অভিষেকে রেকর্ড ছোঁয়া ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান বললেন লারার অবদানের কথা

কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার সঙ্গে কিছুদিন কাজ করার পর ওয়ানডে অভিষেকে ঝড়ো ফিফটিতে রেকর্ড স্পর্শ করেছেন আলিক আথানেজ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2023, 08:27 AM
Updated : 10 June 2023, 08:27 AM

ক্রিকেটের পথে বেড়ে ওঠার দিনগুলিতে ব্রায়ান লারাকে আদর্শ মেনেছেন আলিক আথানেজ। কিছুদিন আগে নিজের নায়কের সঙ্গেই মিলেছে ব্যাটিং নিয়ে কথা বলা ও কাজ করার সুযোগ। আথানেজও তাতে সমৃদ্ধ হয়েছেন। ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড স্পর্শ করার পর ক্যারিবিয়ান এই ব্যাটসম্যান বললেন, লারার পরামর্শ কাজে দিয়েছে তার প্রথম আন্তর্জাতিক ইনিংসে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষটিতে শুক্রবার এই রেকর্ডে নাম লেখান আথানেজ। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ও ঘরোয়া ক্রিকেটে মিডল অর্ডারে খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকে ওপেন করতে নেমেই ঝড় তোলেন ব্যাট হাতে। ফিফটিতে পা রাখেন ২৬ বলে। তাতে ছুঁয়ে ফেলেন ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম পঞ্চাশের রেকর্ড। ২০২১ সাল থেকে রেকর্ডটি এককভাবে ছিল ভারতের ক্রুনাল পান্ডিয়ার।

আথানেজের সুযোগ ছিল রেকর্ডটি শুধু নিজের করে নেওয়ার। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ২১ বলে ৪৬। তবে ফিফটির আগে তিন বলে রান নিতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত বাউন্ডারিতে পঞ্চাশ ছুঁয়ে স্পর্শ করেন রেকর্ড।

পরে তিনি আউট হয়ে যান ৪৫ বলে ৬৫ করে। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ হোঁচট খেলেও শেষ পর্যন্ত জিতে যায় ৪ উইকেটে। সিরিজটি জিতে নেয় তারা ৩-০তে।

প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম রানের দেখা পান তিনি। পরের ওভারেই ছক্কা মারেন দুটি। তৃতীয় ওভারে চার মারেন তিনটি। তার ব্যাটিংয়ে অভিষেকের জড়তা বা চাপের লেশমাত্র দেখা যায়নি। তবে ম্যাচ শেষে ২৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান বললেন, ভেতরে ঠিকই চাপ ছিল কিছুটা।

“সত্যি বলতে, শুরুতে কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। তবে প্রথম রানের দেখা পাওয়ার পর স্নায়ুর চাপ উড়ে যায়।”

“সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল। সাধারণত পাওয়ার প্লেতে আমি এভাবেই খেলি। দলকে ভালো শুরু এনে দেওয়ার চেষ্টা করি।”

শুরুর ইনিংসে সফল হওয়ার পর তিনি বললেন লারার কথাও। লারার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার যখন শেষ হয়, আথানেজের বয়স তখন স্রেফ ৮ বছর। তবে ক্যারিবিয়ায় ক্রিকেটের পথে এগিয়ে গেলে তো লারাকে জানতেই হয়। আথানেজও বেড়ে উঠেছেন এই কিংবদন্তিকে আদর্শ মেনেই।

সম্প্রতি নিজের নায়কের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয় আথানেজের। ম্যাচের পর বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান শোনালেন সেই অভিজ্ঞতা কতটা ফল দিয়েছে তার জন্য।

“তার সঙ্গে সময়টা দারুণ ছিল। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন বলের লেংথ ভালোভাবে বুঝতে পারা নিয়ে এবং চিন্তাভাবনায় বোলারের চেয়ে এগিয়ে থাকা নিয়ে। এটা এখানে খুব ভালোভাবে কাজে দিয়েছে। ব্যাটিংয়ে নেমে শট খেলার সময় নিজেকে খুব ভালো পজিশনে নিতে পেরেছি।”

২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান স্কোরার ছিলেন আথানেজ। পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব ধারাবাহিক হতে না পারলেও প্রতিভার জোরেই সুযোগ পান ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলে। গত বছর বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিপক্ষে আনঅফিসিয়াল টেস্ট সিরিজে ভালো করেন তিনি। এরপর কদিন আগে বাংলাদেশ সফরে এসেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের হয়ে তিনটি আনঅফিসিয়াল টেস্ট ম্যাচে ভালো করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আন্তর্জাতিক অভিষেক হলো।

এই ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার কেভিন সিনক্লেয়ার। যুব দলে তিনি আথানেজের সঙ্গী ছিলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরেও দুজন ছিলেন ‘এ দলে। অভিষেকেই আথানেজকে আলো ছড়াতে দেখে উচ্ছ্বসিত সিনক্লেয়ার।

“অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সময় থেকেই আলিককে চিনি আমি। সবসময়ই সে ভালো ব্যাটসম্যান। আজকে আরও বড় পর্যায়ে তার নিজেকে মেলে ধরতে দেখে ভালো লাগছে। সবসময়ই জানতাম, সে ভালো ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের ফর্ম সে এখানে বয়ে এনেছে।”