অগ্রগতির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, “আমরা গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছি।”
Published : 05 Jun 2024, 05:50 PM
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে এক হাজারের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েটসহ নাম এসেছে বাংলাদেশের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডসের (কিউএস) র্যাংকিংয়ে দেখা যাচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ৫৫৪ নম্বরে, যা গত একদশকের মধ্যে ভালো।
৭৬১ থেকে ৭৭০ নম্বরের মধ্যে আছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থসাউথ ইউনির্ভাসিটির অবস্থান তালিকার ৯০১-৯৫০ এর মধ্যে।
কিউএস মঙ্গলবার রাতে তাদের ওয়েবসাইটে ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০২৫: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিস’ শীর্ষক ১ হাজার ৫০৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করে।
টানা ১৩ বছর এই তালিকার শীর্ষে থাকা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এবারো গ্লোবাল র্যাংকিংয়ে তাদের শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে।
আর অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজকে প্রথমবারের মত পেছনে ফেলে দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইমপেরিয়েল কলেজ লন্ডন।
গ্লোবাল র্যাংকিংয়ে তৃতীয় স্থানটি ধরে রেখেছে অক্সফোর্ড; এছাড়া হার্ভার্ড আগের বছরের মতই চতুর্থ অবস্থানে এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠাঁই হয়েছে পঞ্চমে।
সেরা এক হাজারের মধ্যে ভারতের ৩৪টি এবং পাকিস্তানের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে।
কিউএসের তালিকায় গত এক দশকের তুলনায় এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়েছে। ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৬০১ এর মধ্যে। ২০১৪ সালে তা পিছিয়ে ৭০১তম অবস্থানে চলে যায়।
২০২১ সালের পর থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৮০১ থেকে ১০০০-এর মধ্যে।
অগ্রগতির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা গবেষণায় একটা বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। গত দুই বছরের তুলনায় ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর জার্নালে আমাদের প্রকাশনা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। আমি উপাচার্য হওয়ার পর গবেষণা নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করেছি, সেই নীতিমালার সুফল আমরা পাওয়া শুরু করেছি।
“শিক্ষকদের গবেষণা বেড়েছে, যা র্যাংকিংয়ে অবদান রাখছে। এর বাইরেও আমরা এখন প্রত্যেকটা বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্নাতকোত্তর পর্যায়ে থিসিস করা বাধ্যতামূলক করেছি। তার সুফলও আমরা এখন পাওয়া শুরু করেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, “আগে আমাদের ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি ছিল। এখন ওয়েবসাইট আপডেট করা হয়েছে। এখনও আমাদের ঘাটতি আছে। এগুলো আমরা পূরণ করার চেষ্টা করছি।
“বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমাদের আন্তর্জাতিক কোলাবরেশন অনেক বেড়েছে। সেটা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। আমরা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট আরও তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সমৃদ্ধ করতে পারি, পাশাপাশি গবেষণা আরও বাড়াতে পারি, তাহলে আগামী বছর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও উন্নতি হবে বলে আশা করছি।”
আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিউএস র্যাংকিং ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে ‘সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের’ তালিকা প্রকাশ করেছে; ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস৷
ছয়টি সূচকে মোট ১০০ নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মূল্যায়ন করে কিউএস। এর মধ্যে একাডেমিক খ্যাতি ৪০, চাকরির বাজারে সুনাম ১০, শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ২০, শিক্ষকদের গবেষণা ২০ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ৫ নম্বর করে ধরা হয়।
কিউএস র্যাংকিং: অক্সফোর্ড, কেমব্রিজকে টপকে গেল ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন