অনেক সময় অবশ্য সমালোচনা যৌক্তিক মনে হলে, সেটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন বলেও জানালেন ভারতের এই ব্যাটসম্যান।
Published : 01 Mar 2025, 09:39 AM
সেমি-ফাইনালে স্ট্রাইক রেট ছিল দুইশর কাছাকাছি। কিন্তু ফাইনালে স্ট্রাইক রেট মোটে ৬১.৬৮! ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ওই ইনিংসটির পর প্রবল সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল লোকেশ রাহুলকে, সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে বয়ে গিয়েছিল ট্রলের ঝড়। নানা সময়ে আরও অনেকবারই এমন অভিজ্ঞতা তার হয়েছে। ভারতের এই ব্যাটসম্যান বললেন, এখন তার এসব সয়ে গেছে।
শুধু রাহুলই নয়, এটা এখন বিশ্বজুড়ে সব ক্রীড়াবিদের বাস্তবতা। একটা সময় ছিল শুধু সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা। কিন্তু এখনকার ক্রীড়াবিদদের বাস্তবতা ভিন্ন। সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা, কাটাছেঁড়া, ট্রলের ঝড় ওঠে নিত্যই। সামাজিক মাধ্যম এখন মানুষের জীবনে এমনভাবে মিশে গেছে যে, এসব ট্রল থেকে ক্রীড়াবিদদের দূরে থাকা বা উপেক্ষা করা কঠিন। যে যার মতো করে চেষ্টা করেন এসবে মানিয়ে নিতে।
রাহুলকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি যে সমালোচনা আর ট্রল নানা সময়ে হয়েছে, বেশির ভাগই মূলত স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আহমেদাবাদে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গত বিশ্বকাপ ফাইনালে যেমন, ৬৬ রান করতে ১০৭ বল খেলেছিলেন তিনি। ভিরাট কোহলির সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েছিলেন ১০৯ বলে। সেখানে তার নিজের অবদান ছিল ৬৭ বলে ৩৭।
ব্যাটিংয়ের ধরনের কারণে নানা সময়েই তাকে সমালোচিত হতে হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাকে ‘স্বার্থপর’ তকমা দেওয়া হয়েছে অনেকবার।
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অবশ্য তেমন কিছুর সুযোগ এখনও তিনি দেননি। ভারতের দুই ম্যাচ একটিতে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ম্যাচ দলের জয়ে অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৪১ রান করে।
সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলা ভারত গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে রোববার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে। দুবাইয়ে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপ ফাইনালের সেই ইনিংসটির প্রসঙ্গ টেনেই রাহুলকে জিজ্ঞেস করা হলো ট্রল-সমালোচনা সামলানো নিয়ে।
রাহুল বললেন, অনেক কিছুই তিনি পাত্তা দেন না। তবে সংবাদমাধ্যমে কোনো সমালোচনাকে তার যৌক্তিক মনে হলে সেটাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন।
“এটা (ট্রল) বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। এসব দেখে, শুনে ও পড়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। হ্যাঁ, কখনও কখনও বসে ভাবি যে, এই সমালোচনা কতটা যৌক্তিক। ধরুন, আপনি কিছু একটা লিখলেন এবং সেখানে যদি ভালো কিছু তুলে ধরা হয়, কিংবা কেউ কিছু লিখলে বা বললে সেটাকে যদি যৌক্তিক মনে হয়… যদি ম্যাচের অবস্থার বিচারে, যে পরিস্থিতিতে আমি ইনিংসটি খেলেছি, যদি মনে হয় যে, ‘হ্যাঁ, আরেকটু দ্রুত খেলতে পারতাম’, তাহলে অবশ্যই পরবর্তী ট্রেনিং সেশনে এটা আমার ভাবনায় থাকবে, এটা নিয়ে কাজ করব এবং চেষ্টা করব উন্নতির।”
“এমন নয় যে, ম্যাচে নামার সময় ভাবার চেষ্টা করি স্ট্রাইক রেট ভালো করতে হবে কিংবা কোথায় কী লেখা বা বলা হচ্ছে, সেটা অনুযায়ী আমাকে খেলতে হবে। আমি চেষ্টা করি, দলের জন্য ও নিজের জন্য এই পরিস্থিতিতে কোনটা ভালো, সেভাবে খেলার চেষ্টা করি। অবশ্যই সবসময় আমি সঠিক হব না। কখনও কখনও ব্যর্থ হব, কখনও ম্যাচের পরিস্থিতি পড়তে ভুল করব এবং খেলাটির সৌন্দর্যই এটি। আমার কাছে ব্যাপারটি হলো, যদি উদ্দেশ্য যদি সঠিক থাকে, যদি মনে করি যে, ম্যাচ জয়ের সেরা পথ এটিই, তাহলে বাড়ি ফিরে শান্তিতে ঘুমাতে পারি। তবে হ্যাঁ, এসব অনক কিছুই আমি পড়ি এবং যৌক্তিক মনে হলে, তা বিবেচনা করি।”