২০২৫ সালের মধ্যে মুনাফার লক্ষ্য নগদের

এ কোম্পানি এখন কয়েকশ কোটি টাকা লোকসানের মধ্যে থাকলেও ২০২৪ সালে লোকসানের অংক ৫ কোটি টাকার মধ্যে চলে আসবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2023, 03:35 PM
Updated : 28 May 2023, 03:35 PM

আগামী দুই বছরের মধ্যে মুনাফায় যাওয়ার আশা করছে মোবাইলে আর্থিক সেবার কোম্পানি নগদ।

এ কোম্পানি আশা করছে, ২০২৫ সালে প্রথমবারের মত তাদের ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হবে, আর দুই বছরের মধ্যে মুনাফার অঙ্ক একশ কোটি টাকা ছাড়াবে। ২০২৮ সালে মুনাফা পৌনে দুইশ কোটি টাকা পেরুবে বলে প্রাক্কলন করেছে তারা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) একটি প্রসপেক্টাস জমা দিয়েছে নগদ লিমিটেড। সেখানে বলা হয়েছে, আপাতত কোম্পানি কয়েকশ কোটি টাকা লোকসানের মধ্যে থাকলেও ২০২৪ সালে লোকসান ৫ কোটি টাকার মধ্যে চলে আসবে।

এই প্রসপেক্টাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে লাভের পরিমাণ হবে ২৮ কোটি টাকা। ২০২৬ সালে তা বেড়ে হবে ৬৪ কোটি। ২০২৭ সালে ১১৪ কোটি এবং ২০২৮ সালে ১৭১ কোটি টাকা মুনাফার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে সেখানে।

নগদ আশা করছে, এই সময়ে তাদের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। আয় বৃদ্ধি এবং পরিচালন ও বিপণন ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমেই মূলত সম্ভাব্য লাভের এ হিসেব প্রস্তুত করা হয়েছে।

নগদ সম্প্রতি বিএসইসি-এর ৫১০ কোটি টাকার জিরো কুপন বন্ড ইস্যু করার অনুমতি পেয়েছে। এর ফলে পাওয়া বিনিয়োগও নগদকে অনেকখানি এগিয়ে দেবে বলে আশা করছে মোবাইলে আর্থিক সেবার এ কোম্পানি।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিমকে উদ্ধৃত করে নগদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বন্ড অনুমোদনের ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের লিকুইডিটি থাকতে হবে এবং প্রফিট্যাবিলিটি ফোরকাস্ট হতে হবে। নগদের লিকুইডিটি তো আছেই। আর ওরা প্রফিট্যাবিলিটি ফোরকাস্ট দেখিয়েছে।”

গ্রাহকদের বোনাস দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে কোম্পানির খরচ বেশি হয় বলেও জানান তিনি।

প্রোসপেক্টাসে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল থেকে নগদের মোট রাজস্ব আয় ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকায় গিয়ে পৌঁছাবে। পরের চার বছরে আয় হবে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৪ কোটি, ১ হাজার ৫৩২ কোটি, ১ হাজার ৭৭৩ কোটি এবং ২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা।

এই মুনাফার সম্ভাবনা নিয়ে নগদের হেড অব পাবলিক কমিউনিকেশন্স মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “নগদ প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্ভাবন ও সেবার ক্ষেত্র তৈরি করে ব্যবসার পরিসর বাড়াচ্ছে। সম্প্রতি আমরা রেমিটেন্স সেবা চালু করেছি। এ ছাড়া আরও কিছু সেবা আসছে। ফলে আমরা খুব দ্রুতই লাভে পৌঁছাব, এটা নিশ্চিত।”

জাহিদুল জানান, “মাত্র চার বছরের যাত্রায় নগদ-এর দৈনিক লেনদেন এখন এক হাজার ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। এই স্বল্প সময়ে সাড়ে সাত কোটি গ্রাহক পেয়েছে নগদ। এত অল্প সময়ে এত বেশি গ্রাহক পাওয়া বা এত বেশি লেনদেনে এর আগে কেউ যেতে পারেনি। আর এসবই নগদকে লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে রাখবে।”

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এর পরিচালক এবং ড্রিম-সেভেন্টিওয়ান-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশাদ কবিরকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোর শুরুতে লোকসান করে পরে বড় লাভে পৌঁছানোটাই স্বাভাবিক।

“ওয়ালমার্টের মত প্রতিষ্ঠান প্রথম ৯ বছর লোকসান করেছে। নগদও খুব স্বাভাবিকভাবেই শুরুতে লোকসান করেছে। এখন তাদের ব্যবসার পদ্ধতিতেই তারা লাভে পৌঁছবে।”

অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ডিজিটাল কেওয়াইসি এবং *১৬৭# চেপে একাউন্ট খোলা, এই দুটি উদ্ভাবনের কারণে নগদ খুব দ্রুত বড় সংখ্যায় গ্রাহক তৈরি করতে পেরেছে। এই উদ্ভাবনের ফলে প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে কিছু আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও পুরষ্কার পেয়েছে।