‘টাকা পে কার্ড’ নামে বাংলাদেশের নিজস্ব এ ডেবিট কার্ড আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই চালু হবে, যেখানে ডুয়েল কারেন্সি সুবিধায় ভারতীয় রুপি ও টাকা ব্যবহার করা যাবে।
Published : 11 Jul 2023, 06:40 PM
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রুপিতে লেনদেন চালু হওয়ার পর পাঁচ মাসের মধ্যে টাকা ও রুপিতে লেনদেনযোগ্য ডেবিট কার্ড চালুর ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
বাংলাদেশের নিজস্ব এ ডেবিট কার্ডে নাম হবে ‘টাকা পে কার্ড’। এ কার্ড ব্যবহার করে ডুয়েল কারেন্সি সুবিধায় ভারতীয় রুপি ও টাকায় লেনদেন করতে পারবেন একজন গ্রাহক।
এ ডেবিট কার্ড চালুর কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে গভর্নর বলেছেন, আগামী সেপ্টেম্বরেই কার্ডটি চালু করা যাবে বলে তারা আশা করছেন। তবে রুপিতে লেনদেন করতে হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে, সেজন্য আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে।
“আমাদের প্রস্তুতি চলছে। ভারতের পাশ থেকে যথা সময়ে এটি হলে আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড চালু করতে পারব।”
মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে রুপিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়, সেই অনুষ্ঠানেই এ ঘোষণা দেন গভর্নর।
রুপিতে বাণিজ্য নিষ্পত্তি শুরুর বিষয়টিকে তিনি একটি ‘বড় সূচনার প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবে বর্ণনা করেন। রউফ তালুকদার বলেন, “রুপিতে বাণিজ্য নিস্পত্তির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে একটি বার্তা যাবে সবার কাছে।“
রুপির মাধ্যমে লেনদেনের সবচেয়ে বড়ে সুবিধা হচ্ছে ভারতের নাগরিকরা ডুয়েল কারেন্সির আওতায় তাদের মুদ্রা রুপিতেই পণ্য কিনতে পারবেন।
“তাতে তারা মনে করবেন, ‘রুপিতে নিজস্ব পণ্যই কিনছি’। এর ফলে দুই দেশের বাণিজ্য আরো বাড়বে,” বলেন গভর্নর।
গত মে মাসে ব্যাংকারদের এক অনুষ্ঠানে নিজস্ব এই ডেবিট কার্ড চালুর বিষয়ে প্রথমবারের মত জানান রউফ তালুকদার।
ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার বাড়ছে জানিয়ে সেদিন তিনি বলেছিলেন, “বাংলাদেশ নিজস্ব ডেবিট কার্ড চালু করতে যাচ্ছে। আমরা খুব কাছে চলে এসেছি।”
বর্তমানে ভিসা, মাস্টার কার্ড এর মত আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের ব্যাংকগুলোকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লেনদেন করতে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সেবা দিচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রতিবছর তারা লভ্যাংশ হিসেবে দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের নিজস্ব ডেবিট কার্ড চালু হলে কার্ডভিত্তিক লেনদেনে বিদেশি কোম্পানির ওপর নির্ভরতা কমে যাবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা দৈনিক ১ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন এটিএম বুথ ও পস মেশিনের মাধ্যমে। মোট লেনেদন হয়েছে ওই মাসে ৪২ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। গত মার্চ পর্যন্ত দেশে তিন কোটি ৯ লাখ ৯৭ হাজারের বেশি কার্ড ইস্যু করেছে বিভিন্ন ব্যাংক।