“আগামী সপ্তাহে ফিলিস্তিনে যদি গণহত্যা বন্ধ না হয়, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের যে আবাসিক অফিস রয়েছে সেটা ঘেরাও করতে যাব,” বলেন অধ্যাপক রইছ।
Published : 10 Apr 2025, 04:06 PM
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দূতাবাস অভিমুখে যে কর্মসূচি দিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সেই ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি থেমেছে তাঁতীবাজার মোড়েই।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর থেকে বের হওয়া মিছিলটি আদালত প্রাঙ্গণের সড়ক হয়ে তাঁতীবাজার মোড়ে গিয়েই ফিরে আসে ক্যাম্পাসে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকতা-কর্মচারীদের অংশ নেওয়া মিছিলটি রফিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রূপ নেয়।
এ সময় ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করো, করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের হাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা বিবেচনায় পুলিশের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাসে না গিয়ে তাঁতীবাজার মোড় থেকেই মিছিলটিকে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়।
তবে শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ বিলাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দূতাবাস দুটির কাছে স্মারকলিপি পৌঁছাবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক নূর নবী বলেন, “মুসলিম বিশ্ব আজ নীরবতা পালন করছেন। মুসলিম বিশ্বের অনেক নেতা যেন মোসাদের এজেন্টের মতো কাজ করছেন। আমরা বাংলাদেশ থেকে সেসব এজেন্টদের বয়কট করলাম।
“পশ্চিমা নেতারা মুখে মানবতার কথা বলেন, অথচ তারাই ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি করে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছে। এই গণহত্যার দায় তাদেরই নিতে হবে।”
এসময় শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আরব জাতির প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, তোমরা তো সেই বংশধর- যারা বদরের ময়দানে হাজার হাজার ইহুদিদের বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেছিল, কোথায় গেল তোমাদের সে হারানো ঐতিহ্য? আবার জেগে ওঠো, আবার অস্ত্র ধরো। জিহাদের দামামা বাজাও পৃথিবীব্যাপি।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “ইসরায়েল স্বাধীনতার নামে যুগের পর যুগ ফিলিস্তিনের অসংখ্য নিরীহ মানুষকে হত্যা করে আসছে। জাতিসংঘ তৈরি করা হয়েছিল পৃথিবীর মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, ওআইসি গঠন করা হয়েছিল মুসলিম বিশ্বকে একাত্মতা করে আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো ব্যবসায়িক সুবিধার জন্য পশ্চিম আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চুপ ছিল।”
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদ্দীন বলেন, “এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমরা মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি দেব। একইসঙ্গে সৌদি আরবের নিস্ক্রিয় ভূমিকার কারণে তাদের দূতাবাস এবং বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
“আজকে স্মারকলিপি দিয়েছি- আগামী সপ্তাহে ফিলিস্তিনে যদি গণহত্যা বন্ধ না হয়, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের যে আবাসিক অফিস রয়েছে সেটা ঘেরাও করতে যাব।”
ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “আপনারা ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করার উদ্যোগ গ্রহণ করুন, নয়তো আমরা বাধ্য হব। আমরা যেন ইসরায়েলি পণ্যগুলোর অল্টারনেটিভ খুঁজে পেতে পারি, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। বিশ্বের মুসলিম নেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ওয়েকআপ।”