ঘেরাওয়ের কারণ নিয়ে মুখ খোলেননি বাহলুল হক চৌধুরী।
Published : 09 Feb 2023, 08:51 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহলুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে তিনি 'মোনাজাতে' হাত তুললেন, বিচার দিলেন সৃষ্টিকর্তার কাছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নিজ সন্তানদের নিয়ে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন তিনি।
প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান শেষে সেখানে মোনাজাত ধরে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।
কী কারণে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও, এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি বাহলুল হক চৌধুরী। পরে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কন্ট্রোলার স্যার আজকে হঠাৎ আমাদের সবাইকে জরুরিভাবে ডেকে উপাচার্য স্যারের বাসভবনে নিয়ে গেলেন। সেখানে কোনো কিছু না বলে আকাশের দিকে হাত তুলে মোনাজাত ধরলেন। আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।
“মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে কন্ট্রোলার স্যার মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন। গত পরশু সাংবাদিকতা বিভাগে গিয়েও চিল্লাচিল্লি করেছেন। আজকে উপ-উপাচার্যের (শিক্ষার) অফিসে গিয়েও বেহুঁশ হয়ে পড়ে যান।”
সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহলুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজগুলো থেকে প্রতিটি প্রবেশপত্র বাবদ ১০০ টাকা করে নগদ নেন। তিনি এসব টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে সিন্দুকে রেখে নিজের ইচ্ছামতো খরচ করেন। এছাড়া তিনি পরীক্ষার পুরাতন খাতা ও কাগজপত্র বিক্রির ক্ষেত্রে পছন্দের ঠিকাদারের কাছে কম টাকায় বিক্রি করেন এবং পরে সেই ঠিকাদারের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষ বাহালুল হক চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়।
জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কিছু কিছু নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল, কিন্তু সেটা আমাদের বর্তমান সময়ের সঙ্গে যায় না। সেই সিস্টেমটা আমরা এখন উন্নয়ন করে ফেলেছি।
“ক্যাশ নেওয়ার একটা বিষয় ছিল, ওটা বন্ধ করা হয়েছে। কাগজ বিক্রি সংক্রান্ত একটা বিষয় দীর্ঘদিন ধরে চলছিল, সেগুলো এখন একটা নিয়ম-নীতির মধ্যে চলে এসেছে।”
কী কারণে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোনাজাত ধরলেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য বলেন, “উনি কী কারণে লোকজন নিয়ে এসেছিলেন, আমি বিষয়টা জানি না। শুনেছি, উনি এসে কী দোয়া করে গেছেন।”