জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ব্যস্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতিতে আর দেশে বাংলাদেশ টাইগার্স ক্যাম্পে ঘাম ঝরাচ্ছেন লিটন কুমার দাস, মুমিনুল হক, আফিফ হোসেনরা।
Published : 16 Feb 2025, 05:29 PM
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। দেশেও বসে নেই আইসিসি টুর্নামেন্টের স্কোয়াডে সুযোগ না পাওয়া লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, শামীম হোসেনরা। নিজেদের প্রস্তুত রাখতে বাংলাদেশ টাইগার্স ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটাররা।
আন্তর্জাতিক মঞ্চের জন্য ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখার লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে চলছে বাংলাদেশ টাইগার্স ক্যাম্প। সেই ধারাবাহিকতায় শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববার শুরু হয়েছে এবারের প্রোগ্রাম। তবে এখও নির্দিষ্ট ছক সাজানো হয়নি ক্যাম্পের।
আপাতত আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকায়ই চলবে টাইগার্সের কার্যক্রম। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ হওয়ার পর আবার শুরু হতে পারে ক্যাম্প। গত কয়েক বছরের মতো তখন ঢাকার বাইরে যেতে পারেন ক্রিকেটাররা।
প্রথম দিনের অনুশীলনে লিটন, আফিফ, শামীম ছাড়াও ছিলেন মুমিনুল হক, নাঈম হাসান, হাসান মুরাদ, সাদমান ইসলাম, রিপন মণ্ডল, মুমিনুল হক, মাহিদুল ইসলামরা। এছাড়া শেখ মেহেদি হাসান, শরিফুল ইসলামদেরও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
জতীয় পর্যায়ের কোচ সোহেল ইসলামের তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া ক্যাম্পে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করেছেন মিজানুর রহমান, নাজমুল ইসলাম, তারেক আজিজরা।
বিসিবির ইনডোরের বাইরের মাঠে শুরুতে ফিটনেসের কিছু কাজ করেন ক্রিকেটাররা। পরে লম্বা সময় ধরে চলে তাদের স্কিল চর্চা। লম্বা অনুশীলন সেশন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রথম দিনের কার্যক্রমের ধারণা দেন সোহেল।
“আজকে ক্যাম্পের শুরুতে এখানে ক্রিকেটার যারা আছে, তাদের সঙ্গে বসা হয়েছিল। তারা ব্যক্তিগতভাবে কোন বিষয় নিয়ে কাজ করতে চায়, স্কিলে কোথায় উন্নতি করতে চায় এসব আলোচনা হয়েছে। এর সঙ্গে ফিটনেসের বিষয়গুলো তো আছেই।”
দুবাইয়ে আগামী বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অভিযান। এরপর ৩ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা প্রিমিয়ার লিগ। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দুই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসবে জিম্বাবুয়ে। পরে পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ।
সামনের দিনগুলোর ব্যস্ততা মাথায় রেখে টাইগার্স ক্যাম্পের মাধ্যমে লিটন, মুমিনুলদের তৈরি রাখার চেষ্টা করা হবে, বললেন সোহেল।
“সামনে প্রিমিয়ার লিগ। সেখানে অনেকে পারফর্ম করে। আমাদের চিন্তাভাবনা হলো, জাতীয় দলের আশপাশে যারা আছে তারা যেন সবসময় আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে। আর প্রিমিয়ার লিগের যে ম্যাচগুলো খেলবে, সেখানেও যেন এর (টাইগার্স ক্যাম্প) একটা ইতিবাচক প্রভাব থাকে।”
টাইগার্স ক্যাম্পের কোচিং প্যানেলের সবাই স্থানীয়। জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে দেশিদের প্রতিনিধিত্ব করছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। সিনিয়র সহকারী কোচের সঙ্গে নিয়মিতই কথা হয় সোহেলের।
জাতীয় দলের জন্য ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখতে কী ধরনের কাজ করা হবে সেই বিষয়ে সালাউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করে নেন সোহেল।
“জাতীয় দলের কোচিং স্টাফ ও আমরা টাইগার্স বা এইচপিতে যারা আছি, সবাই একই রেখায় থাকার চেষ্টা করি। জাতীয় দলে তারা একজন ক্রিকেটারের কাছ থেকে কী চায়, এখানে কী ধরনের কাজ করে দেব, কতটুকু উন্নতি করে দেব, এসব নিয়ে আলোচনা হয়।”
“(মোহাম্মদ) সালাউদ্দিন ভাইয়ের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আমাদের নিয়মিত এসব নিয়ে কথাবার্তা হয়। আমরা জানি কী করতে হবে। সবাই একই রেখায় থাকার চেষ্টা করছি যেন, টাইগার্স থেকে একটা ছেলে যখন জাতীয় দলে যাবে, সে যেন প্রস্তুত থাকতে পারে।”
বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পের বড় চমক লিটন। সাদা বলের ক্রিকেটে পড়তি ফর্মের কারণে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে নেই স্টাইলিশ এই ব্যাটসম্যান। রোববার ইনডোরের বাইরের নেটে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ব্যাটিং অনুশীলন করেন তিনি।
সোহেল জানালেন, লিটনের সমস্যাগুলো বের করেছেন তারা। সেগুলো নিয়েই কাজ করা হবে টাইগার্স ক্যাম্পে।
“লিটনের সঙ্গে এগুলো (সাদা বলের ঘাটতি) নিয়ে কথা হয়েছে। কিছু জিনিস নিয়ে কথা বলছি, কীভাবে আরও স্মুদ করা যায়। এখন সাময়িকভাবে ধুঁকছে। আগে তো স্মুদ ছিল। তাই কিছু জায়গায় আমার মনে হয় এডজাস্টমেন্ট দরকার আছে। এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। সেটা আমরা বের করেছি এবং সেভাবে কাজ করার চেষ্টা করছি।”