প্রশ্ন ফাঁসের বিতর্ক আর বাম সংগঠনগুলোর বিক্ষোভের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী।
Published : 22 Oct 2017, 05:45 PM
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায অধ্যাপক আখতারুজ্জামান রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে কেন্দ্রীয় ভর্তি কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।
বেলা দেড়টায় এই ফল প্রকাশের কথা থাকলেও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর বিক্ষোভের কারণে তা এক ঘণ্টা বিলম্বিত হয়।
‘ঘ’ ইউনিটের এক হাজার ৬১০টি আসনের বিপরীতে মোট ৭১ হাজার ৫৪৯ জন ভর্তিচ্ছু গত শুক্রবার এক ঘণ্টার এমসিকিউ পরীক্ষায় অংশ নেন। ফলাফলে তাদের মধ্যে ১০ হাজার ২৬৪ জনকে ভর্তির যোগ্য ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ, মানবিক বিভাগে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভর্তিচ্ছু উত্তীর্ণ হয়েছে।
তবে আসন সংখ্যার বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১ হাজার ১৪৭ জন, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৪১০ জন এবং মানবিক বিভাগ থেকে ৫৩ জন বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।
এ ইউনিটের ভর্তির জন্য ৯৮ হাজার ৫৬ জন আবেদন করলেও শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেন ৭১ হাজার ৫৪৯ জন।
ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা এবং ফলিত রসায়নের প্রথম বর্ষের ছাত্র অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে আটক করে পুলিশ। পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ আটক করা হয় ১৩ ভর্তিচ্ছুকে।
যে প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তার একটি অংশ পরীক্ষা শুরুর প্রায় আট ঘণ্টা আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যমে খবর আসে। তবে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান সেদিন প্রশ্ন ফাঁসের খবর ‘ভিত্তিহীন ও বানোয়াট’ বলে উড়িয়ে দেন।
রোববার ফল প্রকাশ করার সময় তিনি বলেন, “প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা পরে কয়েকজন সাংবাদিক এসে ফাঁস হওয়ার কথা বলেছে। একটি অশুভ চক্র এর পেছনে রয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করতে চায়। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বর, বোর্ডের নাম, পাসের সাল এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বরের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে ভর্তিচ্ছুরা ফল জানতে পারবেন।
এছাড়া যে কোনো মোবাইল ফোন থেকে DU<>GHA<>Roll টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফলাফল জানা যাবে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ১৩ থেকে ২৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘চয়েস ফরম’ পূরণ করতে পারবে। আর কোটায় আবেদনকারীদের ২৩ থেকে ৩০ অক্টোবর মধ্যে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ডিন অফিস থেকে ফরম নিয়ে তা পূরণ করে জমা দিতে হবে।
আর কেউ ভর্তি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করতে চাইলে ২৬ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বরের মধ্যে ডিন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীর ভর্তি কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক হাসিবুর রশিদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।