বোল্যান্ডের ছোবলে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার মুখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

২-০ তে সিরিজ জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Dec 2022, 02:57 PM
Updated : 10 Dec 2022, 02:57 PM

প্রায় ১১ মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে স্কট বোল্যান্ড প্রথম ইনিংসে বোলিং ভালো করলেও উইকেট পাননি। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি নিজের প্রথম ৬ বলে ৩ উইকেট নিলেন কোনো রান না দিয়েই! অস্ট্রেলিয়ান পেসারের তোপে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার চোখ রাঙানি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে।

অ্যাডিলেইডে দিবা-রাত্রির টেস্ট জিততে ও ২-০ তে সিরিজ নিজেদের করে নিতে অস্ট্রেলিয়ার চাই আর ৬ উইকেট। ম্যাচের বাকি এখনও দুই দিন। ৪৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩৮ রান।

সব মিলিয়ে শনিবার উইকেট পড়েছে ১৬টি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ক্যারিবিয়ানরা ১৫০ রান তুলতে হারিয়েছে ১০ উইকেট।

উইকেট যে ব্যাটিংয়ের জন্য খুব কঠিন, তা নয়। ব্যাটসম্যানদের বাজে শট আর দুটি রান আউটে ক্যারিবিয়ানদের প্রথম ইনিংস থমকে যায় ২১৪ রানে।

২৯৭ রানের বড় লিড পেয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলো-অন করায়নি অস্ট্রেলিয়া। ৩১ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৯ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারীদের প্রায় পাঁচশ রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা।

৪ উইকেটে ১০২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিনের প্রথম ওভারেই আগের দিনের ৪৭ রানে অপরাজিত তেজরানাইন চন্দরপল কাটা পড়েন রান আউটে। নিজের বলে ফলো থ্রুতে বল ধরে সরাসরি থ্রোয়ে স্টাম্প এলোমেলো করে দেন মিচেল স্টার্ক।

গতিময় এই পেসারের পরের ওভারে আলগা শটে কট বিহাইন্ড হয়ে যান জেসন হোল্ডার। জশুয়া দা সিলভাকে এলবিডব্লিউ করে দেন অফ স্পিনার ন্যাথান লায়ন। উইকেটটা পায় তারা রিভিউ নিয়ে।

দারুণ কিছু শট খেলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন অ্যান্ডারসন ফিলিপ। তিনি ৪৩ রান করে রান আউট হন সতীর্থের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে।

৯ নম্বরে নেমে রোস্টন চেইজের ৩৪ রানের সুবাদে কোনোমতে দুইশ ছাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ।

৫৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার লায়ন। স্টার্ক ও মাইকেল নিসারের প্রাপ্তি ২টি করে।

প্রথম ইনিংসে বড় লিড সঙ্গী হওয়ায়, দ্বিতীয় ইনিংসে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তা বাড়াতে থাকেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা।

ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাওয়াজা গড়েন ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর চেইজের একই ওভারে থামেন দুজনই। খাওয়াজা ৫০ বলে ৪৫ ও ওয়ার্নার ৩৬ বলে করেন ২৮ রান।

টানা তিন ইনিংসে সেঞ্চুরির পর এবার ২৩ বলে ৩১ রানে থামেন টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান মার্নাস লাবুশেন। এই ম্যাচের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ প্রথম ইনিংসে শূন্যের পর এবার করেন ৩৬ বলে ৩৫। আর হেডের ২৭ বলে অপরাজিত ৩৮ রানের সুবাদে প্রতিপক্ষকে বড় লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া।

এরপর বোলান্ডের ওই দুর্দান্ত স্পেল। গত অ্যাশেজ সিরিজে তিন ম্যাচে ৯.৫৫ গড়ে ১৮ উইকেট নিয়ে চমক দেখানো ডানহাতি পেসার এই ম্যাচে সুযোগ পান মূলত নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের চোটের কারণে। প্রথম ইনিংসে ২৯ রানে উইকেটশূন্য থাকায় তার গড় চলে গিয়েছিল ১০ এর ওপরে।

দ্বিতীয় ইনিংসে ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে পেয়ে প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান তিনি। তৃতীয় বলে এলবিডব্লিউ করে দেন শামার ব্রুকসকে। ওভারের শেষ বলে গালিতে ক্যামেরুন গ্রিনের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড।

টিকতে পারেননি চন্দরপলও। স্টার্কের বলে তিনি ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে। শুরুতে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় অস্ট্রেলিয়া উইকেটটা পায় রিভিউ নিয়ে।

নবম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ২১!

দিনের বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ হতে দেননি হোল্ডার ও ডেভন টমাস। দুজনই অপরাজিত আছেন ৮ রানে। চতুর্থ দিনে তাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৩৭ ওভারে ৫১১/৭ ডিক্লে.

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৬৯.৩ ওভারে ২১৪ (আগের দিন ১০২/৪) (চন্দরপল ৪৭, ফিলিপ ৪৩, হোল্ডার ০, জশুয়া ২৩, চেইজ ৩৪, জোসেফ ০, মিন্ডলি ১১*; স্টার্ক ১৫.৩-৪-৪৮-২, বোল্যান্ড ১৬-৩-২৯-০, নিসার ১২-৩-৩৪-২, লায়ন ২০-৪-৫৭-৩, গ্রিন ৬-০-৪৪-১)

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৩১ ওভারে ১৯৯/৬ ডিক্লে. (খাওয়াজা ৪৫, ওয়ার্নার ২৮, লাবুশেন ৩১, স্মিথ ৩৫, হেড ৩৮*, গ্রিন ৫, কেয়ারি ৮*; জোসেফ ৭-০-৩৩-৩, হোল্ডার ৮-০-৪৬-০, ফিলিপ ৬-০-৪৪-১, টমাস ২-০-১৩-০, ব্র্যাথওয়েট ৪-০-৩২-০, চেইজ ৪-০-২৫-২)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৯৭) ২২ ওভারে ৩৮/৪ (ব্র্যাথওয়েট ৩, চন্দরপল ১৭, ব্রুকস ০, ব্ল্যাকউড ০, টমাস ৮*, হোল্ডার ৮*; স্টার্ক ৫-২-১১-১, নিসার ৬-২-৯-০, বোল্যান্ড ৬-৩-৯-৩, লায়ন ৫-৩-৭-০)