Published : 05 Mar 2025, 09:01 AM
সংবাদ সম্মেলনে অনেক সময় বেশ কড়া জবাব দিয়ে থাকেন গৌতাম গাম্ভির। নিজের ভাবনার জোরাল উপস্থাপনার জন্য বরাবরই পরিচিতি আছে তার। এবার যেন নিজেকেও ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। দুবাইয়ের কন্ডিশনে ভারতের অভ্যস্ততার প্রসঙ্গ আসতেই যেন তেতে উঠলেন ভারতীয় কোচ। এক ভেন্যুতে খেলায় তার দল বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বলে যারা সমালোচনা করছে, তাদেরকে তীব্র ভাষায় পাল্টা আক্রমণ করলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠার পর ভারতের কোচের সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে ওঠে এই প্রসঙ্গ। যদিও সরাসরি বাড়তি সুবিধা পাওয়ার প্রশ্ন করা হয়নি। ভারতের বোলিং আক্রমণে স্পিনারদের আধিক্য নিয়েই জানতে চান ভারতীয় এক সংবাদকর্মী।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম দুই ম্যাচে তিন স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজায় ভারত। পরের দুই ম্যাচে একাদশে ছিল চার স্পিনার। প্রতি ম্যাচেই দলের জয়ে স্পিনারদের ছিল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। তাদের ১৫ জনের স্কোয়াডে বিশেষজ্ঞ স্পিনার মোট পাঁচজন।
দুবাইয়ের কন্ডিশন সম্পর্কে আগে থেকে ধারণা থাকায় স্পিনের জাল বিছানোর এই ছক করা হয়েছিল কি না, এই প্রশ্ন করা হলেই বেশ চটে যান গাম্ভির।
“প্রথম কথা হলো, এটা আমাদের জন্য ততটাই নিরপেক্ষ ভেন্যু, যতটা অন্যদের জন্য অন্য ভেন্যু। আমার তো মনেও নেই, সবশেষ কবে কোন টুর্নামেন্টে আমরা এখানে খেলেছিলাম!”
“সত্যি বলতে, এই ধরনের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। আমরা দুজন ফ্রন্ট লাইন স্পিনার খেলিয়েছি, বাকি দুজন অলরাউন্ডার। পাকিস্তানে খেললেও এটিই করতাম। স্পিনের জাল বিছিয়ে দেওয়ার কোনো ব্যাপার ছিল না। প্রথম দুই ম্যাচে তো স্রেফ একজন মাত্র ফ্রন্ট লাইন স্পিনার ছিল, পরের দুই ম্যাচে দুজন নিয়েছি।”
ফ্রন্ট লাইন স্পিনার বলতে গাম্ভির বুঝিয়েছেন কুলদিপ ইয়াদাভ ও ভারুন চক্রবর্তিকে। এছাড়া রাভিন্দ্রা জাদেজা ও আকসার প্যাটেলের মূল কাজ যদিও বোলিং, তবে দুজনকেই অলরাউন্ডার পরিচয়ের বাইরে অন্য কিছু বলতে চান না কোচ।
এই প্রসঙ্গে কোচ নিজে থেকেই টেনে আনলেন বাড়তি সুবিধা পাওয়ার প্রসঙ্গ। ভারতীয় দল পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার কারণেই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। ভারতই একমাত্র দল, সব ম্যাচ যারা খেলছে একই শহরে ও একই ভেন্যুতে। এমনকি স্বাগতিক পাকিস্তানকেও দুবাইয়ে গিয়ে খেলতে হয়েছে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি।
এটা নিয়ে টুর্নামেন্টজুড়েই তুমুল আলোচনা-সমালোচনা করছেন বর্তমান-সাবেক ক্রিকেটার, বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ ক্রিকেট অনুসারীদের অনেকেই।
এবার তাদের প্রতিই তোপ দাগলেন গাম্ভির।
“এই যে এত বিতর্ক চলছে যে, অন্যায্য সুবিধা এবং আরও নানা কিছু… কিসের অন্যায্য সুবিধা? এখনও পর্যন্ত তো আমরা এখানে (মূল মাঠে) একদিনও অনুশীলন করিনি। অনুশীলন তো আইসিসি একাডেমিতে করছি। ওখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে এখানকার কন্ডিশনের পার্থক্য ১৮০ ডিগ্রি! ওখানকার উইকেট ও এখানকার উইকেটের পার্থক্য আকাশ-পাতাল।”
“কিছু লোক সবসময়ই ছিচকাঁদুনে। তাদের উচিত পরিণত হওয়া। আমার মনে হয়, আমাদের কোনো অন্যায্য সুবিধা পাওয়া বা সেভাবে পরিকল্পনা করার মতো কিছু হয়নি।”
গাম্ভিরের এমন দাবি অবশ্য মিলছে না রোহিত শার্মার সঙ্গে। সেমি-ফাইনালের আগে ভারতীয় অধিনায়ক বলেছিলেন, দুবাইয়ে সব ম্যাচ খেলবেন জেনেই তারা সেভাবে পরিকল্পনা করেছেন, উইকেটের আচরণের খোঁজখবর নিয়েছেন, আইএল টি-টোয়েন্টি দেখে ধারণা নিয়েছেন এবং এই কারণেই প্রথম ঘোষিত দল থেকে ব্যাটসম্যান ইয়াসাসভি জয়সওয়ালকে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত দলে স্পিনার বাড়ানো হয়েছে ভারুনকে নিয়ে।
এছাড়া রোহিত এটিও বলেছিলেন, আইসিসি একাডেমিতে অনুশীলন উইকেটগুলো অনেকটা মূল মাঠের উইকেটের মতোই।