বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমিকে ১৪৬ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড।
Published : 14 Mar 2024, 04:51 PM
শুরুতে ঝড় তুললেন সাব্বির হোসেন, পরে একই ছন্দে সমাপ্তি টানলেন জাকের আলি। আবাহনী লিমিটেড পেল সাড়ে তিনশ ছুঁইছুঁই স্কোর। রান তাড়ায় কোনো সম্ভাবনাই জাগাতে পারল না গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে ১৪৬ রানে জিতেছে আবাহনী। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় রাউন্ডে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৪৩ রান করে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
গাজী টায়ার্সের ইনিংসের ষোড়শ ওভারে বৃষ্টি নামলে নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০ ওভারে ৩১০ রান। ৯ উইকেটে ১৬৩ রানের বেশি করতে পারেনি প্রিমিয়ার লিগের নবাগত দলটি।
আরও একবার সম্ভাবনা জাগিয়েও সেঞ্চুরি করতে পারেননি সাব্বির। ৮০ বলে ৯৮ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। ১০ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতে। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ৫৯ বলে ৭১ রান করেন সাব্বির।
এছাড়া মাহমুদুল হাসান জয় ৭৩ ও জাকের খেলেন ৭৬ রানের অপরাজিত ইনিংস।
ব্রাদার্সের অভিষিক্ত পেসার ইকবাল হোসেন ৯ ওভারে ১০৪ রান খরচায় নেন ২ উইকেট। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটিই বাংলাদেশি কোনো বোলারের রান খরচের রেকর্ড। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১০ ওভারে ১০৪ রান দেন দিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।
অথচ ইকবালের হাত ধরেই ম্যাচের শুরুটা দারুণ করে গাজী টায়ার্স। দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ নাঈম শেখকে ফেরান গত জানুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে আসা পেসার।
তবে আবাহনীর বিপদ বাড়তে দেননি সাব্বির ও জয়। উল্টো বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলে এগিয়ে নেন ইনিংস। দুজন মিলে ১৬৭ বলে গড়েন ১৬৯ রানের জুটি। ৪২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে তিন অঙ্কের পথে এগোতে থাকেন সাব্বির।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি সেঞ্চুরি করতে। ইফতেখার হোসেনের সাদামাটা এক ডেলিভারিতে খোঁচা মেরে কট বিহাইন্ড হন ২৬ বছর বয়সী ওপেনার। পরে দলকে দুইশ পার করিয়ে ফেরেন জয়। ১০৫ বলের ইনিসে তিনি মারেন চারটি চার ও একটি ছক্কা।
আশরাফুল আলমের ওভারে পরপর তিন ছক্কায় বড় কিছুর আভাস দেন আফিফ হোসেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৬ বলে ২৯ রান করে তিনি ফেরেন ড্রেসিং রুমে। অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনও ফেরেন দ্রুত।
এরপর ঝড় তোলেন জাকের ও সাইফ উদ্দিন। বিশেষ করে তাণ্ডব চালান ইকবালের ওপর। শেষ ৩ ওভারে ৫২ রান খরচ করেন ১৭ বছর বয়সী পেসার। জাকের ও সাইফ উদ্দিনের জুটিতে স্রেফ ৩৭ বলে আসে ৮৩ রান।
২টি করে চার-ছক্কায় ১৫ বলে ২৯ রান করে আউট হন সাইফ। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৮ বলে ৩ চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা মারেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও ঝড় তোলা জাকের।
রান তাড়ায় শুরুতেই ইফতেখারের উইকেট হারায় গাজী টায়ার্স। দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন আশিকুর রহমান ও আশিক জামান। কিন্তু কমিয়ে খেলেন রানের গতি। ৪১ রান যোগ করতে তারা খেলেন ৮১ বল।
আশিকুর ২৯ ও আশিক ১৫ রান করে ফেরেন। পরে জুবারুল ইসলাম ও আশরাফুলও টিকতে পারেননি।
ষষ্ঠ উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন সাঈদ সরকার ও গাজী মোহাম্মদ তাহজিবুল ইসলাম। সাঈদ ২৮ রান করে আউট হন। অপরাজিত ইনিংসে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৭ বলে ৫৮ রান করেন তাহজিবুল। যা পরাজয়ের ব্যবধানই কমায় শুধু।
আবাহনীর পক্ষে ৩টি করে উইকেট নেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও মোসাদ্দেক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ৩৪৩/৭ (নাঈম ৭, সাব্বির ৯৮, জয় ৭৩, আফিফ ২৯, জাকের ৭৬*, মোসাদ্দেক ৫, সাইফ উদ্দিন ২৯, নাহিদুল ৬; মারুফ ৮-০-৬৫-২, ইকবাল ৯-০-১০৪-২, আরিদুল ৬-০-৩০-০, শামিম ১০-০-৪৪-১, সাঈদ ২-০-২২-০, ইফতেখার ১০-০-৩৯-২, আশরাফুল ৫-০-৩৫-০)
গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি: (লক্ষ্য ৪০ ওভারে ৩১০) ৪০ ওভারে ১৬৩/৯ (আশিকুর ২৯, ইফতেখার ০, আশিক ১৫, জুবারুল ৭, তাহজিবুল ৫৮*, আশরাফুল ২, সাঈদ ২৮, শামিম ১, ইকবাল ৫, মারুফ ৫*; সাইফ উদ্দিন ৫-০-২৮-১, খালেদ ৫-০-২৩-৩, তানভির ৭-১-৫০-১, নাহিদুল ৮-২-১৯-১, মোসাদ্দেক ৮-১-১৯-৩, রকিবুল ৭-০-২১-০)
ফল: ডাকওয়ার্থ লুইস স্টার্ন পদ্ধতিতে আবাহনী লিমিটেড ১৪৬ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাব্বির হোসেন