বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় দুই শিক্ষককে বরখাস্ত ও কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
Published : 03 Apr 2024, 09:57 PM
ছাত্রীকে যৌন হয়রানি অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন; তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত কেন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিসও দেওয়া হয়েছে।
একই অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না- তার জবাব চেয়ে তাকে আবারো নোটিস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় দুই শিক্ষককে বরখাস্ত ও কারণ দর্শাও নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক নূরে আলম আব্দুল্লাহ জানান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিজ বিভাগের এক ছাত্রীর সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্কের’ অভিযোগ ওঠে গণিতের শিক্ষক মাণিক মুনসীর বিরুদ্ধে। সেসময় তাকে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই ছাত্রীকেও তখন একটি সেমিস্টারে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সিন্ডিকেট সদস্য নূরে আলম আব্দুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাণিক মুনসীর বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে ‘বিয়ের প্রলোভন দিয়ে’ যৌন হয়রানির অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল। প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সিন্ডিকেটে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। একইসঙ্গে তাকে স্থায়ীভাবে কেন বরখাস্ত করা হবে না- সে বিষয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে শিক্ষক মাণিক মুনসীর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোনে করলে তিনি ধরেননি।
গত মাসে এক শিক্ষক ও সহপাঠীকে দায়ী করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওই আলোচনার মধ্যেই ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন তার বিভাগেরই এক ছাত্রী।
ওই ঘটনায় গত ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় ইমনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেইসঙ্গে ওই শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় বিভাগের প্রধান জুনায়েদ আহমদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, কোর্স শিক্ষক ইমন ২০২১ সালে অ্যাকাডেমিক কাজে তাকে নিজের কক্ষে ডেকে ‘যৌন হয়রানি’ করেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করায় বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমদ হালিম তাকে ‘ফেল করিয়ে দেন’।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন আবু শাহেদ ইমন ও জুনায়েদ হালিম।
সবশেষ সিন্ডিকেট সভায় ইমনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার তাকে কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না- সেই বিষয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে আবু শাহেদ ইমন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখনো ওই নোটিস হাতে পাননি।
আরো পড়ুন-
যৌন নিপীড়ন: জগন্নাথ শিক্ষক শাহেদ ইমন বরখাস্ত
‘আর কোনো অবন্তিকা যেন এভাবে ঝরে না পড়ে’
অবন্তিকার আত্মহত্যা: দ্বীন ইসলামের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে তথ্য চায় তদন্ত কমিটি
অবন্তিকার আত্মহত্যা: আম্মান ও দ্বীনের ‘খণ্ডিত সংশ্লিষ্টতা’ পেয়েছে পুলিশ