পরে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে দাবি আদায়ে লাগাতার ক্লাস বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন তারা।
Published : 09 Aug 2023, 06:05 PM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত আশিকুল ইসলাম বিটুর ক্লাসে ফেরার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ক্লাস বর্জনের এ কর্মসূচি চলবে বলে জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিটুর ক্লাসে ফেরাকে মেনে নিতে পারছেন না। এ বিষয়ে আগের দিনই তারা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
আগের দিন মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের শপথ পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা। তখন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত বিটুর ক্লাসে ফেরার প্রতিবাদও জানান তারা।
বুধবার ক্লাস বর্জনের পর অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে ‘নো ক্যাম্পাস শেয়ারিং উইথ অ্যা মার্ডারার’, ‘বিটুর আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত চাই’, ‘আবরার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ লেখা সংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
এ কর্মসূচি চলাকালে কয়েকজন শিক্ষার্থী উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উপাচার্যের সঙ্গে কী কথা হয়েছে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের কেউ সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমেক জানাবেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এঘটনায় আশিকুল ইসলাম বিটুসহ ২৬ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। তালিকার ১৭ নম্বরে ছিলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬ ব্যাচের আশিকুল ইসলাম বিটু। তবে আবরার হত্যা মামলায় অভিযোগপত্রে নাম নেই বিটুর।
পরে বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে বিটুর রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ১০ ফেব্রুয়ারি বুয়েট কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেন। ওই স্থগিতাদেশ নিয়ে বিটু আবেদন করলে বুয়েট কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল তাকে ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেয়। পরে ২২ মে তিনি অনলাইন ক্লাসে অংশ নেন।
এরপর গত রোববার তিনি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের সঙ্গে আরেকটি ক্লাসে যোগ দিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবারও এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। গত সোমবার বিকেলে তার ক্লাসে ফেরার প্রতিবাদে বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ক্যাফেটেরিয়ার সামনে 'নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারকে সমূলে উৎপাটিত' করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করেছেন বুয়েটের কয়েকশ শিক্ষার্থী।
আবরার হত্যা: ২৬ বুয়েটছাত্রকে চিরতরে বহিষ্কার