পৌষের শেষ দিকে প্রচণ্ড শীতে জবুথবু সন্ধ্যা। মৌসুমের এই সময়টায় ঝড়ের শঙ্কা তেমন একটা নেই। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার তবু বয়ে গেল প্রবল এক ঝড়। ২২ গজে ব্যাট হাতে সেই ধ্বংসলীলা চালালেন সাকিব হাল হাসান।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের বোলারদের তুলাধুন করে স্রেফ ২৬ বলে ফিফটি করেন সাকিব। শেষ ওভারে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে স্রেফ ৩২ বলে করেন ৬৭ রান। ৭ চার ও ৪ ছয়ে সাজানো তার ইনিংসের সৌজন্যে ২০ ওভারে ১৯৪ রানের পুঁজি পায় ফরচুন বরিশাল।
নবম ওভারে ওপেনার চতুরাঙ্গা ডি সিলভা ফেরার পর ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব। ওই ওভারে ঝুঁকি নেননি তিনি। পরের ওভারে মুখোমুখি প্রথম বলে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে পুল করে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের বার্তা দেন বরিশালের তারকা অলরাউন্ডার।
কলিন অ্যাকারম্যানের এক বল পর স্লগ সুইপে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারেন তিনি। এই দুই ছক্কাই ছিল সাকিবের পুরো ইনিংসের বিজ্ঞাপন। কখনও জায়গায় দাঁড়িয়ে, কখনও অফ সাইডে সরে গিয়ে মিড উইকেট, স্কয়ার লেগকে লক্ষ্য করে একের পর বাউন্ডারি মারতে থাকেন তিনি।
সাকিবের ইনিংসটি অবশ্য থামতে পারত ফিফটির আগেই। মোহাম্মদ আমিরের করা ১৪তম ওভারে লেগ স্টাম্পের ওপর করা শেষ বলটি তুলে মারেন তিনি। সহজ ক্যাচ ওঠে ডিপ ফাইন লেগে দাঁড়ানো ইমাদ ওয়াসিমের হাতে। কিন্তু ধরে রাখতে পারেননি পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার। ৩২ রানে বেঁচে যান সাকিব।
জীবন পেয়ে আরও রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন তিনি। পরের ১৩ বল থেকে করেন ৩৫ রান। রেজাউর রহমান রাজার করা ১৬তম ওভারে মিড অনের ওপর দিয়ে বাউন্ডারি মারার এক বল পর মিড উইকেট দিয়ে ছক্কায় ভাসান তিনি।
এই দুই বলের মাঝে সাকিবের মাথার অনেক ওপর দিয়ে বাউন্সার করেন রাজা। কিন্তু ওয়াইড ডাকেননি আম্পায়ার। সাকিবতে তখন দেখা যায় কিছুটা তেড়েফুঁড়ে আম্পায়ারের কাছে গেলেও কোনো লাভ হয়নি। বরং এই ঘটনা যেন তাতিয়ে দেয় তাকে। যার তেজটা গিয়ে পড়ে থিসারা পেরেরার ওপর।
থিসারার করা ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৭তম ফিফটি পূরণ করেন সাকিব। পরের বলটি জায়গায় দাঁড়িয়ে এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে দৃষ্টিনন্দন শটে ছক্কা মারেন তিনি। পরের দুই বলে চার মারেন আরও দুটি।
তবে পরের সময়টায় সেভাবে স্ট্রাইক পাননি তিনি। ১৮ ও ১৯তম ওভারে স্রেফ দুই বল খেলার সুযোগ পান। এর মধ্যেই আমিরের বলে আবারও জীবন পান তিনি। এবার পয়েন্ট সীমানায় ক্যাচ ছেড়ে দেন আকবর আলি। তবে এবার জীবন পাওয়ার পর আর বেশি দূর যেতে পারেননি সাকিব। শেষ ওভারের প্রথম বলে মাশরাফির ফুল লেংথ বল তিনি তুলে দেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে।