বিসিএলের তৃতীয় রাউন্ডের প্রথম দিনে দুই ম্যাচেই আধিপত্য দেখিয়েছে বোলাররা।
Published : 18 Dec 2023, 05:36 PM
সবুজ ঘাসের উইকেট। সহায়ক উইকেটে দারুণ বোলিং প্রদর্শনী মেলে ধরলেন পূর্বাঞ্চলের তিন পেসার আবু জায়েদ চৌধুরি, সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও রেজাউর রহমান রাজা। তাদের তোপে পড়ে উত্তরাঞ্চল গুটিয়ে গেলে একশ পেরিয়েই। পরে পারভেজ হোসেনের ফিফটিতে প্রথম দিনেই লিড নিল পূর্বাঞ্চল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) তৃতীয় রাউন্ডে সোমবার স্রেফ ১০৮ রানে অল আউট হয় উত্তরাঞ্চল।
প্রথম উইকেটটি আবু জায়েদ নেওয়ার পর ৪টি করে শিকার ধরেন খালেদ ও রাজা। রান আউট হন শেষ ব্যাটসম্যান।
উত্তরাঞ্চলের ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৬ রান করতে পারেন গত রাউন্ডের সেঞ্চুরিয়ান আবদুল্লাহ আল মামুন। আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে দুই অঙ্কে যেতে পারেননি জাতীয় টেস্ট দলের ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়।
দিন শেষে পূর্বাঞ্চলের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১২২ রান। ১৪ রানে এগিয়ে আছে তারা। ফিফটি করে অপরাজিত আছেন পারভেজ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় উত্তরাঞ্চল। আবু জায়েদের করা ম্যাচের দ্বিতীয় বলে চার মেরে পরের বলেই স্লিপে ধরা পড়েন জয়। পরের ওভারে খালেদের দারুণ ডেলিভারিতে তৃতীয় স্লিপেই ক্যাচ দেন আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন।
তৃতীয় উইকেটে ৪৩ রানের জুটি গড়েন আবদুল্লাহ ও আইচ মোল্লা। শেষ পর্যন্ত এটিই হয়ে থাকে ইনিংসের সেরা জুটি। আর কোনো জুটি ২০ রানও ছুঁতে পারেনি।
আইচকে এলবিডব্লিউ করে ওই জুটি ভাঙেন খালেদ। মামুনকে বোল্ড করে প্রথম উইকেটের দেখা পান রেজা। তাদের সামনে প্রিতম কুমার, আকবর আলিরাও পরে দাঁড়াতে পারেননি।
ব্যাটিংয়ে নেমে জাকির হাসান ও পারভেজের ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শক্ত ভিত পায় পূর্বাঞ্চল। জাকির থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি (৩৬ বলে ১৪)। একই অবস্থা অমিত হাসানেরও (৩৮ বলে ১৫)।
পারভেজ ফিফটি পূর্ণ করেন ১০৩ বলে। আলোকস্বল্পতায় আগেভাগে খেলা শেষ হওয়ার আগে ১৪০ বলে ১০ চারে ৬৬ রানে অপরাজিত আছেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান। ১২ রানে খেলছেন মুমিনুল হক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৩৪.৩ ওভারে ১০৮ (জয় ৪, সাব্বির ০, আবদুল্লাহ ২৬, আইচ ১১, প্রিতম ১৩, আকবর ০, আমিনুল ১১, নাহিদুল ১১, মুরাদ ৯*, আসাদুল্লাহ ১৪, নাহিদ ০; আবু জায়েদ ৭-০-২১-১, খালেদ ১৫.৩-৪-৪০-৪, রাজা ১২-৩-৪০-৪)
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৩৭ ওভারে ১২২/২ (জাকির ১৪, পারভেজ ৬৬*, অমিত ১৫, মুমিনুল ১২*, নাহিদ ৯-০-৩২-০, আসাদুল্লাহ ৮-০-৩০-১, নাহিদুল ৮-০-২৭-১, মামুন ৯-৩-১৯-০, মুরাদ ৩-০-১১-০)
বোলারদের দিনে মইনের ফিফটি
আরেক ম্যাচে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেও আধিপত্য দেখিয়েছেন বোলাররা। ১৩ উইকেট পতনের দিনে একমাত্র ফিফটি এসেছে মইন খানের ব্যাট থেকে।
দক্ষিণাঞ্চলকে ২১৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম দিন শেষে মধ্যাঞ্চলের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৫৩ রান। এখনও ১৬১ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
সাত নম্বরে নেমে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন মইন। তার ১১০ বলে ইনিংস গড়া ১০ চার ও ৩ ছক্কায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
৩১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মধ্যাঞ্চলের সফলতম বোলার পেসার শহিদুল ইসলাম। আবু হায়দার ও শুভাগত হোমের প্রাপ্তি ২টি করে উইকেট।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই রান আউটে কাটা পড়েন দক্ষিণাঞ্চলের পিনাক ঘোষ। আরেক ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ নাবিল ৪৭ বলে ১৯ রান করে বোল্ড হন আবু হায়দারের বলে।
অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন, মার্শাল আইয়ুব ও নুরুল হাসান সোহান টিকতেই পারেননি। একটা পর্যায়ে ১২৭ রানে ৭ উইকেট হারানো দলের স্কোর দুইশ ছাড়ায় মইনের ফিফটিতে।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মইন বোল্ড হন শহিদুলের বলে। তার সঙ্গে ৬৭ রানের অষ্টম উইকেট জুটিতে ৯৭ বলে ২৬ রান করেন পেসার সুমন খান।
ব্যাটিংয়ে নেমে মধ্যাঞ্চল দুই ওপেনারকে হারায় তিন ওভারের মধ্যেই; মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও আব্দুল মজিদ, দুজনকেই ফেরান সুমন।
তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক সাইফ হাসান। দিন শেষে নাঈম ইসলাম ২২ ও তাইবুর রহমান শূন্য রানে অপরাজিত আছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৬৮.৩ ওভারে ২১৪ (নাবিল ১৯, পিনাক ০, ফজলে মাহমুদ ৪৬, মিঠুন ৫, মার্শাল ১১, সোহান ১৪, মইন ৭৫, নাইম ৪, সুমন ২৬, হালিম ০, আসাদুজ্জামান ০*; আবু হায়দার ১১-২-৪১-২, শহিদুল ১৫.৩-৬-৩১-৩, শাকিল ১১-১-৬২-১, শুভাগত ১৫-১-৪৬-২, আরিফ ১৩-৪-১৭-১, সাইফ ৩-০-৫-০)
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস: ১৩ ওভারে ৫৩/৩ (নাঈম শেখ ৮, মজিদ ৮, সাইফ ১৪, নাঈম ইসলাম ২২*, তাইবুর ০*; সুমন ৫-০-২৯-২, নাঈম ৩-১-৮-১, হালিম ৪-০-৯-০, আসাদুজ্জামান ১-০-৭-০)