দুইজনই হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
Published : 07 Mar 2024, 06:11 PM
ডিম ভাজা তাড়াতাড়ি শেষ করতে বলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এক ছাত্রী মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের এক পর্যায়ে ওই ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন।
মারধরে অভিযুক্ত তাসনিম সানজানা সৃষ্টি সঙ্গীত বিভাগের ১২তম ব্যাচ এবং মারধরের শিকার ইতি খাতুন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে হলের ১১ তলায় মারামারির ওই ঘটলেও বৃহস্পতিবার দুই ছাত্রী প্রাধ্যক্ষের কাছে পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই তলার আবাসিক এক ছাত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ঘটনাটি তুচ্ছ ছিল।
“ওই চুলায় আমাদের সবাইকে রান্না করতে হয়। আপুর (সৃষ্টি) ডিম ভাজতে দেরি হচ্ছিল, এদিকে তার (ইতি) ক্লাসের সময় হয়ে গিয়েছিল। একটু দ্রুত রান্না করতে বলায় আপু ক্ষেপে গিয়ে তাকে থাপ্পর দেয়। পরে ওরে চুল ধরে টেনে, কিল ঘুষি দিয়েছেন। এরপর আমি ভয়ে রুমে চলে আসি।”
এ বিষয়ে মারধরের শিকার ইতি খাতুন বলেন, “আমি রান্না করার পরপরই সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে আমি উনাকে সুযোগ দিই। আমার ক্লাসের সময় হওয়ার কারণে আপুকে একটু দ্রুত রান্না শেষ করতে বললে তিনি আমাকে জুনিয়র বলে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। এমনকি তিনি আমার মরা বাপকেও গালি দিতে কুন্ঠাবোধ করেননি। আমি এর প্রতিবাদ করলে তিনি আমাকে চড় থাপ্পড়, কিলঘুষি মারেন। তারপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।”
অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, “ইতি আমার তিন বছরের জুনিয়র, সে রান্না শেষ করতে বলেই আমার সামনে তেড়ে আসে। শুধু সে একা মার খায়নি, আমিও খেয়েছি। আমি হল বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।
এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ দীপিকা রানী সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনাটি আমি শুনেছি। খুব ছোট একটি বিষয়কে এত বড় করার প্রয়োজন ছিল না। এ বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শুধু বলব ঘটনাটি আপাতত সমাধান হয়েছে। তবুও হলের শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এটা নিয়ে আলোচনা করব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ইতি আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি এখন হল কর্তৃপক্ষ দেখছে। তারা যদি আমার সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা বিষয়টি দেখব।”
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে সানজানা সৃষ্টির বক্তব্য নেয়ার জন্য এক সাংবাদকর্মী ফোন করলে তিনি তার বন্ধু মার্কেটিং বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফাহিম ইশতিয়াককে জানান। পরে ফাহিম ওই সাংবাদিককে ফোন করে সংবাদ প্রকাশ করলে মামলার হুমকিসহ গালিগালাজ করেন।
ঘটনা জানার পর ওই সাংবাদিকের সহকর্মীরা ফাহিমকে নিয়ে প্রক্টর অফিসে নিয়ে গেলে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।