চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে ঝড় তুললেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ব্যাটসম্যানরা।
Published : 13 Feb 2024, 02:51 PM
নিহাদউজ্জামানের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন উইল জ্যাকস। ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে যাওয়া বল গ্লাভসে জমাতে পারলেন না টম ব্রুস। তখনও রানের খাতা খোলেননি জ্যাকস। এরপর আর পেছনে তাকাননি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ওপেনার। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়ে করলেন সেঞ্চুরি, দলকে পৌঁছে দিলেন রেকর্ড স্কোরে।
শূন্য রানে বেঁচে যাওয়া জ্যাকস খেলেছেন কুমিল্লার ইনিংসের পুরোটা। শহিদুল ইসলামের বলে লং অফ দিয়ে মারা ছক্কায় পূর্ণ করেছেন নিজের সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৫৩ বলে করেছেন ১০৮ রান। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৫ চার ও ১০ ছক্কায়।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে জ্যাকসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে কুমিল্লা করেছে ৩ উইকেটে ২৩৯ রান। বিপিএল ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। ২০১৯ সালে একই মাঠে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে সমান ২৩৯ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এ নিয়ে আটবার ২২০ ছাড়াল দলীয় স্কোর। সবকটিই চট্টগ্রামের মাঠে।
জ্যাকসের সেঞ্চুরি ছাড়াও চট্টগ্রামের বোলারদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছেন লিটন কুমার দাস ও মইন আলি। ৩১ বলে ৬০ রান করে আউট হয়েছেন লিটন। আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা মইনের ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস।
সবচেয়ে বেশি ঝড় বয়ে যায় আল আমিন হোসেনের ওপর। ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের দ্বিতীয় ওভারে ২৭ রান দেন অভিজ্ঞ পেসার। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে তার খরচ ৬৯ রান। বিপিএল ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে খরুচে বোলিং। ২০১৯ সালে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৬০ রান দিয়েছিলেন নাসির হোসেন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম চার ওভার দেখেশুনে খেলেন দুই ওপেনার লিটন ও জ্যাকস। তৃতীয় ওভারে জীবন পান জ্যাকস। এরপর আল আমিনের সেই ওভার। প্রথম দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে লিটনকে স্ট্রাইক দেন জ্যাকস। শেষ তিন বলে দুই ছক্কার পর চার মারেন লিটন।
সপ্তম ওভারে স্রেফ ২৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন লিটন। পরের ওভারে তাকে থামান শহিদুল। ৯ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা মারেন লিটন। তার ইনিংসের ৫৪ রানই আসে বাউন্ডারি থাকে। শতাংশের হিসাবে যা ৯০ ভাগ। বিপিএলে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে ৯০ বা তার বেশি শতাংশ রান বাউন্ডারি থেকে করা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান লিটন আর আর সব মিলিয়ে পঞ্চম।
তাওহিদ হৃদয় ও ডেভিড গেস্ট বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। চতুর্থ উইকেটে ইনিংস ফিনিশিংয়ের দায়িত্ব নেন জ্যাকস ও মইন। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৫৩ বলে ১২৮ রান যোগ করেন দুজন।
৩১ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া জ্যাকস সেঞ্চুরিতে পৌঁছতে খেলেন আর ১৯ বল। টি-টোয়েন্টিতে তার তৃতীয় সেঞ্চুরি এটি। ইনিংসের শেষ দিকে দুইবার জীবন পাওয়া মইন স্রেফ ২৩ বলে পূরণ করেন ফিফটি।
মিরপুরে প্রথম দুই ম্যাচে রানের দেখা পাননি জ্যাকস। চট্টগ্রামে গিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ব্রডকাস্টারে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন ইংলিশ ওপেনার।
"আমি অনেক খুশি। প্রথম দুই ম্যাচে রান করতে পারিনি। দলের হয়ে অবদান রাখতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমরা খুব ভালো স্কোর করেছি। তবে উইকেটও খুব ভালো। আউটফিল্ড গতিময়, বাউন্ডারি ছোট। যে কোনো রান তাড়া হতে পারে। ভালো বোলিং করতে হবে।"