আম্পায়ারের বাজে একটি সিদ্ধান্তে লেগ বাই থেকে সম্ভাব্য চার রান পায়নি বাংলাদেশ, শেষ পর্যন্ত তারা ম্যাচ হেরে যায় চার রানেই।
Published : 11 Jun 2024, 01:37 AM
আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলতে গেলে বেশির ভাগ সময়ই একটু সতর্ক থাকেন ক্রিকেটাররা। কখনও কূটনীতির আশ্রয় নেন, কখনও আকারে-ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেন, কখনও বা এড়িয়ে যান। তবে তাওহিদ হৃদয় এবার রাখঢাক খুব একটা রাখলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পর আম্পায়ারদেরকে কাঠগড়ায় তুললেন বাংলাদেশের এই ব্যাটসম্যান।
নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরে যায় চার রানে। হৃদয়ের মতে, একটি বাউন্ডারি বাংলাদেশের প্রাপ্য ছিল। এই বাউন্ডারিটি পেলেই ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত বলে মনে করেন তিনি।
আলোচিত বলটি সপ্তদশ ওভারের। ওটনিল বার্টম্যানের বল মাহমুদউল্লাহর পায়ের লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। তবে প্রোটিয়াদের এলবিডব্লিউর আবেদনে বেশ দ্রুতই আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার। মাহমুদউল্লাহ রিভিউ নিতেও বেশি দেরি করেননি। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল চলে যেত লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে দিয়ে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত তাই পাল্টে যায়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর সেই সিদ্ধান্ত রিভিউয়ে বদলে গেলেও কোনো রান যোগ হয় না।
ওই চার রান পেলে বাংলাদেশের প্রয়োজন পড়ত ২২ বলে ২২ রান। কিন্তু চার না পাওয়ায় তা হয়ে যায় ২২ বলে ২৬।
শেষ পর্যন্ত চরম নাটকীয়তার ম্যাচে শেষ দিকে পথ হারিয়ে বাংলাদেশ হেরে যায় চার রানেই। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে সম্ভাব্য ওই চার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সরাসরিই আম্পায়ারের দিকে আঙুল তুললেন হৃদয়।
“সত্যি বলতে, সেটি ভালো সিদ্ধান্ত ছিল না। আঁটসাট ম্যাচে আমাদের জন্য ভালো কিছু ছিল না সেটি। আমার মতে… আম্পায়ার আউট দিয়েছেন, তবে আমাদের জন্য কঠিন ছিল। ওই চারটি রান পেলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত। আর কিছু বলার নেই…।”
‘কিছু বলার নেই’ বললেও পরে আরও অনেক কিছুই বললেন হৃদয়। সেখানে মিশে থাকল আরও ক্ষোভ। শুধু সম্ভাব্য ওই লেগ বাই নয়, তার নিজের আউট ও আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েও ক্ষুব্ধ তিনি ও তারা।
ক্রিকেটের এই নিয়মটা অন্যায্য কি না, এমসিসি ও আইসিসি ক্রিকেটের নিয়মটা পাল্টানোর কথা বিবেচনা করতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন করা হয় তাকে। তিনি নিয়মের গভীরে গেলেন না, কিন্তু আবারও তোপ দাগালেন আম্পায়ারের দিকে।
“নিয়ম তো… আইসিসি কী করেছে, এটা তো আমার হাতে নেই। কিন্তু ওই সময় ওই চারটি রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। আমি মনে করি যে, আম্পায়ার কল দিয়েছেন, আম্পায়ার কল দিতেই পারে। ওরাও মানুষ, ভুল হতেই পারে। কিন্তু আরও দু-একটি ওয়াইড ছিল, যেগুলো ওয়াইড দেয়নি। এখানে এরকম ভেন্যুতে খেলা, যেখানে রান হচ্ছে না, লো-স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে, সেই জায়গায় একটি-দুটি রানও অনেক বড় ব্যাপার।”
“তো আমি মনে করি, ওই চারটি রান বা দুটি ওয়াইড, খুব ক্লোজ কল ছিল। এমনকি আমার আউটও আম্পায়ার্স কল ছিল। আমার কাছে মনে হয়, এই জায়গাগুলোয় উন্নতির সুযোগ আছে। আইসিসি যে নিয়ম করেছে, এটায় তো আমাদের হাত নেই। আমার মনে হয়… যেটা হয়েছে, হয়ে গেছে।”
তবে এত কিছুর পরও ম্যাচ ছিল বাংলাদেশের একদম মুঠোয়। শেষ ১৮ বলে স্রেফ ২০ রান দরকার ছিল তাদের। উইকেট বাকি ছিল ৬টি। তখনও ক্রিজে টিকে ছিলেন থিতু হওয়া দুই ব্যাটসম্যান হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ৩৭ রান করে হৃদয় আউট হয়ে যান অষ্টাদশ ওভারের প্রথম বলে। চাপে পড়ে দিশা হারায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে সমীকরণ দাঁড়ায় ১১ রানে। সেখানেও পারেনি বাংলাদেশ। দুই বলে যখন প্রয়োজন ছয় রান, বাঁহাতি স্পিনার কেশাভ মহারাজের ফুল টস ডেলিভারি পেয়েও আউট হয়ে যান শেষ ভরসা মাহমুদউল্লাহ।