নতুন ক্যাম্পাস কেমন, দেখাল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি

“প্রকৃতি এবং আধুনিক স্থাপত্যের মিশেলে এই নতুন ক্যাম্পাসটি গড়ে তোলা হয়েছে,” বলেন তামারা হাসান আবেদ।

রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় যে নতুন ক্যাম্পাস চালু করেছে বেসরকারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি তা সংবাদকর্মীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।

‘সবুজের আবাহনে আগামীর আহ্বানে’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার নতুন ক্যাম্পাসেই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষ, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, মেরুল বাড্ডায় ৭ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত নতুন ক্যাম্পাসটি পরিবেশবান্ধব। সুন্দরবন থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া এই ক্যাম্পাস প্রকৃতি এবং স্থাপত্যের মিশেলে নির্মিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ বলেন, "স্যার ফজলে হাসান আবেদ এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যেখানে প্রকৃতির সাথে মিশে শিক্ষা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে। প্রকৃতি এবং আধুনিক স্থাপত্যের মিশেলে এই নতুন ক্যাম্পাসটি গড়ে তোলা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জীবন সম্পর্কে অন্যভাবে ভাবতে শেখাবে।

“উন্নয়নের কারণে নগরায়ন হবেই, কিন্তু প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের উদ্ভাবনী এবং সৃজনশীল হতেই হবে। নগর পরিকল্পনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এই ক্যাম্পাস শিক্ষার্থী, পরিকল্পনাবিদ এবং সংশ্লিষ্টদের জন্য একটি আদর্শ মানদণ্ড হয়ে থাকবে।”

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাসকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরি হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ বলেন, “আমরা মূলত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই নতুন ক্যাম্পাসটিকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের একটা ল্যাবরেটরি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

“আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে যে, আমরা মানসম্মত গবেষণা আর উচ্চমানের শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশের একটি ফ্ল্যাগশিপ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলবো। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়টি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির এই ভবনের ডিজাইন, নির্মাণ ও পরিবেশ সচেতনতার বিষয়টিতে সিঙ্গাপুর, চীন এবং জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা কাজ করেছেন।

এই ভবনে ক্রস ভেন্টিলেশন এবং হাইব্রিড থার্মাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ভবনটির সবদিক থেকেই আলো ও বাতাস প্রবেশ করতে পারে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, ভবনের গায়ে সবুজ চাদরের মত লেগে থাকা গাছগুলোর কারণে এয়ার কন্ডিশনিংয়ের নির্ভরতা কমে আসবে এবং ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে।

ভবনের ছাদে রয়েছে ১.৫ মেগাওয়াট পরিমাণে বিদ্যুৎ শক্তিসম্পন্ন সোলার প্যানেল, যা এই ভবনের প্রয়োজনীয় শক্তির ২৫ শতাংশ। অত্যাধুনিক এবং নান্দনিক এই ভবনের বেশিরভাগ জায়গা শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা যেন সহজে ক্যাম্পাসে আসতে পারে এবং সব জায়গায় বিচরণ করতে পারে সেজন্য রয়েছে ইউনিভার্সাল এক্সেসিবিলিটি।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অফিস অফ কমিউনিকেশন্স এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সদস্য এবং ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারপারসন সালাহদীন ইমাম।

অনুষ্ঠান শেষে আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখান ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার আরিফুল ইসলাম, ডিরেক্টর অফ অপারেশন্স মোহাম্মদ সাজেদুল করিম এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রজেক্ট আর্কিটেক্ট শফিকুল ইসলাম।