ইনিংসও খেলতে পারেননি তিনি। ওই সাত ইনিংসে তার গড় ছিল ১০.৭১ ও স্ট্রাইক রেট ১০০।
কোহলিকে নিয়ে তখন ভারতীয় ক্রিকেটে চলছিল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। সবকিছুর জবাব তিনি দিয়েছিলেন ব্যাট হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ফাইনালে নির্বাচিত হয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়।
বারবাডোজে সেদিন টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় ভারত। প্রোটিয়াদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা চেপে ধরেছিল ভারতকে। কিন্তু কোহলির ব্যাটে শেষ পর্যন্ত লড়ার মতো সংগ্রহ গড়তে পারে তারা।
ইনিংস শুরু করতে নেমে কোহলি মুখোমুখি প্রথম পাঁচ বলের তিনটিতেই মারেন বাউন্ডারি। ২ ছক্কা ও ৬টি চারে ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
আকসার প্যাটেলের সঙ্গে তার ৭২ রানের জুটি ও শিভাম দুবের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটিতে ১৭৬ রান করে ভারত। পরে বোলারদের নৈপুণ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬৯ রানে থামিয়ে ৭ রানের জয় তুলে নেয় তারা। ঘরে তোলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর পডকাস্ট ‘বোল্ড অ্যান্ড বিয়ন্ড’-এ অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেন কোহলি। আলোচনার এক পর্যায়ে ফিরে যান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেই সময়টায়।
“আমি টুর্নামেন্ট জুড়ে রান করতে পারিনি এবং (দলের প্রতি) কৃতজ্ঞ যে, আমাকে আবার চাপের পরিস্থিতিতে ব্যাটিংয়ে পাঠানো হয়েছিল। সত্যি বলতে, কোনো আত্মবিশ্বাস ছাড়াই সেদিন ক্রিজে গিয়েছিলাম। এরপর সবকিছু সহজ হতে শুরু করল, (নিজের জোনে) তিনটি বল পেলাম, তিনটিতেই বাউন্ডারি মারলাম, তখন মনে হচ্ছিল, কী হচ্ছে? এমন দিন আসে যেদিন মনে হয়, রান করতে পারব না এবং তখনই হঠাৎ ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা দিনগুলোর একটির মতো সবকিছু দারুণভাবে হতে থাকে।”
“তখন এমন এক পরিস্থিতি সামনে এলো যখন দলের আমাকে প্রয়োজন এবং সেই সময় এমন পারফরম্যান্স করলাম। তখন নিজের মনে ভাবনা আসে, কীভাবে সম্ভব হলো? তখন বুঝতে পারলাম…প্রস্তুতিটা আমার হাতে। ফলাফল আমার হাতে নেই। আমাকে শুধু আমার সহজাত প্রবৃত্তির প্রতি সৎ থাকতে হবে। যদি আমাকে মারতে হয়, মারতে হবে। এটাই আমার একমাত্র দায়িত্ব। বল কোথায় যাবে, পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কীভাবে হবে-এই সবকিছু নির্ভর করে আরও অনেক কিছুর ওপর, কারণ এর সঙ্গে অন্যরাও জড়িত। এটাই আমরা ভুলে যাই।”
বিশ্বকাপ জয়ের দিনই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন ভারতের হয়ে ১২৫ ম্যাচ খেলে চার হাজার ১৮৮ রান করা কোহলি।