দুই দলের ১১ জন বোলারের কেউই ওভার প্রতি সাড়ে নয়ের কম রান দেননি! কোথায় বল ফেলবেন যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না তারা। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের খুনে ইনিংসে রান পাহাড় গড়ল পেশাওয়ার জালমি। জেসন রয়ের খুনে সেঞ্চুরি অনায়াসে সেই রান টপকে গিয়ে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়টর্স গড়ল ইতিহাস।
রাওয়ালপিন্ডিতে বুধবার পিএসএলের ম্যাচে বাবরের সেঞ্চুরি, সাইম আইয়ুবের ফিফটি ও রভম্যান পাওয়েলের ক্যামিও ইনিংসে নিজেদের সর্বোচ্চ ২৪০ রান করে পেশাওয়ার। এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসে ১০ বল বাকি থাকতেই কোয়েটাকে জয় এনে দেন রয়।
পিএসএলে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এরচেয়ে বড় তাড়ার নজির আছে কেবল তিনটি।
কোয়েটার রেকর্ড গড়ায় সবচেয়ে বড় অবদান রাখা রয় ৬৩ বলে খেলেন অপরাজিত ১৪৫ রানের ইনিংস। এর ১১০ রানই আসে বাউন্ডারি থেকে। ২০ চারের সঙ্গে মারেন পাঁচটি ছক্কা। তিনি ভাঙেন কলিন ইনগ্রামের রেকর্ড। ২০১৯ সালে কোয়েটার বিপক্ষে করাচি কিংসের হয়ে তার করা ১২৭ রান ছিল এই টুর্নামেন্টের আগের সর্বোচ্চ।
বিস্ফোরক ইনিংস খেলার পথে একটি রেকর্ড গড়েছেন রয়, একটুর জন্য স্পর্শ করতে পারেননি আরেকটি রেকর্ড। পিএসএলে সবচেয়ে কম ২৭ ইনিংসে হাজার রানের মাইলফলকে যান বিস্ফোরক ইংলিশ ওপেনার। ২৯ রেকর্ডে ১ হাজার করে রেকর্ড ছিল শান মাসুদের।
তিন অঙ্ক ছুঁতে রয়ের লাগে ৪৪ বল, পিএসএলে যা দ্বিতীয় দ্রুততম। গত বছর কোয়েটার বিপক্ষে মুলতানের হয়ে রাইলি রুশের ৪৩ বলে সেঞ্চুরি এখনও রেকর্ড। বাবরের সেঞ্চুরি করতে লাগে ৬০ বল। এই টুর্নামেন্টে যা যৌথভাবে মন্থরতম।
পাকিস্তানের এই টুর্নামেন্টে আগে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল মুলতান সুলতানসের। গত বছর লাহোর কালান্দার্সের বিপক্ষে তারা জিতেছিল ২০৭ রান তাড়ায়। বড় রান তাড়ার অভ্যাস ভালো মতোই আছে কোয়েটার। এ নিয়ে পঞ্চামবার দুইশ বা এর বেশি রান তাড়ায় জিতল তারা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ১৬২ রানের জুটিতে পেশাওয়ারকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার। এতে অগ্রণী ছিলেন আইয়ুব। ৩৪ বলে পাঁচ ছক্কা ও ছয় চারে তিনি খেলেন ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস।
পিএসএলে এটি কেবল দ্বিতীয় দেড়শ ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটি। প্রথমটিতেও থাকা বাবর এবার তিন ছক্কা ও ১৫ চারে খেলেন ১১৫ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টি এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। তার চেয়ে বেশি তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন কেবল ক্রিস গেইল (২২)। অ্যারন ফিঞ্চ, মাইকেল ক্লিঙ্গার ও ডেভিড ওয়ার্নারেরও আছে আটটি করে।
পাওয়েল দুই ছক্কা ও তিন চারে ১৮ বলে করেন অপরাজিত ৩৫ রান।
রান তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা করে কোয়েটা। ৮ বলে ২১ রান করে ফেরেন মার্টিন গাপটিল। এদিন ক্রিজে যাওয়া আট ব্যাটসম্যানের মধ্যে কেবল একজনের স্ট্রাইক রেট ১৭৫ এর নীচে। তিনি উইল স্মিড। রয়ের সঙ্গে ১০৯ রানের জুটিতে তার অবদান ২২ বলে ২৬।
শেষ ৮ ওভারে ৯১ রান প্রয়োজন ছিল কোয়েটার। রয় ও মোহাম্মদ হাফিজ সেই রান করে ফেলেন ১০ বল বাকি থাকতেই! ১৮ বলে হাফিজ অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। তার টর্নেডো ইনিংসে দুই চারেরর পাশে ছক্কা চারটি।
কোয়েটার ২ উইকেটে ২৪৩ রান পিএসএলের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ। দুই দল মিলিয়ে করে ৪৮৩ রান। এশিয়ায় কোনো টি-টোয়েন্টিতে যা সর্বোচ্চ।